বাজেট আলোচনায় সংসদে অর্থমন্ত্রী না থাকায় ক্ষোভ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৬ জুন ২০২১, ২১:১৫
জাতীয় সংসদের অধিবেশনে বাজেট আলোচনার সময় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সংসদে উপস্থিত না থাকায় ক্ষোভ জানিয়েছেন সংসদ সদস্যরা।
বুধবার প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় বিরোধী দলের সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান বলেন, ‘আমরা বাজেট বক্তৃতা দিচ্ছি। কিন্তু আমাদের অর্থমন্ত্রীকে গতকালকেও আমরা সংসদে পাই নাই। আজকেও নাই।’
জাতীয় পার্টির এই এমপি বলেন, ‘দেশের প্রথম বাজেট ছিল ৭৮৬ কোটি টাকার। অর্থমন্ত্রী বাজেট দেওয়ার দিন বলেছেন, ৭১৯ কোটি টাকার। যদি এটা ভুল হয়ে থাকে, তাহলে সংশোধন করা উচিত।’
তিনি বলেন, ‘অর্থমন্ত্রী বলেছেন দেশ থেকে কারা টাকা পাচার করছে, সে তালিকা চান সংসদ সদস্যদের কাছে। সংসদ সদস্যরা কীভাবে তালিকা দেবে। তিনি অর্থ মন্ত্রণালের দায়িত্বে। তিনি তালিকা দেবেন কারা অর্থপাচার করে। পিকে হালদার টাকা নিয়ে বিদেশে গিয়ে ঘুমায়, আর তার বান্ধবীদেরকে এখানে জেলে ঘুম পড়ান। এটাতো আমরা চাই নাই। আমরা চেয়েছিলাম পিকে হালদারদের মতো লোকরা যেন অর্থ নিয়ে বাইরে যেতে না পারে।’
পীর মেসবাহ বলেন, ‘প্রত্যেকটা অডিট রিপোর্টে আছে— কীভাবে আর্থিক প্রতিষ্ঠানে অনিয়ম দুর্নীতি হয়েছে। সেখান থেকে তিনি কারা টাকা পাচার করে তথ্য নিতে পারেন।’
তিনি বলেন, ‘সিএজির গত চার বছরের অডিট প্রতিবেদন বলছে, ৩১ হাজার কোটি টাকা লুট। চার বছরে রাষ্ট্রয়ত্ত ব্যাংকে জালিয়াতি, সরকারি অর্থের মোট অনিয়মের ৫২ শতাংশই ব্যাংকিং খাতে। ৯ বছরে অনিয়ম বেড়েছে ১৬ গুণ। এটি অডিটর জেনারেলের চার বছরের অডিট রিপোর্ট থেকেই এসেছে। এখান থেকে উনি পান না কেন? এই টাকা বিদেশে যায়।’
অর্থমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে জাতীয় পার্টির এমপি বলেন, ‘সাফাই না গেয়ে যারা দুর্নীতি করছে তাদেরকে ধরেন। এই করোনাকালে এসে অন্তত বিবেক জাগ্রত হোক। এই দুর্নীতিবাজদের ধরেন। মানুষের চিকিৎসার নিশ্চয়তা দেন। টিকা নিয়ে আমরা কোনও কথা শুনতে চাই না। টিকা নিশ্চিত করতে চাই।’
তিনি শিক্ষায় কর ও মোবাইলে অর্থ লেনদেনে করারোপের সমালোচনা করেন। এই প্রস্তাব প্রত্যাহারের দাবি জানান।
অবৈধ টাকাকে কখনোই সাদা করার সুযোগ দেওয়া উচিত না বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
বিএনপির মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘বাজেটে ঘাটতির টাকা কোথা আসবে স্পষ্ট ব্যাখ্যা নেই। ঋণের সুদই দিতে হবে ৬৯ হাজার কোটি টাকা।’
তিনি শিক্ষার্থীদের টিকা দিয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবি জানান।
বিএনপির এই এমপি বলেন, ‘টিকার দাম বলে দেওয়ায় গত ৬ জুন একজন অতিরিক্ত সচিবকে ওএসডি করা হয়েছে। মানুষের করের টাকায় টিকা কেনা হচ্ছে, দাম জানার অধিকার মানুষের আছে। এ জন্য একজন কর্মকর্তাকে ওএসডি করার ঘটনা দুঃখজনক। শুধু একটি নয়, অন্যান্য দেশগুলোর সঙ্গেও টিকার জন্য আলোচনা করার দরকার ছিল।’
বগুড়া থেকে নির্বাচিত এই এমপি বলেন, ‘বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এত বাজে অবস্থা, সেখানে যাওয়া যায় না। গেলে নাকে রুমাল দিয়ে ঢেকে রাখতে হয়। এলাকার রাস্তাঘাটের অবস্থা খুবই খারাপ। কিছু দরপত্র হলেও কাজ হচ্ছে না। মানুষ ফোন দিয়ে গালিগালাজ করে।’
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য সদয় হতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ জানান মোশাররফ হোসেন।
অন্যদের মধ্যে সরকারি দলের সংসদ সদস্য রমেশচন্দ্র সেন, ইকবাল হোসেন, ইউসুফ আব্দুল্লাহ, সংরক্ষিত আসনের নাদিরা ইয়াসমিন, নাহিদ এজহার খান, জাতীয় পার্টির সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা প্রমুখ আলোচনায় অংশ নেন।
বাংলাদেশ জার্নাল- ওআই