ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১০ মিনিট আগে
শিরোনাম

মাদক ব্যবসা না করায় জান্নাতিকে পুড়িয়ে হত্যা, আটক ৪

  নরসিংদী প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৯ জুন ২০১৯, ১৫:১৮

মাদক ব্যবসা না করায় জান্নাতিকে পুড়িয়ে হত্যা, আটক ৪

মাদক ব্যবসায় জড়িত না হওয়ায় নরসিংদীর হাজিপুরে দশম শ্রেণির স্কুল ছাত্রীকে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত মাদক ব্যবসায়ী শান্তি বেগম ওরফে ফেন্সী রানী ও তার ছেলে শিপলু মিয়াসহ ৪ জনকে নাটোর থেকে গ্রেপ্তার করেছে নরসিংদী থানা পুলিশ। নাটোর জেলার নারায়ণপুর পুকুরপাড় এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

বুধবার দুপুরে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার মিরাজ উদ্দিন (বিপিএম)।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, নিহত জান্নাতির শাশুড়ি শান্তি বেগম ওরফে ফেন্সী রানী (৪৫), ছেলে সাব্বির আহামেদ শিপলু ওরফে শিবু (২৩) মেয়ে ফাল্গুনী বেগম (২০) ও শ্বশুর হুমায়ন মিয়া (৫০)। সকলেই নরসিংদী চরহাজিপুরের খাসেরচর গ্রামের বাসিন্দা।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মিরাজ উদ্দিন (বিপিএম) বলেন, পারিবারিক মাদক ব্যবসায় সম্পৃক্ত না হওয়ায় জান্নাতুল ফেরদৌসি ওরফে জান্নাতিকে পুড়িয়ে হত্যা করেন শ্বশুর বাড়ীর লোকজন।

এ ঘটনায় গত শনিবার ১৫ই জুন নিহতের বাবা শরিফুল ইসলাম সদর মডেল থানায় বাদি হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ঘটনার দিন রাতেই ৬ জনকে আটক করা হয়। পরে তাদের দেয়া তথ্য মতে পুলিশ ও ডিবি পুলিশের একটি চৌকস দল নারায়গঞ্জের রুপগঞ্জ, টঙ্গি, চাপাইনবাবগঞ্জ জেলায় অভিযান পরিচালনা করা হয়।

সেখানে না পেয়ে নাটোর জেলায় অভিযান চালানো হয়। সেখান থেকে মঙ্গলবার রাতে এজাহারভূক্ত চার আসামি মাদক ব্যবসায়ী শাশুড়ি শান্তি বেগম ওরফে ফেন্সী রানীসহ হত্যার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হয়। আজই তাদের আদালতে শোপর্দ করা হবে। এবং আদালতের অনুমতি প্রেক্ষিতে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সদ্য পদোন্নতি প্রাপ্ত পুলিশ সুপার জাকির হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শফিউর আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোসেন, সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দুজ্জামান, ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা, গ্রেপ্তার অভিযানে নেতৃত্বে দেয়া উপ-পরিদর্শক নাইমুল ইসলাম মোস্তাক প্রমূখ।

উল্লেখ্য; প্রায় ১ বছর আগে নরসিংদী সদর উপজেলার হাজিপুর গ্রামের শরীফুল ইসলাম খানের দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে জান্নাতি আক্তার (১৬) সাথে পার্শ্ববর্তী খাসেরচর গ্রামের হুমায়ুন মিয়ার ছেলে শিপলু মিয়ার প্রেম হয়। কিছুদিন পরই পরিবারের অমতে তারা পালিয়ে বিয়ে করেন।

বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতেই স্বামীর আসল রুপ বেরিয়ে আসে। স্ত্রী জান্নাতিকে পারিবারিক মাদক ব্যবসায় সম্পৃক্ত করতে মাদক ব্যবসায়ী শাশুড়ি শান্তি বেগম ও স্বামী শিপলু তাকে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। এতে রাজি হয়নি জান্নাতি। ফলে জান্নাতির উপর নেমে আসে কঠোর নির্যাতন।

যৌতুকের টাকা না দেয়াসহ মাদক ব্যবসায় জড়িত না হওয়ায় চলতি বছরের ২১শে এপ্রিল রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় ও শাশুড়ি শান্তি বেগম ও তার মেয়ে ফাল্গুনী বেগম ও স্বামী শিপলু জান্নাতির শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। দগ্ধ হয়ে ছটফট করলেও তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়নি তারা।

পরে এলাকাবাসীর চাপে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করানো হয়। দীর্ঘ ৪০ দিন মৃত্যু যন্ত্রনার পর গত ৩০ মে ঢামেকের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

বাংলাদেশ জার্নাল/টিপিবি

  • সর্বশেষ
  • পঠিত