ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের পরিকল্পনায় ইরানে সহিংসতা চালানো হয়েছে: খামেনি

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ : ০৪ অক্টোবর ২০২২, ১৩:১৩

যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের পরিকল্পনায় ইরানে সহিংসতা চালানো হয়েছে: খামেনি
আয়াতুল্লাহ আল খামেনি। ছবি: সংগৃহীত

ইরানে নৈতিকতা পুলিশের হেফাজতে কুর্দি তরুণী মাহশা আমিনীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে চলা বিক্ষোভ সহিংসতা ও নৈরাজ্যের পেছনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আল খামেনি। সোমবার ইমাম হাসান আল মুজতাবা (আ.) ইউনিভার্সিটি অব অফিসার অ্যান্ড পুলিশ ট্রেনিং-এ যৌথ শিক্ষা সমাপনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি ।

খামেনি বলেন, 'আমি সুস্পষ্টভাবে বলছি যেসব ঘটনা ঘটেছে সেসবের পরিকল্পনায় রয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ইহুদিবাদী ইসরাইল এবং তাদের অনুসারীরা। ইরানের সঙ্গে তাদের সমস্যা হলো এই দেশের শক্তি, স্বাধীনতা ও উন্নয়ন। তবে ইরানি জাতি এসব ঘটনায় নিজেকে শক্তিশালী হিসেবে তুলে ধরেছে এবং ভবিষ্যতেও যেখানেই প্রয়োজন হবে সাহসিকতার সঙ্গে ময়দানে অবতীর্ণ হবে।'

আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী বলেন, সাম্প্রতিক ঘটনাবলীতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, স্বেচ্ছাসেবী বাহিনী বাসিজ এবং ইরানি জাতি সবচেয়ে বেশি জুলুমের শিকার হয়েছে। অবশ্য ইরানি জাতি অতীতের মতো এবারও নিজেকে শক্তিশালী হিসেবে তুলে ধরতে পেরেছে এবং ভবিষ্যতেও এমনটিই ঘটবে। ভবিষ্যতেও শত্রুরা যেখানেই নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা চালাবে ঈমানদার ইরানি জাতিই সাহসিকতার সঙ্গে তা রুখে দেবে।

পরিকল্পিতভাবে এই নৈরাজ্য ও সহিংসতা চালানো হয়েছে উল্লেখ করে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেন, এই তরুণীর মৃত্যুর ঘটনা না ঘটলেও তারা অন্য অজুহাত সৃষ্টি করত যাতে দেশে অনিরাপত্তা ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করা যায়। তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের এই পরিকল্পনায় তাদের বেতনভোগীরা এবং বিদেশে বসবাসরত কিছু বিশ্বাসঘাতক ইরানি সহযোগিতা করেছে।

আয়াতুল্লাহ খামেনি উল্লেখ করেন, বিশ্বে এমন নৈরাজ্য ও সহিংসতার ঘটনা অনেক ঘটে। ইউরোপে বিশেষকরে ফ্রান্সের প্যারিসে কিছু দিন পরপরই এমন সহিংসতা দেখা দেয়। কিন্তু এ পর্যন্ত কি এমন ঘটেছে যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদ সেখানকার এমন ঘটনার প্রতি সমর্থন জানিয়েছে এবং বিবৃতি দিয়েছে?

তিনি আরও দাবি করেন, এমন ইতিহাস কি আছে যে, তারা বার্তা দিয়ে বলেছে আমরা তোমাদের পাশে আছি? এমন ইতিহাস কি আছে যে, মার্কিন পুঁজিবাদ এবং সৌদি আরবসহ আঞ্চলিক কিছু সরকারের মতো মার্কিন অনুচরদের মদদপুষ্ট গণমাধ্যম ঐসব দেশের বিশৃঙ্লখা ও সহিংসতা সৃষ্টিকারীদের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে? কখনো কি এমনটা হয়েছে যে, মার্কিনীরা ঐসব দেশের বিশৃঙ্লখা সৃষ্টিকারীদেরকে বিশেষ হার্ডওয়্যার ও সফ্টওয়্যার সরবরাহের ঘোষণা দিয়েছে যাতে তারা সহজে যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা করতে পারে? কিন্তু ইরানে বিশৃঙ্লখা সৃষ্টিকারীদের প্রতি এ ধরণের সহযোগিতা ও সমর্থনের ঘটনা বহু বার ঘটেছে। তাহলে কিছু লোক কীভাবে এসব ঘটনায় বিদেশি হস্তক্ষেপ দেখতে পায় না এবং কেন তারা বুঝতে পারে না এসব ঘটনায় অন্যদের হাত রয়েছে?

ইরানে একজন তরুণীর মৃত্যুর ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের দুঃখ প্রকাশ পুরোপুরি মিথ্যাচার বরং ঘটনা ঘটানোর জন্য অজুহাত পাওয়ায় তারা আনন্দিত-এ কথা উল্লেখ করে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেন, দেশের তিন বিভাগের কর্মকর্তারা ঐ ঘটনার পর দুঃখ প্রকাশ করেছেন। বিচার বিভাগ ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করে এই ঘটনায় অপরাধ হয়েছে কিনা অথবা অপরাধী কে তা বের করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তদন্তের অর্থ এটাই। এ অবস্থায় সেবাদানকারী একটি বিশাল প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা ভুল করেছে এমন আশঙ্কা থেকে সংস্থাটিকে অপবাদ দেওয়া হচ্ছে। এর পেছনে কোনো যুক্তি নেই। এসবের পেছনে বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এবং বিদেশি নীতি নির্ধারকদের ভূমিকা রয়েছে।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আরও বলেন, শত্রুরা ইরানের উন্নয়ন চায় না। এই উন্নয়ন প্রক্রিয়াকে থামিয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে বন্ধ করতে, রাস্তাঘাটে অনিরাপত্তা ছড়িয়ে দিতে এবং কর্মকর্তাদেরকে দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ব্যতিব্যস্ত রাখতে পরিকল্পনা করেছে।

উল্লেখ্য, গত ১৩ই সেপ্টেম্বর দেশটির নৈতিকতা পুলিশের হাতে আটক হওয়ার পর পুলিশের হেফাজতে থাকা অবস্থায় মারা যান বাইশ বছর বয়সী মাহশা আমিনি। নরওয়েভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা ইরান হিউম্যান রাইটস বলছে, বিক্ষোভ সহিংসতায় এ পর্যন্ত শিশুসহ ১৩৩ জন মারা গেছেন।

সূত্র: রেডিও তেহেরান

বাংলাদেশ জার্নাল/এমআর

  • সর্বশেষ
  • পঠিত