ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

গয়েশ্বরের রক্তমাখা কাপড় নিয়ে অঝোরে কাঁদলেন মেয়ে

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮, ০২:৩০

গয়েশ্বরের রক্তমাখা কাপড় নিয়ে অঝোরে কাঁদলেন মেয়ে
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন গয়েশ্বরের মেয়ে অর্পণা রায় দাস। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা-৩ আসনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের ওপর হামলার পর তার রক্তমাখা পাঞ্জাবি ও চাদর নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তার মেয়ে অর্পণা রায় দাশ। বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর পল্টনে ঐক্যফ্রন্ট কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বাবার রক্তমাখা কাপড় হাতে নিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন মেয়ে অর্পণা রায় দাশ। কান্না জড়ানো কণ্ঠে পরিবারের নিরাপত্তা চেয়েছেন তিনি।

স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেরানীগঞ্জ থানার সভাপতি মিজানুর রহমান সুমনের নেতৃত্ব গণসংযোগের মধ্যে হামলার বিবরণ দেন অর্পণা। বলেন, ‘আমার বাবা নির্বাচন কমিশন থেকে এসে এলাকায় নির্বাচনী গণসংযোগে বের হোন। সে সময় মিজানুরের নেতৃত্বে প্রায় ৪০ জন সন্ত্রাসী আমাদের গণসংযোগের ভেতরে ঢুকে হামলা চালায়। সন্ত্রাসীরা হাতুড়িপাতাল ও চাপাতি দিয়ে আমাদের নেতাকর্মীদের হত্যা করার চেষ্টা চালায়। হামলার সময় আমার বাবা নিরাপত্তার জন্য একটা ফার্নিচারের দোকানে গিয়ে অবস্থান নেন। কিন্তু সন্ত্রাসীরা সেখানে গিয়ে তার মাথায় আঘাত করে।’

মুক্তিযোদ্ধা গয়েশ্বরের ওপর হামলার ঘটনা জাতীর জন্য লজ্জার উল্লেখ করে অর্পণা রায় বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সারাদেশে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে৷ গতকাল সারাদেশে সংখ্যালঘুদের সকল নেতাদের ওপর হামলা চালিয়েছে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা। আমার বাবাকে হত্যার উদ্দেশ্যেই এই হামলা চালানো হয়েছিলো। এটা একটা পরিকল্পিত ঘটনা।’

নির্বাচনে নৌকার ভরাডুবি নিশ্চিত তাই হত্যার জন্য এই হামলা চালানো হয়- এমন মন্তব্যও করেন তিনি।

গয়েশ্বর কন্যা অর্পণা রায় কেরানীগঞ্জের উপজেলা চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা শাহিন চৌধুরীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘কাল টকশোতে বড় বড় কথা বলে গেলেন...আবার আজ নাটক করার জন্য মন্ত্রীর সঙ্গে বাবাকে দেখতে আসলেন...আসলে এই হামলার পেছনের মদদদাদাতা তিনিই। তিনি একজন ভূমিদূস্য।’

‘এর আগে ২০১০ সালের ১৮ জুন আমার কোলের তিন মাসের বাচ্চা, আমার স্বামীসহ আমাকে নির্মম ভাবে মেরে ফেলার চেষ্টা চালিয়েছিলো তার সন্ত্রাসী বাহিনী।’

এসময় অর্পণা বাবা গয়েশ্বরের রক্তমাখা কাপড় তুলে ধরে বলেন, ‘তারা বলছে এই রক্ত নাকি রক্ত না। তাহলে আপনারা এই কাপড় ডিএনএ টেস্ট করে দেখেন। এটা রক্ত নাকি অন্যকিছু। আমি এজন্যই এটা সঙ্গে করে নিয়ে আসছি।’

কান্না জড়িত কণ্ঠে অর্পণা বলেন, ‘তারা বারবার আমাদের পরিবারের উপর হামলা চালাচ্ছে। আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ আমার পরিবার এবং আমার বাবাকে নিরাপত্তা দিন।’

সংবাদ সম্মেলনে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসীন মন্টু, কার্যকরী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়া এলাকায় গণসংযোগের সময় হামলায় বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় আহত হন। তিনি ছাড়াও বিএনপির আরো কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হন বলে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

পরে কেরানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুলতান নাসের সাংবাদিকদের বলেন, ‘ইটের আঘাতে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের মাথা ফেটে যায়। পরে তাকে লাঠি দিয়েও পেটানো হয়। তিনি নিজেও আহত হন।’

এদিকে বুধবার ঢাকার কেরানীগঞ্জে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের ওপর হামলার ঘটনাকে ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ অভিহিত করে লজ্জিত বোধ করেছেন প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। তিনি ঢাকা-৩ আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করছেন। একই আসনে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের ওপর হামলার ঘটনায় গুরুতর আহত হওয়ার পর বুধবার সকালে তাকে দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের কাছে প্রতিমন্ত্রী এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।

প্রতিমন্ত্রী সাথে কেরানীগঞ্জের উপজেলা চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা শাহিন চৌধুরী ছিলেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/ওয়াইএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত