ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

মধ্যরাতে লোকসভায় নাগরিকত্ব বিল পাশ

মধ্যরাতে লোকসভায় নাগরিকত্ব বিল পাশ

ভারতীয় পার্লামেন্ট লোকসভায় বহু বাক বিতণ্ডার পর পাশ হয়েছে ধর্মের ভিত্তিতে তৈরি বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল (সিএবি)। দীর্ঘ সাত ঘণ্টা বিতর্কের পর সোমবার মধ্যরাতে বিলটি পাস করাতে সক্ষম হন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আগামী বুধবার রাজ্যসভায় বিলটি উত্থাপন করার কথা রয়েছে। ২৪৫ সদস্যের রাজ্যসভায় বিলটি পাসের জন্য ১২৩ ভোট লাগবে।

সোমবার সকালে লোকসভায় বিল উত্থাপনের বিরোধী দলীয় সাংসদদের তীব্র বিরোধিতার মুখে পড়েন অমিত শাহ। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম আনন্দবাজার বলছে, গত ৫ আগস্ট জম্মু-কাশ্মীরের ৩৭০ ধারা বাতিলের প্রস্তাব সংসদে আনার সময়ও বিরোধীদের এতটা আক্রমণ সামলাতে হয়নি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে।

পরে সোমবার মধ্যরাতে ৩১১-৮০ ভোটে বিলটি পাশ করিয়ে নিতে সক্ষম হয় মোদির দল।

এর আগে বিলের পক্ষে সাফাই গেয়ে অমিত শাহ বলেন, ‘বিলের বিতর্কে বিরোধীদের বক্তব্য শুনে মনে হচ্ছে ওই বিল এনে মুসলিমদের সঙ্গে অন্যায় করা হচ্ছে। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বাস দিয়ে জানাচ্ছি, ওই বিল পাশ হলে এ দেশের মুসলিমদের কোনও ভয় নেই। ভারতে বসবাসকারী মুসলিমদের সঙ্গে ওই বিলের কোনও সম্পর্ক নেই। এ দেশের মুসলিমদের সঙ্গে কোনও ভেদাভেদ হবে না।’একই সঙ্গে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলোকে উদ্দেশ্য করে বলেন, বিল নিয়ে সেখানকার বাসিন্দাদের দুশ্চিন্তা করার কোনও কারণ নেই।

এসময় তিনি আরো জানান, খুব শীঘ্রই গোটা দেশে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) আনা হবে।

তবে বিল পাসের পর বিরোধী দলীয় সাংসদরা বলেন, এক মধ্যরাতে স্বাধীনতা পেয়েছিল ভারত। আর এক মধ্যরাতে তা হারাল। জবাবে অমিত শাহ বলেন,‘আগামীকাল সোনালি সূর্য উঠবে।’

লোকসভায় এই বিল পাশের পরে অমিত শাহকে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

এদিকে ভারতের লোকসভায় বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাসের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবি জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কমিশন ফর ইন্টারন্যাশনাল রিলিজাস ফ্রেডম (ইউএসসিআইআরএফ)। লোকসভায় অমিত শাহের আনীত ওই বিল পাশের ঘটনাকে ‘ভুল পথে বিপজ্জনক মোড়’হিসাবেও আখ্যায়িত করেছে মার্কিন কমিশন।

এ বিল পাসের বিরুদ্ধে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের হাউস ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটিও। এক বিবৃতিতে মার্কিন প্যানেল বলেছে, নাগরিকত্বের জন্য যেকোনো ধরনের ধর্মীয় পরীক্ষা ভারতে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের মূল তাৎপর্যকে ক্ষুণ্ন করতে পারে।

ধর্মের ভিত্তিতে আনীত ওই বিলে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতিবেশী দেশ আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে আসা হিন্দু, শিখ, জৈন, পার্সি, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সে দেশের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু মুসলিম শরণার্থীদের বিষয়ে বিলে কিছু বলা হয়নি। এর অর্থ হচ্ছে, পার্শ্ববর্তী ওই তিন দেশ থেকে আসা মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজনকে ভারতের নাগরিকত্ব দেয়া হবে না।

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত