ঢাকা, রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : কিছুক্ষণ আগে
শিরোনাম

ক্রিকেট এবং সরকারবিরোধী বিজ্ঞাপন

  ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী সজীব

প্রকাশ : ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৪:২৪  
আপডেট :
 ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৬:৫৭

ক্রিকেট এবং সরকারবিরোধী বিজ্ঞাপন
ফাইল ছবি

পাকিস্তানকে হারিয়ে এশিয়া কাপের ফাইনাল নিশ্চিত করার পর একটি কথার উপদ্রবে কান ভারী হয়ে এসেছে। সেটি হলো, ‌‘বাংলাদেশ ফাইনালে গেছে কি হয়েছে দেখবা ভারত থেকে নরেন্দ্র মোদি ফোন দিবে আর বাংলাদেশ স্বেচ্ছায় হেরে বসে থাকবে’।

অনেকের এমন উদ্ভট কথা আমার কাছে বাতুলতা ছাড়া অন্য কিছু ঠেকছে না। এটা নিছক কোন রসিকতা কিংবা খামখেয়ালিপনা নয়। সরকারের বিরুদ্ধে স্বাধীনতাবিরোধীদের কুৎসা রটানোর সূক্ষ্ম নীলনকশা। এর মাধ্যমে তারা এটা প্রতিষ্ঠিত করতে চায় যে, আওয়ামী লীগ সরকার ভারতের জন্য দেশের যে কোন স্বার্থ জলাঞ্জলি দিতে রাজি।

যেহেতু দেশের আপামর জনসাধারণ ক্রিকেটের প্রতি গভীরভাবে অনুরাগী সেহেতু ষড়যন্ত্রকারীরা জনমনে একটি ধারণার বীজ বপন করতে চায় যে, আওয়ামী লীগ সরকার সবসময়ই ভারতের আনুগত্যের অনুসারী।

নির্বাচনকে সামনে রেখে সর্বত্র গুজবের শেকড় বিস্তৃত করে এখন তারা লাল-সবুজের জার্সির আবেগকে পুঁজি করে বিভ্রান্তি ছড়ানোয় ব্যস্ত। সে প্রেক্ষাপটেই আজ কাঁচা হাতে কলম ধরলাম।

মানছি, প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারতের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক ভাল। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ও ভারত আমাদের পাশে ছিলো বন্ধু হয়ে। এমনকি ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে পাকিস্তানের আত্মসমর্পণের দলিলটিও মিত্রবাহিনীর পক্ষে গ্রহণ করেন তৎকালীন ভারতীয় জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা। কিন্তু তাই বলে বঙ্গবন্ধু ভারতের কাছে নিজেকে বিকিয়ে দেননি। বঙ্গবন্ধু তার দেশপ্রেম, নিষ্ঠা, জাতীয় স্বার্থ, সার্বভৌমত্ব, সম্মানকে সর্বাগ্রে প্রাধান্য দিয়েছেন।।

তার একক প্রচেষ্টায় তিন মাসেরও কম সময়ের মধ্যে ভারতীয় মিত্রবাহিনী দেশে ফিরে গিয়েছিলো। বিশ্বের আর কোথাও যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে সহায়তাকারী কোন মিত্রবাহিনী এত কম সময়ে নিজ দেশে ফেরত যায়নি।

এবার আসি ক্রিকেটীয় ইতিহাস কি বলে: ২০১২ সালের এশিয়া কাপের আসরে ভারতকে হারিয়েই ফাইনাল খেলেছিল বাংলাদেশ। তখন ক্ষমতায় আওয়ামী লীগ। তিন বছর পর বাংলাদেশ সফরে এসেছিলো ভারত। সেই সিরিজেই পর পর দুই ম্যাচ বিরাট কোহলি-ধোনিদের নাস্তানাবুদ করে মাশরাফি বাহিনী। প্রথম ম্যাচে ৭৯ রান এবং পরের ম্যাচে ছয় উইকেটের জয় পেয়েছিলো বাংলাদেশ। এমনকি ২০১৫ সালের সেই ওয়ানডে সিরিজটি জিতেছিলো মাশরাফি-মুশফিকরা। তখনও কিন্তু দেশের ড্রাইভিং সিটে শেখ হাসিনার সরকার। আর সর্বশেষ এ বছরের ১০ জুন তো মহিলা এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে শিরোপা নিয়েই ঘরে ফিরেছে সালমা-রুমানারা।

আজ আবারো সেই মাহেন্দ্রক্ষণের অপেক্ষায় সমগ্র জাতি। আর ক্রিকেট তথা সর্বক্ষেত্রে বদলে যাওয়া এক বাংলাদেশের যিনি নাবিক, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনারও আজ জন্মদিন। প্রত্যাশা থাকবে এমন বিশেষ দিনে বাংলার দামাল ছেলেরা আরো একটি বীরোচিত শিরোপা উপহার দিক।

খেলায় হার-জিত থাকবেই। প্রত্যাশা অনুযায়ী ফলাফল না এলে সেটাকে নেতিবাচক বিজ্ঞাপনের হাতিয়ার না বানিয়ে ইতিবাচক উপলব্ধিই হোক আমাদের পথচলার সঙ্গী।

লেখক: ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী সজীব​, সাবেক পরিবেশ বিষয়ক উপ-সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ

বাংলাদেশ জার্নাল/এনএইচ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত