ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : কিছুক্ষণ আগে
শিরোনাম

‘প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য বিভ্রান্ত মনের উন্মাদনা’

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৫ অক্টোবর ২০১৮, ১২:২৬

‘প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য বিভ্রান্ত মনের উন্মাদনা’

শিবচরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য বিভ্রান্ত মনের উন্মাদনা বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। সোমবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘গতকাল শিবচরে শেখ হাসিনার বক্তব্য বিভ্রান্ত মনের উন্মাদনা। আওয়ামী সরকারের পড়ন্ত বেলায় প্রধানমন্ত্রীর খাপছাড়া বক্তৃতায় দৈন্যদশার বহি:প্রকাশ। অবৈধ ক্ষমতা ধরে রাখতে শেখ হাসিনার একগুঁয়েমির জন্য রাজনীতির ময়দান শান্ত, নিরাপদ ও সুখময় হয়ে উঠবে না। জনসভায় অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রী আজগুবি, উদ্ভট, স্ববিরোধী নানা কথা বলেছেন-যা জাতিকে হতবাকই করেনি, মানুষ মুচকি হেসেছেও। আসলে তিনি তার বক্তব্যে নিজ দলের অনাচারগুলো অন্যের ওপর দায় চাপিয়ে বক্তব্য রেখেছেন।’

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী মহাজোট সরকারের হরিলুটের জন্য এখন চালের কেজি ৮০ টাকা হয়েছে, ৫০ টাকা কেজির নীচে কোন সবজি নেই, তেলের লিটার এখন ১১০ টাকা, সকল নিত্যপণ্যের দাম এখন গ্যালাক্সীতে গিয়ে ঠেকেছে। কর ও ট্যাক্সের অস্বাভাবিক বৃদ্ধিতে মানুষের জীবন ওষ্ঠাগত। গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বেড়েছে আলোর গতিতে। এই পরিসংখ্যান তো প্রধানমন্ত্রী তার গতকালের বক্তব্যে উল্লেখ করেননি।’

বর্তমান সরকার আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত স্বৈরাচার ও নিকৃষ্ট মানের দুর্নীতিবাজ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ইভিএম বিষয়ে রিজভী বলেন, ‘সকল রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ, সাংবাদিক ইভিএম এর বিরোধীতা করলেও সরকারের অনঢ় প্ররোচনায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার ইভিএম পদ্ধতি কেন চালু করতে চাচ্ছেন, সেই থলের বিড়ালটি এখন বেরিয়ে পড়ছে। ভারতের চেয়েও এগারো গুণ বেশি দামে ইভিএম কেনার উদ্দেশ্যই হচ্ছে ভোটের আগে বেশ বড় পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেয়া। নির্বাচনের প্রাক্কালে এই টাকা কমিশনের কিছু ব্যক্তিকে উপহার দিলেন কী না, এটা নিয়েও অনেকের মনে প্রশ্ন আছে। কারণ অনেক কর্মকর্তা কমিশনের নিরপেক্ষতা ভেঙ্গে সরাসরি সরকারের দুস্কর্মের সঙ্গী হতে অবিরাম কাজ করে যাচ্ছে।’

প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ‘২০০৬ সালের অক্টোবরে আপনি যখন লগী-বৈঠা নিয়ে আপনার কর্মীদের ঢাকায় আসতে বলার নির্দেশ দিয়ে দলীয় লোকদেরকে দিয়ে ২৮ অক্টোবরে লাশের ওপর নৃত্য করালেন, তারপরেও কী আপনাকে শান্তির দূত বলতে হবে? চট্টগ্রামে হত্যার হুমকির কথা বাদই দিলাম, এবারে ক্ষমতায় এসে বিএনপির মন্ত্রী-এমপি থেকে শুরু করে যুবনেতা-ছাত্রনেতাসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের গুম হওয়া-যা প্রত্যক্ষভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন দ্বারা সংঘটিত হয়েছে, তারপরেও কী আপনাকে মানবতার জননী বলতে হবে?’

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির এই মুখপাত্র আরো বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বন্দী করে এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় একের পর এক সাজা দিয়ে আপনার ক্রোধাগ্নী নির্বাপন করতে পারেননি। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ নানা কালাকানুন করে-আপনারা গণতন্ত্রকেই লকআপ করেছেন। এখন মানুষ মন খুলে কথা বলতে এবং হাসতেও ভয় পায়। মানুষ এখন ডিজিটাল আতংকে ভুগছে। আপনার নির্বাচনে ভোটারদের কোন অস্তিত্ব নেই, আপনার অধীনে যত নির্বাচন হয়েছে তা ভোট ডাকাতি। গণমাধ্যমগুলোর মালিক ও সাংবাদিকরা চরম আতংকে আছেন। এরপরেও কী আপনাকে গণতন্ত্রের মানসকন্যা বলতে হবে?’

আজ থেকে শুরু হয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গাপুজা উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘দূর্গাপুজা উপলক্ষে আপনাদের মাধ্যমে দেশের হিন্দু সম্প্রদায়কে তারেক রহমান ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।’

কেএস/ওয়াইএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত