ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

চুয়াডাঙ্গার খেজুরের গুড় যাচ্ছে সারাদেশে

  চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৬ জানুয়ারি ২০১৯, ২৩:২০

চুয়াডাঙ্গার খেজুরের গুড় যাচ্ছে সারাদেশে

চুয়াডাঙ্গার শহর, গ্রাম, পাড়া-মহল্লা সব জায়গাতেই পিঠাপুলি খাবারের ধুম পড়েছে শীতের শুরু থেকেই। আর সেই পিঠাপুলি যদি তৈরd হয় খেজুরের গুড় দিয়ে তাহলে তো আর কথায় নেই। খেজুরের গুড়ের মুখোরচক পিঠাপুলির বাড়তি স্বাদ যেন আরো বেড়ে যায়।

বাংলাদেশে খাঁটি খেজুরের গুড়ের সন্ধানে কেউ যদি একটু খোঁজ করে তাকে অবশ্য চুয়াডাঙ্গাতেই আসতে হবে। এখানে প্রতি কেজি ভাল গুড় বিক্রি হয় ৮০ টাকা ও গুড়ের ভার বিক্রি হয় ১৪০০ থেকে ১৫০০ টাকা দরে।

মাঘ মাসের বিকেল বেলা চাষিরা সব কাজ শেষে মাটির ভাঁড় আর কাঁচি হাতে উঠে পড়েন খেজুর গাছে। রস সংগ্রহের পর তৈরি করা হয় খেজুরের গুড়। প্রতিবছরই শীতের শুরুতেই জেলার গ্রামে বাড়ি বাড়ি দেখা মিলে খেজুরের রস দিয়ে তৈরি গুড়।

প্রতিদিন এসব গুড় গ্রাম থেকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা কিনে নিয়ে হাঁটে-বাজারে বিক্রি করছে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা চুয়াডাঙ্গায় এসে খেজুরের গুড় কিনে নিয়ে যাচ্ছে। এসব পাইকারি ব্যবসায়ীদের অধিকাংশ ঢাকার গুড় ব্যবসায়ী।

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী চুয়াডাঙ্গার সরোজগঞ্জ খেজুর গুড়ের হাট এখন বেশ জমজমাট। স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে পাবনা, সাভার, চট্রগ্রাম, বরিশাল, কুমিলা সহ বিভিন্ন জেলার পাইকারি ব্যবসায়ীরা আসে এই হাটে।

দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ব্যাপারীদের পদচারণায় সপ্তাহে হাটের দুই দিনে মুখর হয়ে ওঠে হাটচত্বর। ক্রেতা বিক্রেতার মাঝে চলে দাম কষাকষি। গুড় কেনার পর মাটির ভাঁড় সারি সারি ভাবে সাজিয়ে তোলা হয় ট্রাকে। আর এসব ট্রাকে খেজুরের গুড় চলে যায় দেশের বিভিন্ন পাইকারি বাজারে।

হাঁটে গুড় কিনতে আসা পাইকারি ক্রেতা-ব্যবসায়ীরা বলছেন গত বছরের তুলনায় এবার খেঁজুরের গুড়ের দাম একটু চড়া। তবে আমদানির তুলনায় চাহিদা বেশি হলে সব জিনিষেরই দাম বাড়ে।

খেজুর গুড়র ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম নয়। এমনটাই বলছেন গুড় বিক্রেতারা। গাড়াবাড়িয়া গ্রামের গুড় বিক্রেতা মফিজ মিয়া জানান, চুয়াডাঙ্গার সরোজগঞ্জে সপ্তাহের যে দুদিন হাট বসে সে দুদিনই এই হাট থেকে ২৫ থেকে ৩০টি ট্রাক নিয়ে খেজুর গুড় দেশের বিভিন্ন স্থানে চলে যায়। পাইকারি ব্যাপারীরা কেজি দরের চেয়ে ভাঁড় হিসেবে গুড় দাম করে কিনতে অধিক আগ্রহী।

ডিঙ্গেদহ বাজারের বাসিন্দা খেজুরের গুড় বিক্রেতা কামরুজ্জামান সেলিম জানান, শীত মৌসুমের সময় তিনি খেজুরের গুড় চুয়াডাঙ্গার সরোজগঞ্জ হাটে পাইকারি বিক্রি করেন। ছোট ভাঁড় ৭শো ৮০ টাকা থেকে সাড়ে ৯শো টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বড় ভাঁড়ের দাম আরও বেশি।

পাবনার শালগাড়িয়া থেকে আসা পাইকারি গুড় ব্যবসায়ী আরমান শেখ বলেন, দিন দিন গুড়ের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। চলতি মৌসুমে তিনি ৩ ট্রাক খেজুরের গুড় কিনেছেন চুয়াডাঙ্গা থেকে। ভাল গুড় হওয়ায় একটু দাম বেশী হলেও গুড় কিনে খুশি তিনি।

স্থানীয় সাধারণ গুড় বিক্রেতাদের দাবি বাইরের জেলার পাইকারি বিক্রেতারা গুড় কিনতে এসে যেন কোন প্রকার হয়রানীর শিকার না হয় সে দিকটা প্রশাসন যদি একটু সুনজর রাখে তাহলে ঐতিহ্যবাহী এই গুড়ের হাট আরও জমে উঠবে।

বাংলাদেশ জার্নাল/জেডআই

  • সর্বশেষ
  • পঠিত