ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩ মিনিট আগে
শিরোনাম

শীতে কি করোনা বাড়বে?

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ৩১ অক্টোবর ২০২০, ২০:১৫  
আপডেট :
 ৩১ অক্টোবর ২০২০, ২০:১৮

শীতে কি করোনা বাড়বে?
প্রতীকী ছবি

শীতের আগমনের সঙ্গে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা। তাপমাত্রা ওঠানামার সাথে ভাইরাসের সরাসরি সম্পর্ক না থাকলেও নানা কারণে বাড়তে পারে সংক্রমণ, বলছেন বিশেষজ্ঞরা।

ভারতের কলকাতাসহ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় কমতে শুরু করেছে তাপমাত্রা। গভীর রাত ও সকালের দিকে ঠাণ্ডা আমেজ টের পাওয়া যাচ্ছে। শীতের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়েছে, করোনা কি আরো বাড়বে?

দুর্গাপুজোর সময়ে পশ্চিমবঙ্গের দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা চার হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছিল। আপাতত তা চার হাজারের নীচে নামলেও স্বস্তি নেই। শারদীয় উৎসবের জেরে সংক্রমণ কতটা বাড়বে, তা নিয়ে শঙ্কিত চিকিৎসকরা। এরই মধ্যে তাপমাত্রা কমায় বাড়তি উদ্বেগ দেখা যাচ্ছে।

করোনার ভ্যাকসিন এখনো বাজারে আসেনি। পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে বিশ্বজুড়ে। ফলে সাবধানতা অবলম্বন করা ছাড়া সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় নেই। এ পরিস্থিতিতে শীতকাল কতটা উদ্বেগের হয়ে উঠতে পারে?

তাপমাত্রা কমার সাথে সংক্রমণ বৃদ্ধিকে যৌক্তিক মনে করেন না কলকাতার চিকিৎসক কুণাল সরকার। তিনি বলেন, ‘আমাদের এখানে তাপমাত্রা কমলেও আলাদা কোনো প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা নেই। শীত বেশি পড়লে করোনা অনেক বেড়ে যাবে, এটা ভাবার পিছনে যুক্তি নেই। আমাদের দেশে শীতকালে শহরগুলোতে দূষণের মাত্রা অনেক বেড়ে যায়। ফলে শ্বাসযন্ত্রের রোগীদের সমস্যা হয়। করোনার সঙ্গে এটা বাড়তি ফ্যাক্টর হতে পারে।’

অন্যান্য দেশের উদাহরণ দিয়ে ডা. সরকার বলেন, ‘ইউরোপ-অ্যামেরিকায় ঠাণ্ডার সময় মানুষ ঘরে থাকতে পছন্দ করে। ফলে একজন সংক্রমিত হলে দ্রুত অন্যজনের মধ্যে তা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। কিন্তু আমাদের দেশে শীতে মানুষ রোদ পাওয়ার জন্য ঘরের বাইরে বেরিয়ে যায়। তাই অনেকে মিলে একসঙ্গে থাকার সময়টা কমে আসে। যে কারণে, সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়ে না।’

তবে ভাইরাস বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক সিদ্ধার্থ জোয়ারদার শীতকালের বদ্ধ অবস্থা নিয়ে উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, ‘শীতকালে ঠাণ্ডা আটকাতে সব বন্ধ করে রাখার একটা প্রবণতা থাকে। সেটা বাড়িতে যেমন, গণপরিবহণেও তেমন। তাই এই বদ্ধ অবস্থায় একসঙ্গে অনেক মানুষ থাকলে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা বেশি থাকে।’

অধ্যাপক জোয়ারদার বলেন, ‘তাপমাত্রা ওঠানামার সঙ্গে ভাইরাসের বাঁচা-মরার সম্পর্ক নেই। সম্পর্ক রয়েছে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে। অর্থাৎ, শীতকালে সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়বে, ভাইরাস আরো শক্তিশালী হবে, এই ধারণা ঠিক নয়।’

তিনি বলেন, ‘শীতকালে বাতাস শুকনো থাকার ফলে ড্রপলেট তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যেতে পারে। কিন্তু মেঘলা আবহাওয়া বা শিশির পড়ার ফলে বাতাসে স্যাঁতস্যাঁতে ভাব থাকতে পারে। এতে ড্রপলেটের মধ্যে থাকা ভাইরাসের আয়ু বেড়ে যায়। ভাইরাস যত বেশি বেঁচে থাকে, সংক্রমণের আশঙ্কা ততই বাড়ে।’

সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে বারবার হাত ধোয়া বা পরিচ্ছন্ন থাকার কথা বলা হচ্ছে। শরীর ও জামাকাপড় নিয়মিত পরিষ্কার করার কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু তাপমাত্রা কমলে বারবার স্নান করা বা ঘন ঘন কাপড় ধোয়ার প্রবণতা কমবে। ফলে সংক্রমণের সম্ভাবনা বাড়তে পারে। এছাড়া শীতে রোদ কম থাকলে শরীরে ভিটামিন ‘ডি’-এর জোগান কমে যায়।ফলে কমে যায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা।

দুর্গা পূজার সময়ে জনসমাগমের প্রভাব কী হতে পারে তা জানার জন্য নভেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে। তখন তাপমাত্রা আরো কমবে। পশ্চিমবঙ্গে আগের চেয়ে সংক্রমণ বাড়ায় আপাতত সেই পুরোনো পদ্ধতির উপর জোর দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।

কুণাল সরকারের মতে, আরো বেশি বাড়াতে হবে পরীক্ষার সংখ্যা। বজায় রাখতে হবে সামাজিক দূরত্ব। পরতে হবে মাস্ক। সূত্র: ডয়চে ভেলে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এইচকে

অন্যরা যা পড়ছে:

> শীতে করোনা পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে

> দেশে করোনা পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার আশঙ্কা

> শীতকালে করোনা বাড়তে পারে, সতর্ক করলেন তথ্যমন্ত্রী

> করোনায় যেসব গুজবে কান দিবেন না

  • সর্বশেষ
  • পঠিত