ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২৯ মিনিট আগে
শিরোনাম

প্রথম আলোর অনুষ্ঠানে আবরারের মৃত্যুতে মামলা

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৩ নভেম্বর ২০১৯, ১৩:৪৬  
আপডেট :
 ০৩ নভেম্বর ২০১৯, ১৩:৪৮

প্রথম আলোর অনুষ্ঠানে আবরারের মৃত্যুতে মামলা

দৈনিক প্রথম আলোর সাময়িকী ‘কিশোর আলো’র অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ঢাকার রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের ছাত্র নাইমুল আবরার রাহাতের মৃত্যুতে একটি মামলা হয়েছে।

শনিবার (২ নভেম্বর) মোহাম্মদপুর থানায় মামলাটি করেন আবরারের বাবা মজিবুর রহমান।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জি জি বিশ্বাস।

তিনি বলেন, ‘মামলার ভিত্তিতে ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্তের প্রথম ধাপে আমরা আবরারের মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছি। চিকিৎসক আমাদের সার্টিফায়েড করেছেন যে, বিদ্যুৎস্পৃষ্টেই তার মৃত্যু হয়েছে। এখন দ্বিতীয় ধাপের তদন্ত। এই ঘটনায় কারও গাফিলতি বা দায় ছিল কি-না তা দেখা হবে। তদন্তে আমরা স্কুল কর্তৃপক্ষের সহায়তা নিচ্ছি।’

এর আগে ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র নাইমুল আবরার রাহাত (১৫) নিহতের ঘটনায় ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে প্রথম আলোর সম্পাদকসহ সংশ্লিষ্টদের লিগ্যাল নোটিশ দেয়া হয়েছে।

কলেজটির সাবেক শিক্ষার্থী ওবায়েদ আহমেদের পক্ষে রোববার রেজিস্ট্রি ডাকযোগে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ফাইজুল্লাহ ফয়েজ নোটিশটি পাঠিয়েছেন।

দৈনিক প্রথম আলোর প্রকাশক ও সম্পাদক, কিশোর আলোর সম্পাদক, তথ্য মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

তবে ক্ষতিপূরণের অর্থ প্রথম আলোর প্রকাশক, সম্পাদক এবং কিশোর আলোর সম্পাদককে দিতে বলা হয়েছে।

নোটিশে ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোনো ধরনের অনুষ্ঠান পরিচালনার ক্ষেত্রে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তথ্য মন্ত্রণালয় সচিব, শিক্ষা মন্ত্রণালয় সচিব এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিবকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

এছাড়া নোটিশ প্রাপ্তির তিনদিনের মধ্যে প্রথম আলোর প্রকাশক, সম্পাদক এবং কিশোর আলোর সম্পাদকের কাছে ঘটনার ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।

ওই ঘটনায় ক্ষতিপূরণের ১০ কোটি টাকা নিহত আবরার রাহাতের পরিবারকে হস্তান্তর করতে বলা হয়েছে।

তবে ক্ষতিপূরণ না দিলে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।

এদিকে আবরারের মর্মান্তিক মৃত্যুর পর সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে। আয়োজক কমিটির উদাসীনতাকে দায়ী করছেন অনেকে-

অঞ্জন রায় নামে একজন লিখেছেন, প্রথম আলোর কিশোরদের কাগজ কিশোর আলোর ‘কিআনন্দ’ অনুষ্ঠানটি ছিলো ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের মাঠে। সেখানে বিদ্যুতায়িত হয়েছিলো নবম শ্রেণির পড়ুয়া নাইমুল আবরার। তাকে মেডিকেল ক্যাম্পে দুজন ডাক্তার দেখার পরে ৫ মিনিট দূরত্বের পাশের সরকারি হাসপাতালে না নিয়ে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেয়া হয়েছিলো, সেখানে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে।

১. প্রথম আলো সবসময়ে ত্রুটি খোঁজে, তাদের প্রতিষ্ঠানের আয়োজিত অনুষ্ঠানের মাঠের বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনা কি তারা গুরুত্বের সাথে দেখেছিলেন?

২. আবরার মারা গিয়েছে এই তথ্য জানার পরেও কোন মানবিকতায় তারা অনুষ্ঠানটি চালিয়ে গেলেন?

৩. আবরারকে পাশের সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে না নিয়ে অন্য হাসপাতালে নেয়া হলো?

৪. তাহসানের গানের শেষে আবরার আহত হলো, মাইকে মাঠের বিদ্যুৎ ব্যাবস্থাপনার ত্রুটির কথা না জানিয়ে অর্ণবকে স্টেজে তোলা হলো। মাঠের হাজার শিশু কিশোরদের তারা কেন তখন সতর্ক করলেন না? উল্টো বিনা ঘোষণায় শেষ করলেন অনুষ্ঠান। এটি কি অন্যায় নয়?

৫. অনিরাপদ বিদ্যুতের তার রেখে হাজারো শিশুদের কেন মাঠে ঢোকালেন কিশোর আলো কতৃপক্ষ? তারা কি এই দায় এড়াতে পারে?

প্রথম আলো অনেক ক্ষমতাবান, তাই হয়তো তারা মাঠে একজনের মারা যাচ্ছে বুঝেও চালিয়ে যেতে পারে তাদের আনন্দ আয়োজন, পারে মৃত্যুর ঘটনা জানার বেশ কয়েক ঘন্টা পর তাদের কিশোর আলোর পেইজে শোক জানাতে। একজন নাগরিক হিসাবে আমি এই ঘটনাকে ফৌজদারী অপরাধ হিসাবে দেখার জন্য অনুরোধ করছি রাষ্ট্রের কাছে।

সাবিরা ইসলাম নামে একজন লিখেছেন, ছাত্রলীগের স্পর্শ নাই। তাই নাইমুল আবরার রাহাতের মৃত্যুতে সিজনালদের শোক নেই! প্রতিবাদ নেই!

বুয়েটের আবরার মানুষের বাচ্চা ছিল আর রেসিডেন্সিয়ালের আবরার বাতাসের সন্তান! ওর বাবা মা নাই, ওর কোনো স্বপ্ন ছিল না, অকালে ও ঝরে যায়নি।

থুহ মারি এইসব সিজনাল শোকগ্রস্তদের মুখে। আর আবরার হত্যার বিচার চাই!

বাংলাদেশ জার্নাল/কেআই

  • সর্বশেষ
  • পঠিত