ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার কাছে জিম্মি মহিলা লীগ নেত্রীর পরিবার

  কক্সবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৪ নভেম্বর ২০১৯, ১৮:২২  
আপডেট :
 ১৪ নভেম্বর ২০১৯, ১৮:২৯

স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার কাছে জিম্মি মহিলা লীগ নেত্রীর পরিবার

কক্সবাজার জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা ও কটেজ ব্যবসায়ী কাজী রাসেল আহমেদ নোবেলের অত্যাচার-নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন জেলা যুব মহিলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি জোবাইদা ইয়াছমিন ও তার পরিবার। তার বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাননি মহিলা লীগ নেত্রী।

বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের একটি হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেছেন জোবাইদা ইয়াছমিন।

তিনি বলেন, আমার ছেলে সাজিম যদি কোনো অপরাধ করে থাকে, তবে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতে পারতো। কিন্তু কাজী রাসেল আহমেদ নোবেল কিভাবে আমার ছেলেকে ঘর থেকে টেনে-হিঁচড়ে তুলে নিয়ে যায়? সে প্রতিনিয়ত আমাদের হত্যার হুমকি দিচ্ছে। বর্তমানে তার কারণে আমি ও আমার পরিবারের সদস্যরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। আমার মেয়ের স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। রাসেল ও তার বাহিনীর অত্যাচারে আমার মালিকানাধীন একটি কটেজও বন্ধ করে রেখেছি কয়েক বছর ধরে। এভাবে তো মানুষ বেঁচে থাকতে পারে না। সে কি আইনের উর্ধ্বে?

তিনি বলেন, গত ৪ নভেম্বর সন্ধ্যায় কাজি রাসেল আহমদ নোবেলের নেতৃত্বে আমার বাড়িতে হামলা চালিয়ে আমার ছেলেকে টেনে-হিঁচড়ে তুলে নিয়ে যায় তার বাহিনী। ওই ঘটনার সিসিটিভির ফুটেজ আমাদের কাছে আছে। ওই ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ্য মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর তাকে ডিবি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। সেদিন হয়তো সিসিটিভি ফুটেজের কারণেই আমার ছেলে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা গত ৪ নভেম্বর থেকে একাধিকবার থানায় গিয়েছি। কিন্তু কোনো সহযোগিতা পাইনি। থানায় অভিযোগ করার অধিকার কি আমাদের নেই? প্রশাসন থেকে আমরা ন্যূনতম সহযোগিতা পাইনি।

সংবাদ সম্মেলনে জোবাইদা ইয়াছমিন বলেন, গত উপজেলা নির্বাচনে কক্সবাজার সদর উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন কক্সবাজার শহরের লাইট হাউজ পাড়ার কাজি রাসেল আহমদ নোবেল। ওই সময় নির্বাচনের ব্যয় মেটাতে কটেজ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে তিন থেকে পাঁচ লাখ টাকা করে চাঁদা দাবি করেন তিনি। আমার ছেলে সাজিমের কাছেও ৫ লাখ টাকা দাবি করা হয়।

স্থানীয় অনেকে ব্যবসায়ী রাসেলের ভয়ে চাঁদা দিলেও আমার ছেলে টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করে। এরপর থেকে আমার ছেলের ওপর প্রতিশোধ নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে সে। ২০০৯ সালেও আমার ছেলেকে হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামালা চালিয়েছিলো রাসেল বাহিনী। ওই ঘটনায় একটি মামলাও দায়ের করা হয় রাসেল বাহিনীর বিরুদ্ধে। যার নং ৫৪/০৯। এছাড়া সৈকত পাড়ায় আমাদের জমি দখল করতেও হামলা চালিয়েছিলো রাসেল ও তার বাহিনী। যা সবাই জানে।

কক্সবাজার পৌরসভার ১২ নং ওয়ার্ডের কলাতলী সৈকত পাড়া এলাকার বাসিন্দা হাফেজ জমিরুল কাদেরের স্ত্রী জোবাইদা ইয়াছমিন দাবি করেন, কাজি রাসেলের বাহিনী এলাকায় রাম রাজত্ব কায়েম করেছে। কেউ তার বিরুদ্ধে কথা বললে নেমে আসে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন। লাইট হাউজ এলাকায় কয়েকটি কটেজ ও হোটেলের রুম দখল করে নিয়মিত ইয়াবা ও পতিতা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। গত ২৪ অক্টোবর রাসেলের মালিকানাধীন ও পরিচালনাধীন ‘শারমিন কটেজ’, ‘আল কাফি কটেজ’ ও ‘সবুজ কটেজে’ অভিযান চালিয়ে পতিতা ও খদ্দের আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশ একটি মামলা দায়ের করে। অথচ রহস্যজনকভাবে কটেজ মালিক রাসেলকে মামলায় আসামি করা হয়নি। ওই মামলায় আমার ছেলেকে আসামি করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে জোবাইদা ইয়াছমিনের পুত্রবধূ সাজিমের স্ত্রী শিমু আকতার ও তার তিন শিশু সন্তান উপস্থিত ছিলো।

এদিকে অভিযোগের বিষয়ে জানতে নানাভাবে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কাজী রাসেল আহমদ নোবেলের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

বাংলাদেশ জার্নাল/আরকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত