সাজ্জাক হোসেন শিহাব-এর একগুচ্ছ কবিতা
জার্নাল ডেস্ক
প্রকাশ : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ২২:০৭ আপডেট : ০১ মার্চ ২০২১, ২০:০৬
বনজুঁই-সাইরেন
আমাদের শহরের আমন্ত্রণে হুট করে আসে
গ্রামের মানুষ,তার সাথে গালগল্প,সোনারোদ!
অচেনা নগরে এসে,জোয়ারে ভাসা মাছের মতো
থাকে তার ছোটাছুটি, বাঁধভাঙা আহ্লাদি আমোদ!নীল জীবন নিমিষে হয়ে যায় সফেদ কাফন!
যাত্রী খোঁজে চিরচেনা এক বিদায়ী বার্থিং ট্রেন!
বাজে আরো একবার জ্যাম ঠেলে শোক সাইরেন!তবু দেখি-হুলস্থুল নগরীতে বনজুঁই ছোটে,
নিদারুণ অবহেলা গায়ে মেখে সে নিয়নে ফোটে!
ভরাযৌবন তাণ্ডবে পথ দেখে না ফুল, বকুল!শতশত ঘোরলাগা পালাবদলের গল্পে দেখি,
লুকিয়ে থাকে অচিনে প্রস্থানের শোকের খবর!
এসব অজস্র ভুলে শহরে মিশে গাঁয়ের পুস্প!
গোরখোদকের ছায়া মেখে দেহ ডুবে মাটিগর্ভে।
শুধু মাথা তুলে জেগে থাকে-করুণার এপিটাফ।অন্তহীন আঁধারের খোঁজ রাখে না জীবন আজ। স্মৃতির তাড়া খাওয়া সত্যিই বড্ড কঠিন কাজ!
রিক্ততার খামে
অট্রালিকার পাহাড়ে দেখি অঙ্কের হিসেব।
আমি একা ছুটে চলি ফেলে এসব গণিত।
সুখনামা রাতে,তারা হারা কোনো অন্ধকারে
একা হাঁটবার কালে নিই জাদুমগ্নপাঠ।গাছের তলে কিছুটা চোখের হিসেব ভুলে, তোমার আত্মায় ডুবি, শুদ্ধতার সুর তুলে!
আঁধারে মাথা জাগায় শিল্পীর নিখুঁত ক্লিক ক্যামেরাও তবে আজ কিছুটা উত্তর দিক।
নিজেকে হারিয়ে খুঁজি শূণ্য হবার কারণ। স্পষ্ট হয় প্রিয় সুর, এটাও থাক বারণ!
আমরা আঁধারে মিশি,আলোচোখে দেখি সব এখানে আছে জীবন-রহস্যের কলরব!
একটা কঙ্কাল আজ, ছোটে কথা নিয়ে মুখে!
কঙ্কালেরও একাকী কত কথা থাকে বুকে!
রাত চোষার নেশায় শহরের পথে নামে
জমা হয় কতকিছু সেই রিক্ততার খামে!শেষটা
ফুলটা মলিন হয়ে যাচ্ছে রোদছোয়ার আগেই!
কে তার সুমুখ ছুঁয়ে শুষে নেবে জীবনের শোক?
পাতার ঝোপে লুকিয়ে খেলা করবে আদিম গন্ধে।
বৃষ্টির সঙ্গীতে ডুবে কে জাগাবে এ-মরা শহর!
ভোরের নির্জনে সুর তুলে, ছন্দ মাখাবে শরীরে!ফুলটা ধূসর হয়ে যাচ্ছে নিয়মের কোনো ফাঁকে
আলোফোটার আগেই আত্মহুতি, ফেরাবে কে তাকে!
কুয়াশার মায়াজালে বন্দি রেখে পৃথিবীর শীত
জীবনের পথে জেগে থাকবে কে? ভুলাবে অতীত!কবিতার টান
আজ অন্ধমেঘ ভাঙা!
তার বুক চিরে ধেয়ে আসে কবিতায় সূর্যফুল!
কাতর মানুষ দূরে রাখে
গর্তপ্রিয়মাছরাঙা-স্বভাব। মিশে শব্দমিছিলে!আজ পোকা-মাকড়ের ডাক, নরকেই থাক।
ফুসফুসের ভেতর জাগুক শব্দের সুর!
ফেসবুক, টুইটার, ওয়েবিনারের মাঠে তবে
হোক কাব্যকথা। শাদাভাতের মতোন চাই
কবিতার টান, কাছে-দূর সাত আসমান।বাংলাদেশ জার্নাল/এমএম