ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

জমি নিয়ে ৫ সন্তানের দ্বন্দ্ব

২৯ ঘণ্টা পর সেই বাবার লাশ দাফন

  রাজবাড়ী প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০৮ জুলাই ২০২১, ১৮:০০

২৯ ঘণ্টা পর সেই বাবার লাশ দাফন
বাবার লাশ উঠানে রেখে পাঁচ সন্তান ব্যস্ত জমি ভাগাভাগি নিয়ে।

উঠানে পড়ে ছিলো বাবার লাশ। তাও আবার এক-দুই ঘণ্টা নয়, টানা ২২ ঘণ্টা। তার পাশেই বসেছিলো দরবার। সেখানে উপস্থিত ছিলো মৃতের পাঁচ সন্তান। তারা ব্যস্ত বাবার সম্পত্তি বণ্টন নিয়ে। সব ফয়সালা হবে তার পর দাফন করা হবে বাবার লাশ।

মৃত্যুর দীর্ঘ ২২ ঘণ্টা পর সালিসের মাধ্যমে ইউপি চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপে দাফনের সিদ্ধান্ত হয় বহুল আলোচিত ইয়াসিন মোল্লা (৮৫) লাশ। বুধবার রাত ৮টার দিকে তাকে তার বাড়ির আঙিনায় দাফন করা হয়।

এর আগে মঙ্গলবার (৬ জুলাই) বিকলে ৩টায় তার মৃত্যু হলেও জমিজমার দ্বন্দ্বে জড়িয়ে লাশ দাফনে বাধা হয়ে দাঁড়ায় বৃদ্ধের ৫ সন্তানের ৪ জন।

দীর্ঘ ২২ ঘণ্টা পর বুধবার দুপুর ১টার দিকে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান হাফিজুল ইসলাম এবং গণ্যমান্যরা সালিশের মাধ্যমে লাশ দাফনের সিদ্ধান্তে উপনীত হন। কিন্তু ততক্ষণে খবর পেয়ে যায় পুলিশ। পরে তারা এসে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যায়।

পরে সুরতহাল রিপোর্ট ও ময়নাতদন্ত শেষে রাত ৮টার (২৯ ঘণ্টা পর) দিকে লাশ রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের দক্ষিণ চর পাঁচুরিয়ার অম্বলপুর গ্রামে বৃদ্ধের বসতবাড়ির আঙিনায় দাফন করা হয়।

বৃদ্ধের সন্তানদের এমন কীর্তিতে হতবাক হয়ে গেছেন স্থানীয়রা। বিষয়টি এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি করেছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুস সালাম মোল্লা জানান, ইয়াসিন মোল্লা ইতোপূর্বে তার বসতবাড়ি ও মাঠের জমিজমাসহ মোট ৬০ শতাংশ জমি তার ছোটছেলে রহমান মোল্লার নামে লিখে দেন। কিন্তু বিষয়টি তার বড়ছেলে বাবলু মোল্লা এবং তিন মেয়ে মেনে নিতে পারেননি। এ নিয়ে অনেক বিচার-সালিশ হয়েছে। আদালতে মামলাও চলছে। বিরোধের কারণে রহমান বাড়িতেও টিকতে পারেনি। সে গোয়ালন্দ পৌর এলাকায় ভাড়া বাড়িতে থাকেন। এ বিরোধের জেরেই মৃত ব্যক্তির লাশ দাফন নিয়ে সমস্যার সৃষ্টি হয়।

দেবগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান হাফিজুল ইসলাম জানান, করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা মুন্সিসহ স্থানীয় গণ্যমান্যরা বসে ইয়াসিন মোল্লার বাড়িঘর ও জমিজমার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। সেক্ষেত্রে যে কোনো সিদ্ধান্ত মেনে নিতে ইয়াসিন মোল্লার ৫ সন্তানই রাজি হয়ে স্ট্যাম্প স্বাক্ষর দিয়েছেন। আশা করি আমরা এর একটা শান্তিপূর্ণ সমাধান দিতে পারব।

গোয়ালন্দ ঘাট থানার এসআই মো. মিজানুর রহমান আকন্দ জানান, আমরা খবর পাই বৃদ্ধ ইয়াসিন মোল্লাকে অতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ খাইয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। সেজন্য বিতর্ক এড়াতে জিডি মূলে লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা করি। ময়নাতদন্তের রিপোর্টের আলোকে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বাংলাদেশ জার্নাল/ওয়াইএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত