ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২ মিনিট আগে
শিরোনাম

সাফল্যের পথে সাহসী নারী উদ্যোক্তা লিসা

  আলফি শাহরীন

প্রকাশ : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৫:০৮  
আপডেট :
 ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৫:১৩

সাফল্যের পথে সাহসী নারী উদ্যোক্তা লিসা

আজকের নারীরা কোনো অংশে পিছিয়ে নেই। ঘরমুখি অবস্থা থেকে বেরিয়ে এসে নিজেদের স্বাবলম্বী করে তুলছেন তারা। আজকের নারীরা মনে করেন প্রতিটি নারীর তার পায়ের নিচের মাটি শক্ত করা প্রয়োজন। ঠিক তেমনি মনে করেন স্বাবলম্বী নারী উদ্যোক্তা উম্মে ফাতেমা লিসা।

একটি নয় দুইটি নয় তিন তিনটি বিজনেসের উদ্যোক্তা লিসা। বুটিকস, হোমমেড মসলা, রেস্টুরেন্ট এর নিজস্ব বিজনেস রয়েছে এই নারী উদ্যক্তার।

একত্রে কিভাবে এই তিনটি উদ্যোগ সামনে এতদূর এগিয়ে নিয়ে আসলেন লিসা? সেই গল্পই বাংলাদেশ জার্নালের কাছে তুলে ধরলেন তিনি।

লিসা জানান, নিজের পরিচয় খুজেছি। সবসময় চেয়েছি নিজের একিটি পরিচয় গড়ে তোলার। সেই লক্ষ্যেই ২০০৬ সালে আমি বুটিকস আইটেম এর মধ্যে বেডশীট দিয়ে উদ্যোক্তার জীবন শুরু করি।

আমার আত্মীয় স্বজন বেশীরভাগ দেশের বাহিরে থাকেন। একবার আমার ভাবি (ভাইয়ের বউ) কানাডা থেকে বললো তার একটি বেডসীট সেট দরকার। আমি খুঁজে খুঁজে কর্মীর থেকেই সরাসরি নিয়ে দেশের বাহিরে পাঠাই তার জন্য। তখন আমার ভাবি ( ভাইয়ের বউ) আমাকে অনুপ্রাণিত করলেন আমি নিজেই এই ব্যবসার উদ্যোগ নিচ্ছি না কেন? তখন থেকেই আমার উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার পথচলা শুরু।

মাত্র ১৩০০ টাকা দিয়ে শুরু করি আমার ছোট্ট উদ্যোগ। ভাবির সুবাধে তখন শুধু দেশের বাহিরের কাস্টমারদের কাছেই এবং নিজের বাসাতেই সেল করতাম। পরবর্তিতে ২০০৭ সালে বগুড়ার জলেশ্বরীতলাতে একটা ছোট শোরুম নেই। আলহামদুলিল্লাহ তখন থেকে এখন পর্যন্ত আমার আঁচল বুটিক এন্ড ফ্যাশন এর শোরুম বেশ ভালো এগিয়ে যাচ্ছে।

বিজনেস ক্যারিয়ারে ১২ বছর নিজেকে স্থায়ী করলাম। তবে এরপর মনে হল নতুন কিছু করার। ইচ্ছে হল নতুন একটি উদ্যোগ নেয়ার। যেই ভাবনা সেই কাজ। খুব সাহস যুগিয়ে ২০১৮ সালে শুরু করে দিলাম বগুড়ায় বোনফায়ার নামে নতুন একটি রেস্টুরেন্ট এর বিজনেজ। বেশ ভালোই চলছিলো আমার এই উদ্যোগ। কিন্তু করোনা মহামারিতে আমার রেস্টুরেন্ট এবং শোরুম উভয়ই বেশ দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকে।

এমন সময় বেশ হতাশ হয়ে পড়ি আমি। কি করবো বুঝে উঠতে পারছিলাম না। তবে আমি থেমে থাকার মানুষ নই। শুরু করে দিলাম ঘরে বসেই অনলাইন বিজনেস।

২০২০ সালে হোমমেড মসলা দিয়ে শুরু করি আমার অনলাইন বিজনেজ আঁচল। আজ কাল বাজারের মসলা গুলো একদমই স্বাস্থ্যকর হয়ে থাকেনা। তখন ভাবলাম আমরা কি খাচ্ছি? আমাদের বাচ্চারা কি খাচ্ছে? তাই কেন এই সময়টা কাজে লাগাই না। আর তখনি বাজার থেকে উন্নত মানের ব্লান্ডার কিনে ভালো মসলা কিনে বাসায় ধোয়াথেকে শুরু করে সব প্রোসেসিং করি। গুড়াও করি বাসায়। আলহামদুলিল্লাহ সব কিছু করার পর মসলার ব্যবসা খুব ভালো চলতে শুরু করলো। কারণ মানুষ ভেজাল মুক্ত হোমমেড সব জিনিস বেশি পছন্দ করেন।

আলহামদুলিল্লাহ্ মহামারি কাটিয়ে উঠে বর্তমানে আমার ৩ টি বিজনেস নিয়ে সফলতার সাথে এগিয়ে যাচ্ছি সকলের দোয়াতে।

বাংলাদেশ জার্নালকে লিসা জানান, আমি বাধা খুব একটা পাইনি। কারণ পরিবারের সদস্যরা আমাকে সবসময় সাপোর্ট করেছে। তবে বাহিরের কিছু দুষ্টু লোক জন অনেক বাঁধা দেবার চেষ্টা করেছে। কিন্তু তারা কিছু করতে পারেনি। কারন আমি আমার নিয়তে অটুট ছিলাম। আর কখনোই পাছে লোকের কথা শুনি না। তাই সব কিছু কেটে উঠতে পেরেছি আমি। তবে আমার পরিবারের সাপোর্ট ছাড়া সম্ভব ছিল না।

লিসা তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা জানান বাংলাদেশ জার্নাল কে। তিনি বলেন, আমি উদ্যোগক্তা ও বিজনেস এর চেয়েও সামাজিক কর্মকান্ডের সাথে বেশি জড়িত। আমি সুবিধাবঞ্চিত দের নিয়ে কাজ করতে ভালোবাসি। তাই আমার ভবিষ্যত চিন্তা ভাবনায় ওদের নিয়ে। আমি একটা কারখানা করবো যেখানে কাজ করবে সুবিধাবঞ্চিত মানুষেরা। তাদের কর্মব্যবস্থানের একটি সুযোগ করে দেয়াই আমার ভবিষ্যৎ লক্ষ্য।

বাংলাদেশ জার্নাল/এএস/এমএম

  • সর্বশেষ
  • পঠিত