ঢাকা, রোববার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি: শিক্ষার্থীদের যা জানা দরকার

  আসিফ কাজল

প্রকাশ : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১৯:২৫  
আপডেট :
 ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১৯:৩৫

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি: শিক্ষার্থীদের যা জানা দরকার
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা। ফাইল ছবি

এইচএসসি ও সমমানে অটোপাস দেয়ায় এবার রেকর্ড সংখ্যক শিক্ষার্থী ভালো ফল করেছে। এর মধ্যে শুধু জিপিএ-৫ পেয়েছে গত বছরের তিনগুণ বেশি। এখন শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে বেশি চিন্তা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে। কেমন হবে, কবে হবে, এত ভালো ফলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে থেকে প্রতিযোগিতা কেমন হবে এসব নানা বিষয় নিয়ে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বলছে, আগামী দুই একদিনের মধ্যেই পরীক্ষার বিষয়ে একটা সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

ইউজিসির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য অধ্যাপক আলমগীর হোসেন বলেন, যেহেতু পরীক্ষা হয়ে গেছে এখন সিদ্ধান্ত নেয়াটা সহজ হবে। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং জিএসটি গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যদের সমন্বয়ে গঠিত কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব না কমা পর্যন্ত এই পরীক্ষা আয়োজন করা যাবে না। সেক্ষেত্রে কোনো নির্দিষ্ট দিনক্ষণ আপাতত বলা যাচ্ছে না। তবে বিয়য়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী জানান, বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার ক্ষেত্রে এসএসসি, এইচএসসির জিপিএ বড় একটি ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করে। তবে এবার যে পরিমাণ শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে সেক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা অনেক কঠিন হবে। লিখিত ভালো করেও কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে কষ্ট হবে।

তবে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, যেহেতু এবার সবাই পাস করেছে, সেহেতু সবার হয়তো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি সম্ভব হবে না। তাছাড়া সবাইকে যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে হবে তেমনটাও নয়। আমাদের আরো নানারকম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। কারিগরি শিক্ষার অনেক জায়গা আছে। সেখানে জায়গা খালি থাকে, কিন্তু আমরা শিক্ষার্থী পাই না। এবার আশা করি সেদিকে অনেকেই যেতে উদ্বুদ্ধ হবে। এটা তাদের জন্যও ভালো, দেশের জন্যও ভালো।

তিনি আরো বলেন, আমাদের উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে গত বছর যে সুযোগ ছিল, এবারও স্বাভাবিকভাবে যতটুকু বেড়েছে ততটুকুই। তাতে যারা জিপিএ-৫ পেয়েছে তারাসহ সবাইকে এই পর্যায়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে হবে। কাজেই সেখানে তারা তাদের মেধার পরিচয় দিয়ে, স্বাক্ষর দিয়েই ভর্তির সুযোগ পাবে।

জানা গেছে, এ বছর ২০টি পাবলিক ও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেবে।

এ বিষয়ে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার যুগ্ম-আহ্বায়ক ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের বাংলা, ইংরেজি, গণিত, পদার্থ, রসায়ন এবং আইসিটি বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হবে। বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষার্থীদের বাংলা, ইংরেজি, অ্যাকাউন্টিং, বিজনেস অর্গানাইজেশন ও ম্যানেজমেন্ট এবং আইসিটি বিষয়ে প্রশ্ন থাকবে। আর মানবিক বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীদের বাংলা, ইংরেজি এবং আইসিটি বিষয়ের উপর করা প্রশ্নে পরীক্ষা দিতে হবে।

১৯ বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের যোগ্যতা

গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষায় ১৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের জন্য ন্যূনতম যোগ্যতা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের মোট জিপিএর চতুর্থ বিষয় ছাড়া ৭। ব্যবসায় শিক্ষায় মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের মোট জিপিএর চতুর্থ বিষয় ছাড়া সাড়ে ৬ এবং মানবিকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের মোট জিপিএর চতুর্থ বিষয় ছাড়া ৬।

ভর্তি পরীক্ষার মানবন্টন

বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের জন্য পদার্থ বিজ্ঞান বিষয়ে ২০ নম্বর, রসায়নে ২০, জীববিজ্ঞান-গণিত এবং আইসিটি মিলে ৪০ নম্বরের প্রশ্ন থাকবে। জীববিজ্ঞান, আইসিটি ও গণিতের মধ্যে যেকোনো দুইটি বিষয়ের উত্তর দিতে হবে। আর বাংলা ও ইংরেজি বিষয়ে ১০ নম্বর করে মোট ২০ নম্বরের প্রশ্ন থাকবে।

বাণিজ্য বিভাগের জন্য অ্যাকাউন্টিংয়ে ২৫ নম্বর, বিজনেস অর্গানাইজেশন ও ম্যানেজমেন্টে ২৫, আইসিটিতে ২৫, বাংলায় ১৩ এবং ইংরেজি বিষয়ে ১২ নম্বরের প্রশ্ন থাকবে। আর মানবিক বিভাগে বাংলায় ৪০, ইংরেজিতে ৩৫ এবং আইসিটি বিষয়ে ২৫ নম্বরের প্রশ্ন থাকবে।

আসন সংখ্যা

১৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট আসন ২৩ হাজার ১০৪টি। নিচে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ও আসন সংখ্যা দেয়া হলো।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়- ২ হাজার ৩০৫টি আসনের মধ্যে বিজ্ঞানে ৫৫০টি, মানবিকে ১ হাজার ৪৭১টি এবং বাণিজ্য শাখায় ৪৫০টি।

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়- ১ হাজার ৭০৩টি আসনের মধ্যে বিজ্ঞান শাখায় ১ হাজার ২১০টি, মানবিকে ৩১০টি এবং বাণিজ্য শাখায় ৮৩টি।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়- ১ হাজার ২১৭টি আসনের মধ্যে বিজ্ঞানে ৬৪৫টি, মানবিকে ৪৩৫টি এবং বাণিজ্য শাখায় ৯১টি।

হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়- ২ হাজার পাঁচটি আসনের মধ্যে বিজ্ঞানে ১ হাজার ৩৬০টি, মানবিকে ৩৬৫টি এবং বাণিজ্য শাখায় ২৮০টি।

মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়- ৮১৫টি আসনের মধ্যে বিজ্ঞানে ৭৩৩টি, মানবিকে ২৮টি এবং বাণিজ্য শাখায় ৫৪টি।

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়- ১ হাজার ২৮৫টি আসনের মধ্যে বিজ্ঞানে ৯৭০টি, মানবিকে ১৮৬টি এবং বাণিজ্য শাখায় ১২৯টি।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়- ২ হাজার ৭৬৫টি আসনের মধ্যে বিজ্ঞানে ১ হাজার ২৪৫টি, মানবিকে ৮৫০টি, বাণিজ্য শাখায় ৫২০টি এবং চারুকলা সবার জন্য ১৫০টি।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়- ১ হাজার ১৯০টি আসনের মধ্যে বিজ্ঞান শাখায় ৫১৫টি মানবিকে ২৭৩টি এবং বাণিজ্য শাখায় ২৫২টি।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়- ১ হাজার ৬০টি আসনের মধ্যে বিজ্ঞানে ২৭২টি, মানবিকে ৫৪০টি এবং বাণিজ্য শাখায় ২৪৮টি আসন রয়েছে।

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়- ৯১০টি আসনের মধ্যে বিজ্ঞান শাখায় ৬৮৫টি মানবিকে ১০০টি এবং বাণিজ্য শাখায় ১৪০টি।

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়- ১ হাজার ৩১৫টি আসনের মধ্যে বিজ্ঞানে ৬৯২টি, মানবিক শাখায় ৩৯৮টি এবং বাণিজ্য শাখায় ২৮১টি।

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়- ৯২০টি আসনের মধ্যে বিজ্ঞানে ৬৫০টি, মানবিকে ১৪৫টি এবং বাণিজ্য শাখায় ১২৫টি।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়- ২ হাজার ৭৪৫টি আসনের মধ্যে এবার ১ হাজার ৬০০ আসনে শিক্ষার্থী ভর্তি করবে। পূর্বের হিসেব অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বিজ্ঞান শাখায় ১ হাজার ৪৬০টি মানবিকে ৩৮৫টি, বাণিজ্য শাখায় ৩১০টি এবং সম্মিলিত সবার জন্য ৫৯০টি আসন রয়েছে।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়- ১ হাজার ৪৪০টি আসনের মধ্যে বিজ্ঞান শাখায় ৬৪৯টি, মানবিক শাখায় ৪৬৩টি এবং বাণিজ্য শাখায় ৩০২টি আসন রয়েছে।

রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়- ১৫০টি আসনের মধ্যে বিজ্ঞান শাখায় ৭৫টি এবং বাণিজ্য শাখায় ৭৫টি।

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়- ১৫৫টি আসনের মধ্যে মানবিকে ১২০টি এবং বাণিজ্য শাখায় ৩৫টি।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি- ১০০টি আসন রয়েছে। এর মধ্যে সবগুলোই বিজ্ঞান শাখার জন্য। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে মানবিক শাখা ও নেই বাণিজ্য শাখায় আসন নেই।

শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়- ৯০টি আসনের মধ্যে বিজ্ঞান শাখায় ৩০টি, মানবিক শাখায় ৩০টি এবং সবার জন্য ৩০টি।

বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়- ১৫০টি আসনের মধ্যে বিজ্ঞান শাখায় ৯০টি মানবিক শাখায় ৩০টি এবং বাণিজ্য শাখায় ৩০টি।

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়- এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আসন সংখ্যা ৭৩০টি।

আরো পড়ুন

ভুয়া ওয়েবসাইট খোলায় ডিপিইর জিডি, জানেন না ওসি

ফের রাজপথে নামছেন শিক্ষকরা

প্রাথমিকে বন্ধ হচ্ছে যে সুযোগ

মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে শিক্ষক পদোন্নতির নতুন তালিকা

প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন গ্রেড চূড়ান্ত

বাংলাদেশ জার্নাল/একে/ওয়াইএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত