ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৮ মিনিট আগে
শিরোনাম

‘ভয়ে থাকি কখন ছাদ ধসে পড়ে’

  পাবনা প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৭ জুন ২০১৯, ০৯:৫৫  
আপডেট :
 ২৭ জুন ২০১৯, ১০:০৫

‘ভয়ে থাকি কখন ছাদ ধসে পড়ে’

পাবনার চাটমোহর উপজেলার ১০ নম্বর নিমাইচড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদান। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জরাজীর্ণ ভবনেই ক্লাস করতে বাধ্য হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। ঝুকি এড়াতে এবং তীব্র গরমের কারণে কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থীকে স্কুল চত্বরের গাছতলাতেও পাঠদান করছেন শিক্ষকরা। এমন অবস্থার কারণে শতবর্ষী ছুঁই ছুঁই করা স্কুলটিতে ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে শিক্ষার্থীর সংখ্যা।

১৯২৮ সালে প্রতিষ্ঠিত দীর্ঘ প্রাচীন এই স্কুলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্কুলের একপাশে করতোয়া নদী, আরেক পাশে বিশাল পুকুর। স্কুলে ৩টি টিনশেডের আধাপাকা ঘর এবং দুই কক্ষ বিশিষ্ট একটি পাকা ঘর রয়েছে। নদী ও পুকুরের কারণে ভবনের নিচ থেকে সরে গেছে মাটি। টিনগুলোতে মরিচা ধরে ফুটো হয়ে গেছে। আর পাকা ভবনের দুটি কক্ষের মূল পিলার ও বিমের পলেস্তারা ধসে পড়েছে। বেশিরভাগ কক্ষই ব্যবহারের অযোগ্য। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাঠদান চলছে দুই শতাধিক শিক্ষার্থীর।

গরমের কারণে কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থীকে গাছতলায় বসিয়ে পড়ানো হয়। খোলা আকাশের নিচে বসে ক্লাস করতে গিয়ে রোদে অনেক শিশু শিক্ষার্থীই অসুস্থ হয়ে পড়ছে।

২য় শ্রেণীর সোমা খাতুন, জ্যোতি আরা শরিফুল ইসলাম, ৫ম শ্রেণীর আশিক, লাবণী আকতারসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, কয়েক দিন আগে শ্রেণীকক্ষে ক্লাস করার সময় মূল পিলারের বিম ভেঙ্গে পড়ে। অল্পের প্রাণে বেঁচে যায় ৫ম শ্রেণীর কয়েকজন শিক্ষার্থী। তারা আরও জানায়, ‘ক্লাসে বসতে ভয় লাগে। কখন যেন ছাদ ছদে ধসে পড়ে।’ তারা জানায়, বৃষ্টি এলে বই-খাতা ও জামা কাপড় ভিজে যায়। বাইরে গাছের নিচে বসলে খুব গরম লাগে।

সহকারি শিক্ষিক মোছা. নূর নেহার পারভীন বলেন, পড়াশোনার জন্য সবার আগে প্রয়োজন সুন্দর পরিবেশ। কিন্তু আমাদের স্কুলের সেই অবস্থা নেই। মাঝে মধ্যেই মনে হয় ছাদ ধসে পড়বে।

ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. সোহরাব আলী বলেন, ‘স্কুলের ব্যাপারে আমার করার কিছু নেই। কয়েকদিন আগে ইউএনও স্যার এবং শিক্ষা অফিসার মা সমাবেশে এসেছিলেন। তারা দুর্দশা দেখে গেছেন। যা করার এখন তারাই করবেন।’

প্রধান শিক্ষক জয়শ্রী দাস বলেন, ‘ভবনের বেশ কিছু জায়গায় ফাটল ধরেছে। এর আগে ছাদের বিম ধসে অল্পের জন্য বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী প্রাণে বেঁচে গেছে। বাচ্চাদের নিয়ে খুব ভয়ে ভয়ে থাকি। নতুন ভবনের জন্য কয়েকবার উপজেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর দরখাস্ত করেছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। ঝুঁকি নিয়েই ভাঙ্গাচোরা ভবন ও গাছতলায় বসিয়ে শিক্ষার্থীদের পড়ানো হচ্ছে।’

উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আমাকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন। ঝুঁকিপূর্ণ ভবন হিসেবে স্কুলটিকে চিহ্নিত করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে। অচিরেই এ ব্যাপারে ব্যবস্থা হবে।’

  • সর্বশেষ
  • পঠিত