ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : কিছুক্ষণ আগে
শিরোনাম

কাউকে সুবিধা দিতে নয়, আইনের ভিত্তিতে সীমানা পুননির্ধারণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৪ জুন ২০২৩, ১৮:৪৫

কাউকে সুবিধা দিতে নয়, আইনের ভিত্তিতে সীমানা পুননির্ধারণ
নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর। ফাইল ছবি

প্রশাসনিক অখণ্ডতা, ভৌগোলিক সুবিধা, ভোটার ও স্থানীয় পর্যায়ে জনপ্রতিনিধিদের বক্তব্য আমলে নিয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সীমানা চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর। রোববার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।

ইসি বলেন, ‘২০১৮ সালের নির্বাচনে যে তালিকা ছিল সেটাই আমরা খসড়া হিসেবে প্রকাশ করেছিলাম। ২০১৪ সালে ৪০টি এবং ২০১৮ সালে ২৫টি আসনের সীমানায় পরিবর্তন আনা হয়েছিল। তার আগে আরও বেশি ছিল। তবে যত পরিবর্তন কম করা যায়, এটা ছিল আমাদের টার্গেট।’

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ১০টি সংসদীয় আসনের সীমানায় পরিবর্তন এনেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই ১০টি বাদে সংসদের ৩০০ আসনের বাকিগুলোতে সীমানায় কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি। রোববার এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন ইসির ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়।

যে ১০টি আসনের সীমানায় পরিবর্তন এসেছে সেগুলো হলো, পিরোজপুর–১, পিরোজপুর–২, কুমিল্লা-১, কুমিল্লা-২, ফরিদপুর–২, ফরিদপুর–৪, গাজীপুর–২ ও গাজীপুর–৫ এবং নোয়াখালী–১ ও নোয়াখালী– ২ আসন। এর মধ্যে চারটি আসনের সীমানায় এসেছে বড় পরিবর্তন।

ইসি আলমগীর বলেন, ‘আইনে যেহেতু বলা আছে খসড়া প্রকাশ করতে হবে এবং আপত্তি থাকলে তা গ্রহণ করতে হবে। আমরা সেটা করতে বাধ্য। এজন্য খসড়া প্রকাশ করার পর আহ্বান করেছিলাম। এতে ৩৮টি আসনের সীমানায় পরিবর্তনের জন্য ১২৬টি আবেদন পড়ে। আর ৬০টি আবেদন পড়েছিল পরিবর্তন না করার জন্য। কমিশন এরপর শুনানি দিয়েছে। সবার শুনানি, যত কথা ছিল, যত কাগজপত্র, ম্যাপ জমা দিয়েছে। একাধিক বৈঠকে আমরা দীর্ঘ সময় ধরে পর্যালোচনা করেছি। আমরা চার দিন শুনানি নিয়েছিলাম।’

নির্বাচনে কে আসবেন, কে আসবেন না দেখার বিষয় না বলে মন্তব্য করেছেন ইসি আলমগীর। তিনি বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে কে নমিনেশন পাবেন, কোন দল থেকে পাবেন, সেটা তো আমরা জানি না। অতএব উনাদের বক্তব্য যতটা না গুরুত্বপূর্ণ তার বেশি গুরুত্বপূর্ণ ওই এলাকার ভোটার কী বলেন। ভোটারদের সবাইকে তো আর ডাকা যায় না। যারা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি থাকেন বিশেষ করে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র, মেম্বার, কাউন্সিলর এবং উপজেলার যারা চেয়ারম্যান তারা ছিলেন। তারা যে বক্তব্য রেখেছেন, সেগুলো এবং বর্তমানে এমপি মহোদয় আছেন তাদের বক্তব্য আমরা শুনেছি। দেখা গেছে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে হয়তো এমপি মহোদয় এ রকম বলছেন, আবার স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা অন্য রকম বলছেন। আমরা ধৈর্য সহকারে শুনেছি এবং পর্যালোচনা করেছি।’

সীমানা চূড়ান্তে জনসংখ্যা কেন আমলে নেয়া হয় না, তারও ব্যাখ্যা দেন ইসি আলমগীর। তিনি বলেন, ‘আমাদের আইনে আছে যে ভৌগোলিক অখণ্ডতা এবং প্রশাসনিক সুবিধা আগে দেখতে হবে। এরপর জনসংখ্যা যতটুকু সম্ভব আমলে নিতে হবে। জনসংখ্যাকে আগেও প্রাধান্য দেওয়া সম্ভব হয়নি, এখনও হয়নি। কেননা জনসংখ্যা যদি আমরা আমলে নিতে যাই তাহলে অনেক জেলায় আসন আরও কমে যাবে। কোনো জেলায় একটা আসন হয়ে যাবে। আমরা এটা করি না। সেই ভিত্তিতে আমরা পাঁচটা আসনে পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সেই পাঁচটা আসনের কারণে বাকি পাঁচটাতে পরিবর্তন এসেছে।

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ইউনিয়নভিত্তিক ভৌগোলিক অখণ্ডতা আছে, তবে উপজেলাভিত্তিক নেই অনেকগুলো আসনে। এখন যদি এ ধরনের অখণ্ডতা করতে যাই, তাহলে প্রায় ২০০-এর মতো আসনে পরিবর্তন আনতে হবে। আর যদি ইউনিয়নভিত্তিক দেখি, তাহলে আমাদের খুব একটা পরিবর্তন আনার দরকার হয় না। প্রত্যেকটা আসনে কে পক্ষে, কে বিপক্ষে বলে সব রেকর্ড করেছি। একেবারে আদালতের রায়ের মতো করে।’

বিশেষ ব্যক্তিকে সুবিধা দিতে এটা করা হয়েছে কি-না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কোনো বিশেষ ব্যক্তিকে আমরা চিনি না। কোনো বিশেষ ব্যক্তির সঙ্গে আমরা যোগাযোগ রাখি না। যা হওয়ার শুনানি অনুযায়ী হয়েছে।’

আরও পড়ুন: (সংসদ নির্বাচন কখন হবে জানালেন ইসি আলমগীর

বাংলাদেশ জার্নাল/কেএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত