শাহবাগ মোড় থেকে শিক্ষার্থীদের সরাল পুলিশ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৮ নভেম্বর ২০২০, ১৫:২৭ আপডেট : ০৮ নভেম্বর ২০২০, ১৫:৩১
সেশনজট নিরসনসহ চার দাবিতে ঢাকার শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভরত মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে পুলিশ।
তাদের অবরোধের কারণে রোববার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে শাহবাগ মোড় হয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে প্রফ পরীক্ষা না নেওয়া, সেশনজট নিরসন করে যথাসময়ে কোর্স সম্পন্ন করার ব্যবস্থা, বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ৬০ মাসের বেশি বেতন না নেওয়া ও মহামারির সময় পরীক্ষা দিতে গিয়ে আক্রান্ত হলে দায়ভার কর্তৃপক্ষকে নেওয়ায় দাবি জানিয়ে আসছেন মেডিকেল শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের দাবির মধ্যে রয়েছে- অনতিবিলম্বে সেশনজট দূর করতে অনলাইন ক্লাস শুরুর নির্দেশনা দেওয়া। পরীক্ষা ও ক্লাস বিষয়ক সব আদেশের ক্ষেত্রে মেডিকেলের শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা বিবেচনা করা।
দাবি নিয়ে গত বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. শাহরিয়ার নবীর সঙ্গে দেখা করেন আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীরা। সেদিন পাওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী দাবি পূরণের নোটিসের আশায় বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা রোববার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জড়ো হন। সেখান থেকে তারা ডিনের কার্যালয়ে যান।
কিন্তু নোটিস না পেয়ে বেলা ১১টার দিকে শ তিনেক মেডিকেল শিক্ষার্থী মিছিল করে শাহবাগের দিকে রওনা হন। শাহবাগ থানার সামনে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে মিছিল থামানোর চেষ্টা করে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা বাধা উপেক্ষা করে শাহবাগ মোড়ে চলে আসেন এবং সেখানে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে শুরু করেন।
আন্দোলনকারী আরমান বলেন, তাদের দাবিগুলো যে ‘যৌক্তিক’, তা কর্তৃপক্ষও মানছে; কিন্তু সমাধান করছে না। আমরা গত কিছুদিন ধরে নানা কর্মসূচি পালন করে আসছি। কিন্তু কোনো সমাধান হচ্ছে না। আগের কর্মসূচি অনুযায়ী আমরা আজ ডিন স্যারের (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা অনুষদের ডিন) কাছে গিয়েছিলাম। আজ আমাদের দাবি পূরণের একটা লিখিত নোটিস দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু উনি বলছেন, আজ না, কাল জানাবেন। এ কারণে আমরা রাস্তায় নেমেছি।
আরো পড়ুন: শাহবাগ অবরোধ
আরেকজন শিক্ষার্থী নকিব বলেন, দাবিগুলো মেনে নিয়ে লিখিত আকারে নোটিস না দেওয়া পর্যন্ত আমরা রাস্তা ছাড়ব না।
পুলিশের কর্মকর্তারা শিক্ষার্থীদের রাস্তা ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ জানালেও তারা তাদের অবস্থানে অনড় থাকেন জানিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা জোনের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মো. হারুনুর রশীদ বেলা সাড়ে ১২টার দিকে সাংবাদিকদের বলেন, আমরা ডিনের সাথে কথা বলেছি, ঢাকা মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপালের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বলেছেন পরীক্ষা না নেওয়ার সুযোগ নেই। আমরা তাদের বোঝানোর চেষ্টা করছি, ধৈর্য্যের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবেলা করছি। নগরবাসীর চলাচল স্বাভাবিক করার জন্য যা পদক্ষেপ নেওয়া দরকার আমরা নেব।
এরপর বেলা সোয়া ১টার দিকে পুলিশ আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দিতে অগ্রসর হলে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। পরে পুলিশ লাঠিপেটা শুরু করলে শিক্ষার্থীরা শাহবাগ মোড় থেকে সরে গিয়ে জাতীয় গণগ্রন্থাগারের সামনে অবস্থান নেন। শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. শাহরিয়ার নবী বলেন, শিক্ষার্থীরা যদি ডিসেম্বরে পরীক্ষা দিতে না চায়, তাহলে জানুয়ারির শেষে বা ফেব্রুআরিতে দিতে পারবে। এটা নিয়ে আলোচনা চলছে এবং পজিটিভলি এগোচ্ছি আমরা। কিন্তু পরীক্ষা না নিয়ে পরবর্তী ধাপের ক্লাস নেওয়া সম্ভব না। বিএমডিসির কারিকুলামে এ ধরনের কোনো সুযোগ নাই।
শাহরিয়ার নবী বলেন, এখন শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে বিএমডিসি চাইলে নীতিগত সিদ্ধান্ত দিতে পারে। এটা নিয়ে বিএমডিসির সাথে আলোচনা চলছে। কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারিনি আমরা। মেডিকেল সেক্টরের সাথে যারা জড়িত, সবার একই বক্তব্য যে, আজকে করোনা আছে, কালকে তা থাকবে না। কিন্তু বিএমডিসি তার নীতিমালা থেকে বিচ্যুত হওয়ার কোনো সুযোগ নাই।
বাংলাদেশ জার্নাল/এইচকে
অন্যরা যা পড়ছে:
> শিক্ষক ছেলে কারাগারে, শুনে বাবার মৃত্যু!
> সংসদের বিশেষ অধিবেশন বসছে সন্ধ্যায়
> ২২ ঘণ্টায়ও সচল হয়নি ট্রেন চলাচল
> স্বামীকে আটকে রেখে গৃহবধূকে ধর্ষণ
> বাইডেন ও কমলা হ্যারিসকে প্রধানমন্ত্রীর অভিনন্দন
> মৃত চিকিৎসকের নামে দেওয়া হচ্ছিল প্যাথলজি রিপোর্ট