ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ মিনিট আগে
শিরোনাম

চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা নিরসনে মেয়াদ বাড়ছে মেগা প্রকল্পের

  চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২০ জুন ২০২১, ১৫:৩৮  
আপডেট :
 ২০ জুন ২০২১, ১৬:৩৫

চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা নিরসনে মেয়াদ বাড়ছে মেগা প্রকল্পের

চট্টগ্রাম মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন মেগা প্রকল্পের মেয়াদ আরো এক বছর বাড়ছে। রোববার মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের বৈঠক হবে। বৈঠকে এই প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে বলে সূত্রে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, জলাবদ্ধতা থেকে চট্টগ্রাম মহানগরীকে রক্ষা করতে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) ‘চট্টগ্রাম মহানগরীর খাল পুনঃখনন, সমপ্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’শীর্ষক মেগা প্রকল্প গ্রহণ করে। এই প্রকল্পের আওতায় নগরীর ৩৬টি খাল সংস্কার, খনন এবং সম্প্রসারণ ছাড়াও খাল দখল করে থাকা প্রায় ৩ হাজার ১৫০টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের কাজ রয়েছে। খাল ছাড়াও বিভিন্ন এলাকার ২৪০ কিলোমিটার ড্রেন পরিষ্কার, খালের পাড়ে ১৭৬ কিলোমিটার রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ, খালগুলোর এক পাশে ১৫ ফুট চওড়া রাস্তা এবং অপর পাশে ৫ ফুট ওয়াকওয়ে নির্মাণ, ৫৪টি ব্রিজ ও কালভার্ট নির্মাণ, কর্ণফুলী নদীর সঙ্গে সংযুক্ত পাঁচটি খালের মুখে স্লুইচগেট নির্মাণ প্রকল্পটিতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

সিডিএ সেনাবাহিনীর মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। ২০১৭ সালে নেয়া প্রকল্পটি ২০২০ সালের জুন মাসে সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু ২০২০ সালের জুনে প্রকল্প মেয়াদ দুই বছর বাড়ানোর জন্য প্রস্তাব করা হয়। সরকার এক বছর মেয়াদ বাড়ায়। এতে করে আগামী ৩০ জুন প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। এই অবস্থায় নতুন করে আবারও এক বছরের মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। ৫ হাজার ৬১৬ কোটি ৪৯ লাখ ৯০ হাজার টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়নাধীন জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হতে চললেও এটির কাজ অর্ধেকও হয়নি। বিভিন্ন খাল-নালা পরিষ্কার করার কথা থাকলেও তা পুরোপুরি হয়নি। প্রকল্পটি করোনাকালে নানা সংকটে পড়ে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় সংকট ছিলো প্রকল্প ব্যয়। প্রকল্পটির জন্য মাত্র ১৭শ কোটি টাকা পাওয়া গেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

প্রকল্প সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা বলেন, ৫ হাজার ৬১৬ কোটি টাকার ব্যয় এখন দশ হাজার কোটিরও বেশি টাকায় উন্নীত হচ্ছে। এর মধ্যে শুধু ভূমি অধিগ্রহণের খরচ বেড়ে যাচ্ছে ১৭শ কোটি টাকা। এই প্রকল্প গ্রহণকালে ভূমি অধিগ্রহণের খরচ ছিলো মৌজা রেটের দেড় গুণ। কিন্তু পরবর্তীতে সরকার তা বাড়িয়ে তিন গুণ করে। ফলে প্রকল্পটিতে ভূমি অধিগ্রহণের খরচ প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা ছাড়াচ্ছে। এছাড়া ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের সঙ্গে আলোচনা করে বিভিন্ন ওয়ার্ডে বেশ কিছু কাজ বাড়তি করতে হচ্ছে। নতুন করে এসব কাজ প্রকল্পটিতে অন্তর্ভুক্ত করতে হচ্ছে। এতে খরচ বাড়ছে। সবকিছু মিলে প্রকল্পটির ব্যয় প্রায় দ্বিগুণে উন্নীত হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে আর্থিক সমস্যা ছিলো। প্রয়োজনীয় টাকা পেতে সমস্যা হয়েছে। সেনাবাহিনীকে এখন পর্যন্ত দেয়া হয়েছে ১৭শ কোটি টাকা, যা প্রকল্পের ৩১ শতাংশ। অথচ প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে ৫০ শতাংশ। টাকার অভাবে বিভিন্ন এলাকায় কাজ ব্যাহত হচ্ছে। ঠিকাদারদের বিল আটকে রয়েছে। করোনাকালে প্রকল্পটি নতুন সংকট মোকাবেলা করেছে।

এ বিষয়ে সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বলেন, প্রকল্পটির মেয়াদ এবং ব্যয় দুটোই বাড়ছে। ভূমি অধিগ্রহণ এবং কাজ বৃদ্ধি করায় খরচ বাড়ছে বলে জানান তিনি।

প্রকল্পের বাকি কাজ সম্পন্ন করার জন্য সময়ের প্রয়োজন উল্লেখ করে সিডিএ প্রকল্প মেয়াদ বাড়ানোর জন্য প্রস্তাব করেছে। আজ রোববার প্রকল্পটির মেয়াদ বাড়ানো নিয়ে মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে জুম মিটিং অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে প্রকল্পটির মেয়াদ এক বছর বাড়ানো হবে বলে সূত্র আভাস দিয়েছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এমএম

  • সর্বশেষ
  • পঠিত