ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

আবরার হত্যার সঙ্গে ছাত্র রাজনীতি জড়িত না: শ্যামল

  কিরণ সেখ

প্রকাশ : ১৬ অক্টোবর ২০১৯, ১৮:২১  
আপডেট :
 ১৬ অক্টোবর ২০১৯, ১৮:৪৬

‘আবরার হত্যার সঙ্গে ছাত্র রাজনীতি জড়িত না’
ফেসবুক থেকে সংগৃহীত

ইকবাল হোসেন শ্যামল। তিনি ছাত্রদলের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক। অনেক জল্পনা কল্পনার পর দীর্ঘ ২৭ বছর পর গত ১৮ সেপ্টেম্বর প্রত্যক্ষ ভোটে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে বিএনপির ছাত্র সংগঠন ছাত্রদল শীর্ষ নেতৃত্ব বেছে নিয়েছে। এই ভোটে সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকও ছিলেন শ্যামল। নতুন গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত হয়েই তিনি জানিয়েছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রীদের সহাবস্থান নিশ্চিত করবে ছাত্রদল।

এছাড়া বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাত হত্যা, কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন, আন্দোলন এবং ভবিষ্যৎ ছাত্রদল নিয়ে কী ধরণের পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে সেটা জানতে বাংলাদেশ জার্নালের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছিলো ইকবাল হোসেন শ্যামলের সাথে। খোলামেলা নানা কথা জানিয়েছেন তিনি। সাক্ষাৎকারে সঙ্গে ছিলেন কিরণ সেখ

বাংলাদেশ জার্নাল: ছাত্রদল নিয়ে আপনার ভাবনা ও পরিকল্পনা কী?

ইকবাল হোসেন শ্যামল: দীর্ঘ ১৩ বছর যাবৎ বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতার জন্য আমরা আন্দোলন এবং সংগ্রাম করছি। আর দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্রলীগের দখলদারিত্ব চলছে। এই বিষয়টা মাথায় রেখে আমরা আমাদের পরবর্তী পরিকল্পনা করছি। আর আপনারা জানেন যে, কমিটি গঠন হওয়ার পরে আমরা বলেছি- দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রদের সহাবস্থান নিশ্চিত এবং ছাত্রদের অধিকার আদায়ে আমরা ভূমিকা রাখতে চাই। এজন্য ছাত্রদলকে ক্যাম্পাসমুখী করতে চাচ্ছি। কারণ আমরা ভবিষ্যতে সাধারণ ছাত্রদের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের মতপ্রকাশের অধিকার নিয়ে কথা বলবো। আর সাধারণ ছাত্রদের অধিকার আদায়ে তাদের সাথে যৌক্তিক দাবিতে কর্মসূচি দিয়ে আমরা মাঠে থাকবো।

বাংলাদেশ জার্নাল: কবে নাগাদ পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে?

ইকবাল হোসেন শ্যামল: খুব শিগগির কেন্দ্রীয় কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা হবে। তবে আমরা পুরোপুরি করবো না। কারণ কমিটি গঠন যৌক্তিক ও সুশৃঙ্খল করার জন্য আমরা চেষ্টা করছি। এজন্য দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আমরা সম্মেলন করে কমিটি গঠনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের জন্য আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। আর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কাউন্সিল বা তৃণমূলের মতামত নিয়ে কমিটি গঠন করা হবে। এগুলো কমিটি গঠনের শেষ পর্যায়ে আমরা কেন্দ্রীয় কমিটি পূর্ণাঙ্গ করবো। তবে আমাদের একার পক্ষে এই কাজগুলো চালিয়ে যাওয়ার সম্ভব নয়। তাই অল্প কিছু সংখ্যক পদে নেতা নির্বাচন করার চিন্তা-ভাবনা করছি।

বাংলাদেশ জার্নাল: কত সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটির গঠন করা হবে?

ইকবাল হোসেন শ্যামল: ছাত্রদল একটি বৃহৎ সংগঠন। সেক্ষেত্রে ছোট পরিসরে কমিটি গঠন করা জটিল হবে। কিন্তু আমাদের একটি গঠনতন্ত্র আছে। এই গঠনতন্ত্র মোতাবেক আমরা কমিটি গঠন করবো। তবে ২০০ সদস্যের নিচেই কমিটি হবে। যেমন-১৭১, ১৮১ কিংবা ১৯১ হবে। আর আমি আশা করি, ২০০ সদস্যের নিচের থাকবে।

বাংলাদেশ জার্নাল: বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের হত্যাকাণ্ড আপনি কিভাবে দেখছেন?

ইকবাল হোসেন শ্যামল: গত ১০ বছর ধরে আমরা ছাত্রদল বলে আসছি যে, বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠাগুলোতে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠাগুলোতে দলীয় শাসন চলছে। আর সেই কারণেই এই হত্যাকাণ্ড।

বাংলাদেশ জার্নাল: আবরার ফাহাদ হত্যার পর শিক্ষার্থীরা সংগঠনভিত্তিক ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবি জানিয়েছে। এবিষয়ে আপনার মতামত কী?

ইকবাল হোসেন শ্যামল: আবরার ফাহাদ হত্যার সাথে ছাত্র রাজনীতি কখনো জড়িত হতে পারে না। এর দায়ভার ছাত্রলীগের একার। সুতরাং এই দোষারোপ ছাত্র রাজনীতিকে দেওয়া যাবে না। আবরার ফাহাদ একটি দেশ বিরোধী চুক্তির প্রতিবাদ করেছেন। আর বিশ্ববিদ্যালয় একটি মুক্তি চিন্তার জায়গা। সেখান থেকে সে তার স্বাধীন মতামত প্রকাশ করেছেন। কিন্তু বর্তমান সরকার ও ক্ষমতাসীনদের ছাত্র সংগঠন ভিন্ন মতকে ধারণ-লালন করে না এবং সম্মান করতে জানে না। আবরার ফাহাদকে হত্যা করে তারা সেটাই প্রমাণ করেছেন। আর বর্তমান যে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি উঠেছে, সেটা কখনো সমাধান হতে পারে না। কারণ বাংলাদেশে ছাত্র রাজনীতির একটি গৌরব উজ্জ্বল ইতিহাস আছে। আর বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছে ছাত্র রাজনীতির নেতাদের হাত ধরেই। সেই জায়গায় ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ কোন সমাধান হতে পারে না। সুতরাং আমার মতে, সমস্যাটা হচ্ছে ছাত্রলীগের। আর সরকার সেটা নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। আর আমার কথা, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের পক্ষে ছাত্র রাজনীতি। আর আধিপত্যবাদী ও বিদেশী শক্তি ছাত্র রাজনীতিকে হুমকি মনে করে। তাই ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবি আধিপত্যবাদীদের একটি নীল-নকশা মাত্র।

বাংলাদেশ জার্নাল: আবরার ফাহাদ হত্যার প্রতিবাদে ছাত্রদল কি বড় কোন কর্মসূচি ঘোষণা করবে?

ইকবাল হোসেন শ্যামল: আবরার ফাহাদের মতো আর কোন শিক্ষার্থীর যেন এমন মৃত্যু না হয়। সেজন্য আমরা বিশ্ববিদ্যালয় ও সংশ্লিষ্ট সরকারের কর্তৃপক্ষকে আমরা লিখিত অভিযোগ জানাবো। আর আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা ও শান্তির জন্য কর্মসূচি ঘোষণা করে মাঠে থাকবো।

বাংলাদেশ জার্নাল পরিবারের পক্ষ থেকে আপনাকে ধন্যবাদ।

ইকবাল হোসেন শ্যামল: আপনাকেও এবং বাংলাদেশ জার্নালের পরিবারকে ধন্যবাদ।

বাংলাদেশ জার্নাল/এনএইচ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত