প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের ফল বাতিলের কোন সুযোগ নেই
সদ্য ঘোষিত প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের ফল বাতিলের কোন সুযোগ নেই। প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা- ২০১৩ পর্যালোচনা করে জানা যায়, ধারা ৭ এর ‘ক’ উপধারা মতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে মহিলা ৬০ শতাংশ, পোষ্য ২০ শতাংশ এবং পুরুষ প্রার্থী ২০ শতাংশ নিয়োগ দিতে হবে। এই বিধিটির উপর ভিত্তি করেই মূলত রিটকারীরা ফল বাতিলের আবেদনটি করেছেন।
কিন্তু একই ধারায় ‘খ’ উপধারায় উল্লেখ রয়েছে ‘উপজেলা/থানা ভিত্তিক শূন্যপদ অনুযায়ী কোন কোন কোটায় উপযুক্ত প্রার্থী পাওয়া না গেলে মেধাক্রম অনুযায়ী একই উপজেলার, ক্ষেত্র মতে থানায় উত্তীর্ণ সাধারণ প্রার্থীদের দ্বারা তাহা পূরণ করা হইবে’। তাহলে রাষ্ট্রপক্ষ বলছে উপযুক্ত প্রার্থী না পাওয়ায় তারা পুরুষ প্রার্থী দ্বারা পূরণ করেছেন, বিধিতেও তা অনুমোদিত। তাছাড়া অধিদপ্তর ও ইতোমধ্যেই সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
সুতরাং বলাই যাচ্ছে ঘোষিত ফল বাতিলের তেমন সুযোগ নেই। ফলে বলাই যাচ্ছে প্রাথমিকে রিটকারীদের অযথা অর্থব্যয়, প্রাপ্তির ঝুলি শূন্য।
তাছাড়া বুয়েট থেকে ফল ঘোষণার পরও কেন ফলে এত ত্রুটি থাকবে সে বিষয়টিই এখন জনমনে ঘুরপাক খাচ্ছে জনমনে। তাহলে বুয়েটিয়ান বলতেই কি থাকলো? সদ্য ঘোষিত প্রাইমারি রেজাল্টে বলা হচ্ছে ত্রুটি হয়েছে। যে কারণে আদালত রুল জারি করেছে। আদালতের রুলই যদি সঠিক হয় তাহলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নিয়োগ কর্তারা কি অদক্ষ অযোগ্য? যদি তাই হয় তাহলে তাদের ভুলের খেসারত নিয়োগপ্রাপ্তরা দেবে কেনো?
নিয়োগপ্রাপ্তরা অধিকাংশই বিভিন্ন পেশায় ছিল যা ইতোমধ্যেই তারা ছেড়ে দিয়েছে নতুন জবের আশায়। এটাই সত্য, এটাই স্বাভাবিক। এখন যদি কোন কারণে ফল বাতিল হয় তাহলে যারা বাদ পড়বে তাদের কী গতি হবে সেটা অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে। তারা চাইলেই আর আগের পেশায় যেতে পারবেনা এটাই নিশ্চিত। যদি এমন হতো ঘোষিত ফলের ২/৩ দিনের মাথায় ফল বাতিল হতো তাহলে ভিন্ন কথা ছিল। কিন্তু এখন ফল বাতিল করা মানে নিয়োগপ্রাপ্তদের অনেকের রিজিক মুখ থেকে কেঁড়ে নেয়া যা মানবতার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। তাদের উপর মা-বাবাসহ আত্মীয় পরিজন নির্ভরশীল।
তাই বিষয়টি সরকারের দ্রুত সুরাহা করা উচিত। যদি ঘোষিত ফলাফলে ত্রুটি হয়েও থাকে প্রয়োজনে নির্বাচিতদের নিয়োগ দিয়ে প্রাপ্য পোষ্যদের মাঠপর্যায়ে দ্রুত শূন্যপদ সংগ্রহ করে প্যানেল করে নিয়োগ দেয়া যেতে পারে। আশাকরি এই পদ্ধতিতে সমস্যাটির সুরাহা দ্রুত হবে এবং কোন পক্ষেরই সমস্যা হবেনা। আশা করি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেবেন।
লেখক: জীবন কৃষ্ণ সরকার, কবি ও প্রাবন্ধিক, সভাপতি, হাওর সাহিত্য উন্নয়ন সংস্থা (হাসুস) বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ জার্নাল/এনএইচ