ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

ঈদ ঘিরে ব্যস্ত চুয়াডাঙ্গার কামারপল্লী

  চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০৭ আগস্ট ২০১৯, ০০:২১

ঈদ ঘিরে ব্যস্ত চুয়াডাঙ্গার কামারপল্লী

কোরবানির ঈদের আর মাত্র বাকি রয়েছে ৭ দিন। আর তাইতো শেষ সময়ে ব্যস্ত সময় পার করছে কামার পরিবারের প্রতিটি সদস্যরা। সকাল থেকে রাত অবধি তাদের হাতুড়ির শব্দটা ইদানিং একটু বেড়ে গেলেও ঈদের পর আর এমনটি থাকবে না। এদিকে সময় মতো অর্ডার নেয়া দা, ছুরি, কোদাল, চাকু, বটিসহ নানান ধারালো অন্ত্র কাস্টমারের কাছে ডেলিভারি দিতে কামারের দোকানগুলোতে নেয়া হয়েছে বাড়তি লোকজন। গতবারের তুলনায় এবছর কামারের এসব জিনিসপত্রে দাম বেড়েছে অনেক। তবে কামারীরা বলেন কয়লাসহ নানান জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় তাদের তৈরিকৃত জিনিসপত্রে দাম বাড়াতে হয়েছে। শহরের কয়েকটি স্থানে ঘুরে সকাল থেকেই লক্ষ্য করলে দেখা গেছে, কোরবানিতে পশু জবাইয়ের জন্য ছুরি, দা, ছোট চাকু তৈরি এবং ধার দিতেই ব্যস্ত তারা। এখন আর নতুন করে অর্ডার নিচ্ছেন না তারা। গতবারের থেকে এবারে কাষ্টমারের চাপ বেশি। সকলে নিজের পছন্দমতোই অর্ডার দিচ্ছে কামারদের কাছে। ভারি হাতুড়ি আর আগুনের ফুসকানিতে লোহার এসব পাত পিটিয়ে তৈরি করা হয়েছে বিভিন্ন সাইজের ধারালো অস্ত্র। আগের তুলনায় কামারদের কারিগরের সংখ্যা কমে যাওয়ায় হাতে গোনা কয়েকটি কামারের দোকানে কাস্টমারের সংখ্যা বেশী এবছর। তবে সময় বাঁচাতে কামারের কাছে না গিয়ে অনেকে আবার সরাসরি খুচরা দোকান থেকেই নিজেদের পশু কোরবানি দেবার জন্য প্রয়োজনীয় দা, ছুরি, চাকু কিনছেন।

শহরের বড় বাজার, রেল বাজার, ঝিনাইদহ বাসষ্ট্যান্ড সহ শহরতলীর দৌলৎদিয়ারের বেশ কয়েকটি কামারের দোকানে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তারা ব্যস্ত কোরবানি জবাইয়ের বিভিন্ন সামগ্রী তৈরিতে। তীব্র গরমের মাঝে আগুনের তীব্র তাপ আর শরীরের ঘামে সামান্য কিছু টাকা লাভের আশায় তারা ধারালো অস্ত্র সান দিতেই ব্যস্ত। আর মাত্র দিন কয়েক পরেই পবিত্র ঈদুল আযহা। কোরবানি ঈদ আসলেই কামারদের একটু চাপ বাড়ে। তবে সাড়াবছরই এমনটি থাকে না তাদের। বছরের বেশিরভাগ সময়ই তাদের বাড়িতে বসে থাকতে হয়। যার কারণে ঈদের সময় পশু কোরবানি দেয়ার এসব সামগ্রী তৈরিতে একটু বাড়তি টাকা নেয়া হয় বলে জানান কারিগরেরা। তবে কয়লার দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় খুব লাভের মুখ দেখতে পাচ্ছেন না তারা।

চুয়াডাঙ্গা বড় বাজারের লোহা পট্টির কামার চিত্ত বাবু জানান, গত বছরের থেকে এবছর চাপ অনেক বেশি। কোরবানির দিতে বড় চাকু, ছুরি, দা, কোদাল বিভিন্ন সামগ্রীর বিভিন্ন রকমের দাম। তবে এসব সামগ্রী তৈরিতে যে পরিমাণ কষ্ট কারিগরদের হয় তা ন্যায্য মূল্য তারা পায় না।

রেল বাজারের এক কারিগর জানান, বাপের পেশা ছিল এটা তিনিও এই পেশাই রয়েছেন। তবে এই পেশার কোনো ভবিষ্যৎ নেই। কারণ এই পেশায় কোরবানিতে সামান্য কিছু টাকা আয় হলেও সারাবছর পরিবার নিয়ে অনাহারে দিনযাপন করতে হয় তাদের।

কারিগরেরা বলছে, শরীরের ঘাম আর শত কষ্টের মধ্যেও ঈদের আনন্দ যেন কারো নষ্ট না হয় সে জন্য যত্ন সহকারে কাষ্টমারের দেওয়া অর্ডার মতো তারা তৈরি করছেন কোরবানির পশু কাটার সামগ্রী।

বাংলাদেশ জার্নাল/এনএইচ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত