ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

উপকূলীয় মাঠজুড়ে পাকা আমনের ঘ্রাণ

  উত্তম হাওলাদার, কলাপাড়া প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২১ নভেম্বর ২০২০, ১৭:৪১

উপকূলীয় মাঠজুড়ে পাকা আমনের ঘ্রাণ

পটুয়াখালীর কলাপাড়াসহ উপকূলীয় বিস্তির্ন মাঠজুড়ে এখন পাকা ধানের ঘ্রাণ বইছে। এরইসাথে হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে। কেউ কেউ ধান কাটছে, কেউ আঁটি বাঁধছে। কেউবা মাথায় করে ধানের আঁটি নিয়ে যাচ্ছেন বাড়ির উঠানে। আবার কেউবা ধান কাটার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। যেন দম ফেলার ফুরসত নেই। মহাব্যস্ততায় কাটছে কৃষকদের দিন। এমন চিত্র উপকূলের বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে।

শুধু তাই নয়, ধান কাটার সাথে প্রতিটি কৃষক পরিবারের বাড়িতে চলছে নবান্নের উৎসব। তবে ফরিয়া বা মধ্যস্বত্বভোগীদের আনাগোনা আর তৎপরতায় ফসলের কাঙ্খিত মূল্য পাওয়া নিয়ে কৃষকদের মধ্যে রয়েছে শঙ্কা।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলার দুটি পৌরসভা ও ১২টি ইউনিয়ন। আয়তন ৪৯১.৮৯ বর্গ কিলোমিটার। ৩৫৫০০ কৃষক পরিবার রয়েছে এই উপজেলায়। ৩৮২১০ হেক্টর আবদযোগ্য জমির মধ্যে প্রায় ৩৪৪৯০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ হয়েছে। তবে এ বছর ৩৪৪৯০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা ছিল।

বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, হালকা বাতাসে পাকা ধানের শীষ দোলা খাচ্ছে। আমন ধানের গন্ধে ভরে উঠেছে গ্রামীণ জনপদ। স্বপ্নের সোনালী ধান কাটতে কাস্তে হাতে ব্যস্ত কৃষকরা। প্রত্যান্ত গ্রামের প্রতিটি কৃষক পরিবারের বাড়িতে বাড়িতে চলছে নতুন ধান ঘরে তোলার উৎসব। ওইসব কৃষকদের চোখে মুখে লেগে আছে সোনালী স্বপ্ন পূরনের ছাপ। তবে আবহাওয়া অনুকূল থাকালে নির্বিঘ্নে ধান কাটা-মাড়াইয়ের কাজ করবে কৃষকরা।

এদিকে কৃষকের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্যমূল্য, প্রত্যেক ইউনিয়নে ক্রয়কেন্দ্র স্থাপন, কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি ধান-চাল ক্রয়, স্লুইসগেট ব্যবস্থাপনায় কৃষকের স্বার্থ সংরক্ষণ করা এবং ভূমিদস্যুদের দৌরাত্ম বন্ধের দাবিতে কৃষকরা পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় সমাাবেশ ও মানববন্ধন করেছে। পরে তারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কাছে স্মারকলিপি প্রদান করে।

অনেক জমির মালিক জানান, করোনার কারণে ধান কাটার জন্য দৈনিক ৫শ' থেকে ৬শ' টাকা মজুরি দিয়েও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে বেকায়দায় পড়তে হচ্ছে তাদের।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, এ বছর বন্যার করণে ধানের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া শীষ কাটা ও চোষা পোকায় আক্রমণে ক্ষেতের ধান অনেকটা চিটা হয়েছে। বৃষ্টি হওয়ার পর থেকেইে এ রোগের দেখা দিয়েছে। তবে এ বছর ৮০ কাঠা (২৮০ শতাংশ) জমিতে ৭০ মণ ধান হয়েছে। এখন বাজারে ধানের দাম ভালো থাকেলেই পুষিয়ে যাবে।

উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের কৃষক সঞ্জিব মাতুব্বর বলেন, ক্ষেতের ধান পাকা শুরু করেছে। এ বছর ক্ষেতে খুব একট ভালো ফসল হয়েনি। তারপরও গ্রামের প্রতিটি বাড়ি বাড়ি চালছে ধান তোলা ও নব্বানের উৎসব।

কৃষক নিত্যানন্দ সরকার বলেন, বন্যার করণে ধানের বেশ ক্ষতি হয়েছে। এরপর সার-ঔষধ প্রয়োগ ও ক্ষেতের নিয়মিত পরিচর্যা করে এ পর্যন্ত নিয়ে আসা হয়েছে। শ্রমিক পাওয়া গেলে দুই-চার দিনের মধ্যেই ক্ষেতের ধান কাটবেন বলে জানান তিনি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান বলেন, ঘূর্ণিঝড় যেভাবে আঘাত হেনেছিলো, তাতে অনেকটা ক্ষতির আশঙ্কা ছিল। ধান ক্ষেতের দৈহিক অবস্থানগত কারণে সেভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয়নি। আমরা মাঠপর্যায়ে গিয়ে কৃষকদের নিবিড় তত্বাবধানে রেখেছি। তবে প্রায় পাঁচ হাজার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের তালিকা করে মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হয়েছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত