ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

সুদ ব্যবসায়ীর খপ্পরে ক্ষতিগ্রস্ত বহু পরিবার

  দিনাজপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৯:২৩

সুদ ব্যবসায়ীর খপ্পরে ক্ষতিগ্রস্ত বহু পরিবার
প্রতীকী ছবি

দিনাজপুরে সুদ ব্যবসায়ীদের চক্রবৃদ্ধির সুদের টাকা পরিশোধ করতে না পারা অনেক পরিবার সর্বশান্ত হয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এই সুদ ব্যবসায়ীরা ঋণগ্রহীতার অভাবের সুযোগ কাজে লাগিয়ে চেকের পাতায় দ্বিগুণ টাকার অঙ্ক লিখে নেন।

সুদ ব্যবসায়ী সুদের টাকা গ্রহণ করলেও আরও বেশি টাকার আশায় চেকের পাতায় দ্বিগুণ পরিমাণ টাকার আশায় সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্টেট আমলি আদালতে মামলা দায়ের করেন।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, দিনাজপুরের ২নং উপশহরের সুদ ব্যবসায়ী রইস উদ্দিনের নিকট থেকে বিভিন্ন পর্যায়ে সাড়ে ৩ লাখ টাকা সুদের ওপর গ্রহণ করে আশরাফুল ইসলাম নামে এক হোটেল ব্যবসায়ী। করোনাকালীন সময়ে হোটেল ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত ৩৫ হাজার করে মাসিক সুদের টাকা প্রদান করে। সুদের টাকা প্রদান করতে না পারায় সুদ ব্যবসায়ী রইচ উদ্দীন দিনাজপুর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে মামলা দায়ের করেন। বর্তমানে মামলাটি চলমান।

ঋণগ্রহীতা আশরাফুল ইসলাম বলেন, সুদ ব্যবসায়ী রইচ উদ্দীনের নিকট গত ১০ জানুয়ারি ২০১৫ সালে সুদের ওপর এক লাখ টাকা গ্রহণ করি। তার বিনিময়ে আমার অভাবের সুযোগ কাজে লাগিয়ে আমার নিকট থেকে ২ লাখ টাকার ব্যাংকের চেক পাতায় লিখে নিয়েছে। তিন মাস আমি ৭ হাজার করে সুদের টাকা প্রদান করেছি। পরবর্তীতে ২০১৫ সালের ২০ এপ্রিল আমাকে আরও ৫ লাখ টাকা ঋণ প্রদান করবেন এই শর্তে আরও ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা প্রদান করে। পরবর্তীতে আরও দুইবার ৫০ হাজার করে ১ লাখ টাকা সুদের ওপর ঋণ প্রদান করে। এর বিনিময়ে আমার নিকট থেকে সাদা স্ট্যাম্প ও ১০ লাখ টাকার চেকের পাতায় স্বাক্ষর করিয়ে নেয়।

তিনি আরও বলেন, প্রথমবার দুই লাখ টাকার চেক এবং পরবর্তীতে আরও ১০ লাখ টাকার আরেকটি চেকের পাতা ও বিপরীতে বিভিন্ন পর্যায়ে সুদের টাকা ১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা পরিশোধ করা হলেও ব্যাংক চেকের পাতা ফেরত দিতে তালবাহানা করে। এক পর্যায়ে রইস উদ্দিন কৌশলে চেকের পাতার মামলা দায়ের করে। মামলাটি বর্তমানে চলমান রয়েছে। বর্তমানে তার সুদের টাকা চক্রবৃদ্ধি হারে বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে এক সময়ে সেই হোটেল ব্যবসাটি বন্ধ করতে বাধ্য হই।

তিন বলেন, পরিবার পরিজন নিয়ে ঢাকা শহরে চলে আসতে বাধ্য হয়েছি। এ বিষয়টি নিয়ে পরিবার-পরিজনসহ বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজনের মাধ্যম দিয়ে সুদ ব্যবসায়ী রইস উদ্দিনের সাথে কয়েকবার আপোষ-মীমাংসার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করলেও শেষ পর্যন্ত মীমাংসা হয়নি।

দিনাজপুর শহরের ইমরান আলী মিঠু বলেন, আমিও সুদ ব্যবসায়ী রইচ উদ্দীনের নিকট থেকে তিন কিস্তিতে ২৫ হাজার টাকা করে মোট ৭৫ হাজার টাকা সুদের ওপর ঋণ গ্রহণ করি। এই ৭৫ হাজার টাকার বিপরীতে আমার নিকট থেকে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকার ব্যাংক চেকের পাতায় স্বাক্ষর করিয়ে নিয়েছে। পরবতীতে যখন সুদের টাকা পরিশোধ করার শেষ পর্যায়ে এসেছে তখন চেকের পাতা ফেরত চাইলে রইচ উদ্দীন আমার নামেও মিথ্যা মামলা দায়ের। সুদ ব্যবসায়ীর খপ্পরে পড়ে আমার মত অনেক পরিবার সর্বশান্ত হয়ে গেছে।

এ ব্যাপারে রইচ উদ্দীন বলেন, আমি সুদের ব্যবসা করি না। কেউ আমার নিকট টাকা নিলে প্রমাণ স্বরূপ স্ট্যাম্প ও ব্যাংক চেক জমা নিয়ে থাকি। যারা ঋণের টাকা গ্রহণ করে তারা নিজেরাই নিজ হাতে নিজ নিজ ব্যাংকের চেকের পাতায় টাকার অঙ্ক লিখে থাকেন। আশরাফুল ইসলামের সাথে ১০ লাখ ও ২ লাখ টাকার পৃথক পৃথক দুটি মামলা আদালতে চলমান রয়েছে। আর মিঠুর মামলাটিও আদালতে চলমান রয়েছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এমপি

  • সর্বশেষ
  • পঠিত