ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৩ মিনিট আগে
শিরোনাম

অবাধে চলছে অতিথি পাখি শিকার

  ফরিদপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২২ জানুয়ারি ২০২১, ১৬:০৫

অবাধে চলছে অতিথি পাখি শিকার
ফাইল ফটো

শীতের আমেজ চলছে ফরিদপুরের সবখানে। ঘন কুয়াশায় ঢেকে যাচ্ছে নদী-নালা ও হাওরের জনপদ। শীতের সঙ্গে কাঁধ মিলিয়ে আসতে শুরু করেছে অতিথি পাখি।

বিকেলে পাখির ঝাঁকের নয়নাভিরাম দৃশ্য বাড়িয়ে দিচ্ছে সৌন্দর্য। প্রাণভরে উপভোগ করছেন অবকাশকালীন মানুষেরা। স্বচ্ছ পানির ঢেউয়ে নীলাভ আকাশ ভেসে উঠলে পাওয়া যায় সাগরের দৃশ্য, পাখির ওড়াউড়ি আর কলতানে অন্যরকম আবেশ ছড়িয়ে দেয়। গোধূলিলগ্নে নীড়ে ফেরা পাখিদের গুঞ্জন আরো বেশি আকর্ষণীয়।

তাইতো শীতের মৌসুমে অতিথি পাখির আনাগোনাও শুরু। ফরিদপুরের নদী-নালা ও খাল-বিলগুলো এখন অতিথি পাখির কলকাকলীতে মুখর। চোরা শিকারীরাও তৎপর। চলছে এ পাখি শিকারের মহোৎসব।

নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বিষটোপ কিংবা ফাঁদ পেতে অবাধে শিকার করা হচ্ছে অতিথি পাখি। এতে পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাবসহ অতিথি পাখির আগমন দিন দিন কমে যাচ্ছে। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে এক শ্রেণীর অসাধু পাখি শিকারির ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।

জানা গেছে, শীত মৌসুম শুরুর সঙ্গে সঙ্গে প্রতি বছর হাজার হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে সুদূর সাইবেরিয়া থেকে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে বিভিন্ন প্রজাতির অতিথি পাখি আসে। কিন্তু সরকারি নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করে ফরিদপুরের বিভিন্ন এলাকায় নির্বিচারে অতিথি পাখি নিধন চলছে। অসাধু পাখি শিকারিরা রাতের বেলায় কৌশলে খাল, বিল, হাওর ও জলাশয়ে ফাঁদ, জাল, খাঁচা এবং চেতনানাশক ওষুধ ব্যবহার করে অতিথি পাখি শিকার করছে।

একাধিক সূত্র জানায়, অল্প পানিতে খাবার সংগ্রহের জন্য এ বছরও ফরিদপুরে বিভিন্ন বিলে-ঝিলে দেশি ও অতিথি পাখি এসেছে। সেইসঙ্গে প্রচুর মাছও দেখা যাচ্ছে। ফলে ঝাঁকে ঝাঁকে চখাচখি, চেগা, পানকৌড়ি, বক, হরিয়াল, হারগিলা, বালিহাঁস, লালস্বর, কাঁদোখোচা, ডাহুক, শামুখখোল, হটটিটিসহ বিভিন্ন প্রজাতির অতিথি পাখি বসতে শুরু করেছে। আর এ সুযোগে এক শ্রেণীর সৌখিন ও পেশাদার পাখি শিকারি বন্দুক, বিষটোপ, কারেন্ট জাল ও ফাঁদ পেতে প্রতিনিয়ত পাখি শিকার করছে। প্রকাশ্যে এসব পাখি বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়।

নাম না প্রকাশ করার শর্তে কয়েকজন পেশাদার পাখি শিকারি বলেন, বাজারে পাখির প্রচুর চাহিদা রয়েছে। তাই কোনোমতে ধরতে পারলেই বিক্রি করতে সমস্যা হয় না। প্রতি জোড়া পাখি প্রজাতিভেদে ১৫০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা হয়। ফলে বেশি লাভের আশায় অনেকেই মাছ ধরা বাদ দিয়ে পাখি শিকার করছেন।

পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিথি পাখি আমাদের উপকারী প্রাণী। বিশেষ করে পরিবেশ রক্ষার ক্ষেত্রে পাখির বড় ভূমিকা রয়েছে।

হাবিবুর রহমান নামের এক বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কর্মকর্তা বলেন, অতিথি পাখি শিকার কিংবা হত্যা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। আইন অমান্য করে পাখি শিকার করলে বণ্যপ্রাণি সংরক্ষণ আইনের ৩৮ ধারায় (১/২) ১ বছরের কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। একই অপরাধ দ্বিতীয়বার করলে দণ্ডের মেয়াদ দ্বিগুণ হবে। অতিথি পাখি শিকার বন্ধে সামাজিক প্রতিরোধ এবং সচেতনতার বাড়াতে হবে বলে মনে করেন সচেতন মহল।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত