ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১২ মিনিট আগে
শিরোনাম

আশুলিয়ার এক চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে তিতুমীরের ছাত্রকে কোপানোর অভিযোগ

  হৃদয় আলম

প্রকাশ : ০৭ এপ্রিল ২০২০, ১৮:৩৫  
আপডেট :
 ০৭ এপ্রিল ২০২০, ১৮:৫৩

আশুলিয়ার এক চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে তিতুমীরের ছাত্রকে কোপানোর অভিযোগ
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজের এক শিক্ষার্থীকে চাঁদা না দেয়ায় কুপিয়ে গুরুতর জখমের অভিযোগ উঠেছে সাভারের আশুলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. শাহাব উদ্দিনের বিরুদ্ধে।

জানা যায়, তিতুমীর কলেজের ২০১৬-১৭ বর্ষের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মাসুম বিল্লাহ গত রোববার চাঁদা না দেয়ায় হামলার শিকার হয়েছেন। তার দাবি, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের নেতৃত্বেই এ হামলা চালানো হয়েছে।

মাসুম অভিযোগ করে বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, আমি গরিব পরিবারের সন্তান। অভাবের কারণে আমি সাভারের আশুলিয়ার খেজুরবাগান ল্যান্ডমার্কের সামনে সবজির ব্যবসা শুরু করি। হঠাৎ এর মাঝে একদিন চেয়ারম্যানের লোকজন এসে আমাকে তাদের প্রতিমাসে পাঁচ হাজার টাকা করে চাঁদা দিতে বলে। আমি চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানাই। এরপর তারা আমাকে দেখে নেয়ার হুমকি দিয়ে তারা চলে যায়।

‘আমি তাদেরকে বলেছি, ভাই- আমি ছাত্র মানুষ। আমি অভাবের কারণে ব্যবসা করি। যেটা দিয়ে আমার পেট চলে। আমি এই করে আমার পড়াশোনার খরচ জোগাই। আমি দ্বিতীয় বর্ষে থাকাকালে টাকার অভাবে ফরম পূরণ করতে পারিনি। এখন আপনাদের টাকা দিব কীভাবে?’

‘আমি তাদের বলেছিলাম ভাই আমি ভ্যানের ওপর ব্যবসা করি। অল্প টাকা কামাই করি, আপনাদের চাঁদা দিলে খাবো কী? আমাকে মাফ করেন ভাই।’

‘আমি যখন কাঁচাবাজারের ব্যবসা শুরু করেছিলাম তখন, এলাকাবাসী আমাকে সহোযোগিতার জন্য এগিয়ে এসেছিলো। সবাই আমাকে সহোযোগিতা করেছিলো।’

বিল্লাল বলেন, তারা আমাকে হুমকি দিয়ে চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর আবার সবাই আসে। তখন কারো হাতে চাপাতি ছিলো, কারো হাতে ছিলো রামদ, কারো হাতে লাঠি। সবাই এসে আমাকে পিছন থেকে মারতে শুরু করে করে। একজন আমার হাতে কোঁপ দেয়। আমি ভয়ে দৌঁড় দিলে তারা আমার পেছনে ধাওয়া করে। এরপর আমি একটা বিল পেরিয়ে খালের মধ্যে ঝাঁপ দেই। এ সময় তারা উপর থেকে আমার গায়ে পাথর, লাঠি ছুড়ে মারতে থাকে। পাথরের আঘাতে আমার মাথা এখনো ফুলে আছে। আমি গত দুইদিন ধরে হাসপাতালে ছিলাম। আমার হাত ভেঙে গেছে। আমার আঙ্গুল ভেঙে গেছে।’

‘আমি ওদের অনেকবার বলেছি আমি স্টুডেন্ট, ওরা আমার কোনো কথা শোনেনি। ওরা বলেছে, চেয়ারম্যানের এলাকায় ব্যবসা করবা, চাঁদা দিবা না। এটা হবে না। একদম মেরে ফেলব।’

বিল্লাল বলেন, আমি খাল পেরিয়ে একটি বাথরুমের পাশ দিয়ে পালিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর শুনি আমাকে হাসপাতাল থেকে ওরা তুলে নিয়ে মেরে ফেলতে চাইছে। তাই আমি এখন পালিয়ে আমার এক আত্মীয়ের বাসায় আশ্রয়ে রয়েছি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আশুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহাব উদ্দিন বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, আমি বিষয়টি শুনেছি। ওই লোক নাকি ছাত্রলীগ নেতা। তবে কোনো হামলা হয়নি। যদি কেউ হামলাকারীদের আমার সামনে এনে দিতে পারে আর ওরা আমার লোক হয় তাহলে সর্বোচ্চ কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা আমিই করব। যিনি আমার বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ করছেন তিনি যে জায়গার কথা বলছেন ওখানে কোনো দোকানই ওনার ছিলো না।

তিনি আরো বলেন, কে বা কারা মারছে তা না জানা পর্যন্ত এ ঘটনা সত্য বলে আমি মেনে নিতে পারছি না। আমার এলাকায় সবাই জানে আমরা কেমন লোক। আমরা মানুষকে সহোযোগিতা করি। আমার খারাপ কোনো রেকর্ড নেই। আমার কোনো ক্যাডার বাহিনী নেই। আমার কোনো চাঁদাবাজ বাহীনিও নেই। যিনি আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনছেন তার কোনো দোকানই ওই জায়গায় ছিলো না। তিনি কোনো ভ্যানেও সবজি বিক্রি করতেন না। তার কোনো অস্তিত্ব স্থানীয়রা কখনো দেখেনি। আমি এ বিষয়ে জানি না। আমি এর সাথে জড়িতও না। আর যিনি অভিযোগ করছেন, তার কোনো দোকানও ওখানে ছিলো না। সে যদি দোকানদারি করে থাকে তাহলে স্থানীয়রা তো জানবে বা তাকে চিনবে। কিন্তু কেউ জানে না বা তাকে চেনে না।

ওই ছেলের হাতে যে ব্যান্ডিজ করেছে তা সম্পূর্ণ ভুয়া। এটা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। তার কাছে যদি কেউ চাঁদা চায় তা তো তার আশপাশের দুই-একজন জানবে। কিন্তু কেউ কখনো তাকে দেখেইনি। আর ভ্যানওয়ালার কাছ থেকে কী কেউ পাঁচ হাজার টাকা চাঁদা চায়? ঘটনা শোনামাত্র আমি সেখানে গিয়েছিলাম। স্থানীয়দের কাছে জানতে চেয়েছি এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেছে কিনা। সবাই না বলেছে।’

তিনি আরো বলেন, আমার বাড়ির কাছে একজন ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আছেন ‘সম্রাট’, সে সব সাংবাদিকদের ফোন দিয়ে আমার বিরুদ্ধে এসব করাচ্ছে। উদ্দেশ্য প্রণেদিতভাবে তারা এসব করছে।

এদিকে এ বিষয়ে আশুলিয়ার থানার ওসির সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।

বাংলাদেশ জার্নাল/আরকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত