ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৮ মিনিট আগে
শিরোনাম

যেভাবে করোনা যুদ্ধে ‘বিজয়ী’ জেসিন্ডা আর্ডানের দেশ

যেভাবে করোনা যুদ্ধে ‘বিজয়ী’ জেসিন্ডা আর্ডানের দেশ

আপাতত করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পুরোপুরি সফল জেসিন্ডা আর্ডানের দেশ নিউজিল্যান্ড। তার সরকার এই রোগের কম্যুনিটি সংক্রমণ বন্ধ করতে সমর্থ হওয়ার কারণেই করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি পেয়েছে দেশটি।

নিউজিল্যান্ডে গত কয়েকদিন ধরে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা এক অঙ্কে নেমে এসেছে। রোববার দেশটিতে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ছিল মাত্র একজন। তাই করোনা যুদ্ধে নিজের দেশকে‘বিজয়ী’বলে ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডান।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে নিউজিল্যান্ডে সামাজিক মেলামেশার ক্ষেত্রে নেয়া কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল করার কয়েক ঘণ্টা আগে এ খবর পাওয়া গেল।

এ অবস্থায় লকডাউন শিথিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তার সরকার। আগামীকাল মঙ্গলবার (২৮ এপ্রিল) থেকেই দেশটিতে অত্যাবশ্যক নয় এমন কিছু ব্যবসা খাত, স্বাস্থ্যসেবা এবং শিক্ষা ব্যবস্থা খুলে দেয়া হচ্চে।

তবে করোভাইরাস ঠেকাতে পাওয়া সাফল্য নিয়ে কেউ যেন ‘আত্মপ্রসাদে’ না ভোগেন, সে বিষয়েও সতর্ক করে দিয়েছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।

লকডাউন তুলে নেয়া হলেও বেশিরভাগ দেশের মানুষজনকে এখনও অধিকাংশ সময় বাড়িতেই থাকতে হবে। একই সঙ্গে বন্ধ থাকছে সব ধরনের সামাজিক যোগাযোগ ও মেলামেশা ।

এ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডানের স্পষ্ট ঘোষণা,‘আমরা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চালু করছি। কিন্তু মানুষের সামাজিক জীবন এখুনি চালু করা হচ্ছে না।’

নিউজিল্যান্ডের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অ্যাশলি ব্লুমফিল্ড বলেন, গত কয়েক দিনে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা অনেক কমে আসায় করোনাভাইরাস দূর করার জন্য সরকার যে লক্ষ্য ঠিক করেছে, আমরা সেটি অর্জন করতে পেরেছি বলে আমাদের বিশ্বাস।

তবে মিস আর্ডান এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক দুজনই এই বলে সতর্ক করেছেন, ভাইরাস নির্মূল হবার ঘোষণা দেয়ার মানে এই নয় যে, দেশে আর কেউ নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হবেন না।

কিন্তু সে সংখ্যা হবে খুবই কম এবং সহজে সেটা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

প্রধানমন্ত্রী আর্ডান বলেন, ‘নিউজিল্যান্ডে ব্যাপক হারে অ-শনাক্তকৃত কোন কম্যুনিটি সংক্রমণ নেই। সে যুদ্ধে আমরা জিতেছি। কিন্তু আমরা অবস্থাটা ওযন এমনই রাখতে পারি, সে ব্যাপারে আমাদের সজাগ থাকতে হবে।’

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হলে নিউজিল্যান্ডে যখন মাত্র ডজনখানেক রোগী শনাক্ত হন, তখনি দেশটি স্বাভাবিক কাজকর্ম এবং ভ্রমণে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে।

দেশটির সব সীমান্ত বন্ধ করে দেয়া হয় এবং দেশটিতে বাইরে থেকে আসা সবাইকে বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়।

এছাড়া কঠোর লকডাউন আরোপ করা হয়, এবং নমুনা পরীক্ষার হার বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়া হয়। সেই সঙ্গে জোরদার করা হয় কন্ট্যাক্ট ট্রেসিং এর ব্যবস্থাও।

এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আর্ডান বলেন, করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব শুরুর পরপরই যদি দ্রুত লকডাউন না দেয়া হত, তাহলে দিনে এক হাজারের ওপর নতুন রোগী শনাক্ত হত।

তাই তার সরকারের গৃহীত ব্যবস্থা দারুণভাবে সফল হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

নিউজিল্যান্ডের করোনা পরিস্থিতি

দেশটিতে এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৪৬৯ জন। এদের মধ্যে বেশিরভাগই সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরে গেছেন। অর্থাৎ সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ১ হাজার ১৮০ জন। দেশটিতে বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও ২৭০ জন। আর নিউজিল্যান্ডে করোনায় মারা গেছেন মাত্র ১৯ জন।

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত