ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ মিনিট আগে
শিরোনাম

স্বপ্ন পূরণের বছর

  মনোরমা স্মৃতি

প্রকাশ : ০৬ জানুয়ারি ২০২২, ১০:৪১  
আপডেট :
 ০৮ জানুয়ারি ২০২২, ১২:৪৭

স্বপ্ন পূরণের বছর

কে বলে আমরা পারি না? আমরাই পারি। মায়ের মুখের ভাষার জন্য বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিতে আমরাই পারি। দেশ-মাতৃকার স্বাধীনতার জন্য নিমিষে আমরাই জীবন উৎসর্গ করতে পারি। বাঙালির আবেগ, অনুভূতি আর দেশপ্রেমের এমন নজির বারবার দেখেছে বিশ্ব।

যে দেশের মানুষের এতো দেশপ্রেম, এতো আবেগ, এতো উদ্যমী- তারা তো পিছিয়ে থাকতে পারে না। কোনো বাধা, কোনো প্রতিবন্ধকতায় বীরের জাতিকে সামনে এগোনোর গতি রুখতে পারে না। তাইতো নানা ষড়যন্ত্র ও প্রতিকূলতাকে পেছনে ফেলে দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এগিয়ে যাচ্ছে বাঙালি জাতি। বাংলাদেশ ধীরে ধীরে পরিণত হচ্ছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায়।

কথাগুলো কেন বলছি? কারণ আছে বটে। আমরা নাকি ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’। ‘মোড়লগিরি’ করে বাংলাদেশকে নিয়ে যারা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করেছিল বা করে থাকে তারা এসে দেখে যাক বাঙালিরা আজ কোথায়! স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর এই মাহেন্দ্রক্ষণে বাংলাদেশ এখন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়। দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, কৃষি বিপ্লব, শিল্পোন্নয়ন, খাদ্য নিরাপত্তা, বিশেষায়িত চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়ন, শিক্ষাসহ সবখানেই যেন বৈপ্লবিক পরিবর্তন। এ বছরই তথা ২০২২ সালে সেই উন্নয়নের চিত্র আরও পাল্টে যাবে। এ বছরটি হবে স্বপ্ন পূরণের বছর। আকাশ ছোঁয়ার বছর। কেননা, সদ্য শুরু হওয়া ২০২২ সালের মধ্যে বছরের বিভিন্ন সময়ে দেশের অন্তত তিন থেকে চারটি মেগা প্রকল্প চালু বা উদ্বোধন হবার কথা রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে- বহুল প্রত্যাশিত স্বপ্নের পদ্মা সেতু, রাজধানী ঢাকার মেট্রো রেল, ঢাকা-গাজীপুর এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ও বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামের কর্ণফুলি নদীর তলদেশে তৈরি করা কর্ণফুলি টানেল। গত ৩ জানুয়ারি সচিবালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এসব কথা বলেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

এর বাইরে আরও বেশকিছু বড় প্রকল্পের শেষভাগের কাজ চলছে দুর্বার গতিতে। ইতোমধ্যেই ঢাকা-মুন্সীগঞ্জ হয়ে পদ্মা সেতু প্রকল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত অত্যাধুনিক মহাসড়কের কাজ অনেকটাই শেষ। এখন যে কেউ ওই সড়কে গেলে উন্নয়ন ও আধুনিকায়নের চিত্র দেখে বিস্ময় প্রকাশ করতে বাধ্য হয়। টাঙ্গাইল-সিরাজগঞ্জের যমুনা নদীতে উত্তরাঞ্চলের স্বপ্নের বঙ্গবন্ধু সেতুর পাশেই তৈরি হচ্ছে পৃথক রেল সেতু। ঢাকা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে উত্তরাঞ্চলের বগুড়া হয়ে রংপুর পর্যন্ত চার লেন সড়কের কাজও অনেকটা শেষের পথে। অনেকাংশে যানবাহন চলাচলও শুরু করেছে বেশ আগে থেকেই। এর বাইরেও রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, পায়রা বন্দরসহ চোখ ধাঁধানো নানা উন্নয়নযজ্ঞ চলছে দেশে।

বাংলাদেশ এখন বিশ্ব দরবারে স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে পরিচিত। সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৬ সাল থেকে জাতিসংঘের উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় আত্মপ্রকাশ করবে বাংলাদেশ। অথচ, একটা সময় বাংলাদেশের অস্তিত্ব টিকে থাকা নিয়েই সংশয় ছিল অনেকের। ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে দক্ষিণ এশিয়া পরিস্থিতি নিয়ে নিরাপত্তা উপদেষ্টা হেনরি কিসিঞ্জারের সভাপতিত্বে ওয়াশিংটন স্পেশাল অ্যাকশন গ্রুপের সভায় আলোচনা হচ্ছিল বাংলাদেশকে নিয়েই। যেখানে বাংলাদেশেকে ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’বলে তাচ্ছিল্য করাও হয়েছিল। অথচ, সেই বাংলাদেশ আজ বিশ্ব দরবারে মাথা উচুঁ করে দাঁড়িয়েছে। পদ্মা সেতুর মত এতো বড় মেগা প্রকল্প তৈরি হচ্ছে নিজেদের টাকায়। বাংলাদেশই এখন অন্যদের নানা সহায়তা দিচ্ছে। ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ বিভিন্ন দুর্যোগে বন্ধুপ্রতিম অনেক দেশকে নানা ধরনের সহায়তা দিয়েছে। তাই বাংলাদেশই এখন বিশ্বের কাছে বিস্ময়।

লেখক: সাংবাদিক

বাংলাদেশ জার্নাল/এমএস/আরকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত