ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৯ মিনিট আগে
শিরোনাম

আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার পরামর্শ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২২:৩৫

আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার পরামর্শ
বিএনপি

আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে না যাওয়ার জন্য বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদের পরামর্শ দিয়েছেন দলটির নির্বাহী কমিটির নেতারা। তারা বলছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাওয়া যাবে না। এজন্য কোন রাজনৈতিক ফাঁদেও পড়া যাবে না।

মঙ্গলবার বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলার নেতাদের সাথে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের এক বৈঠকে তারা এসব পরামর্শ দেন।

দ্বিতীয় দফায় অনুষ্ঠিত তিন দিনের ধারাবাহিক বৈঠকের প্রথম দিন ঢাকা ও ফরিদপুর বিভাগের দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও এই দুই বিভাগের জেলা বিএনপির সভাপতিদের সাথে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

বিকেল ৪ টা থেকে অনুষ্ঠিত এ সভায় দুই বিভাগের ১২৬ জন নেতার মধ্যে এদিন ৭৮ জন উপস্থিত ছিলেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বৈঠকে উপস্থিত এক নেতা বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, বৈঠকে নেতারা বলেছেন, গত একদাশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের নামে বিএনপির রাজনীতিকে অন্য কোন দলের নামে লীজ দেয়া হয়েছিলো কিনা? আর সংলাপের নামে সময়ক্ষেপণ কিংবা রাজনৈতিক দূরদর্শিতার অভাব ছিলো কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেক নেতা।

সূত্রটি জানায়, বৈঠকে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য যৌক্তিক দাবিকে বাস্তবে পরিণত করতে হবে বলে জানিয়েছেন নেতারা। এজন্য সংগঠনকে শক্তিশালী করে আন্দোলনের প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে পরামর্শ দিয়েছেন তারা। পাশাপাশি কূটনৈতিক তৎপরতা বৃদ্ধির বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়ার জন্য দলের শীর্ষ নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বৈঠকে উপস্থিত আরেক নেতা বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থা ছাড়া আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে না যাওয়ার পক্ষে দৃঢ় অবস্থান ব্যক্ত করে নেতারা বলেছেন, আমরা আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত আছি। দল থেকে যখনই আন্দোলনের ডাক দেয়া হবে তখনই ঝাঁপিয়ে পড়বো। কিন্তু সেই আন্দোলনের আগে দলকে আরো অনেক প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে, দলের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনকে ঢেলে সাজাতে হবে। ত্যাগী ও যোগ্যদের দিয়ে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি গঠন করতে হবে। একইসঙ্গে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়াতে হবে।

সূত্রটি আরও জানায়, বৈঠকে নেতারা বলেছেন, আন্দোলন ছাড়াও তাদের বেশিরভাগ নেতাকর্মী ঘরছাড়া। মামলা-হামলায় বিপর্যস্ত তৃণমূল। এ অবস্থায় ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো এবারও সরকারকে ওয়াকওভার দিলে বিএনপির রাজনীতি অস্তিত্বের মুখে পড়বে। তাই এবার সরকার পতনের এক দফা আন্দোলন ছাড়া তাদের মুক্তি মিলবে না। কারণ আন্দোলন ছাড়া নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে না।

বৈঠকে নির্বাহী কমিটির মধ্যে শাহ আবু জাফর, বাবুল আহমেদ, হাবিবুর রশিদ হাবিব, মুন্সি বজলুল বাসিত আঞ্জু, ওবায়দুল হক নাসির, শেখ রবিউল, আব্দুল মতিন, পেয়ারা মোস্লাফা, নিপুণ রায় চৌধুরী, ফেরদৌস আহমদ খোকন, কাজী মনির, আশফাক আহমেদ, আকরাম হোসেন, রফিকুল ইসলাম রাসেল, ইয়াসমিন আরা হক, গিয়াসউদ্দিন আহমেদ, মোদাসের আলী ইসহাক, মজিবুর রহমান, সাঈদ সোহরাব, তমিজউদদীন, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী, দিপু ভূঁইয়া, অ্যাডভোকেট শামসুজ্জামান সুরুজ, রোকসানা খানম মিতু, রেজা আলিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন।

সভায় শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স এবং পরিচালনা করেন প্রচার সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানী।

এরআগে প্রথম দফায় গত মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ধারাবাহিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তিন দিনের ধারাবাহিক বৈঠকে মোট ২৮৬ জন নেতা উপস্থিত ছিলেন যাদের মধ্যে ১১৮জন নেতা বক্তব্য রাখেন। এসব বৈঠকে বিএনপির সিনিয়র, মধ্যম ও তরুণ নেতাদের সবাই বলেছেন, আন্দোলন ছাড়া তাদের সামনে কোন বিকল্প নাই।

বাংলাদেশ জার্নাল/কেএস/এমএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত