ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৮ মিনিট আগে
শিরোনাম

‘দুজনের ওপর আস্থা’ বিএনপির

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ২৪ জানুয়ারি ২০১৯, ১০:১০

‘দুজনের ওপর আস্থা’ বিএনপির

গঠনতন্ত্র অনুসারে আগামী মার্চেই জাতীয় কাউন্সিল চান বিএনপির নেতারা। চেয়ারপার্সন ও সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যান ছাড়া বাকি সব পদে নির্বাচনের পক্ষে কেন্দ্রীয় নেতারা। তারা বলছেন, সময়োপযোগী আন্দোলনের জন্য দলকে তৈরি করতে যোগ্য নেতৃত্ব বাছাই করার কোনো বিকল্প নেই।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির এক নেতা বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিনিয়র নেতাদের ভুল কৌশলের কারণে ভরাডুবি হয়েছে। দলের মধ্যেও একটা বিভক্তি দেখা দিয়েছে। কেউ কারো ওপর আস্থা রাখতে পারছে না, তাই বেশিরভাগ নেতাই দলে পরিবর্তন চাইছেন। তবে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে ছাড়া সব পদে নির্বাচনের পক্ষে অধিকাংশ নেতা।

এদিকে বিএনপির গঠনতন্ত্রে তিনবছর পর পর কাউন্সিল হওয়ার কথা থাকলেও গেল ২৫ বছরে কাউন্সিল হয় মাত্র তিনবার। সবশেষ কাউন্সিল হয়েছিল ২০১৬ সালের ১৯শে মার্চ। সে হিসেবে আগামী মার্চেই পরবর্তী কাউন্সিল করার পক্ষে তৃণমূলের নেতারা। শুধু তাই নয়, নির্বাচনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের কথাও বলছেন তারা।

দলীয় কাউন্সিলের বিষয়ে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম-সম্পাদক এস এম এ বকর বলেন, গঠনতন্ত্র মোতাবেক কাউন্সিল নির্দিষ্ট সময়ে হওয়া দলের জন্য ভালো। দুটো পদ বাদ দিয়ে বাকী পদগুলোর জন্য নির্বাচন দিলে দলের জন্য এবং কর্মীদের জন্য ভালো হবে। সময়মতো কাউন্সিল হলে দল যোগ্য প্রার্থীকে বেছে নিতে পারে।

বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মো রহমত উল্লাহ বলেন, আমাদের দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তিন বছর পর পর কাউন্সিল হওয়ার কথা। নিয়মিত কাউন্সিল হলে একটি দল শক্তিশালী হয়। দলের চুলচেরা বিশ্লেষণ করা সম্ভব হয়। তবে, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা মনে করেন দলের দুরবস্থার জন্য বর্তমান নেতৃত্ব দায়ী। তাই যোগ্য নেতৃত্ব বাছাইয়ের ওপর জোর দিচ্ছেন তারা।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান জানান, বর্তমানে দলের স্থায়ী কমিটিতে খালেদা জিয়া ছাড়া কেউ নেই। তার অধীনেই আমরা কাজ করছি। তবে স্থায়ী কমিটিতে নারীদের অগ্রাধিকার দেয়ার কথাও তুলে ধরেন সেলিমা রহমান।

কাউন্সিল নিয়ে বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, আমাদের পোলাও বিরিয়ানী খেয়ে কাউন্সিল করার দরকার নেই, প্রয়োজনে আমরা ডালভাত খেয়ে আমরা কাউন্সিল করব। কিন্তু সবার কথা কাউন্সিলে শোনা হোক।

খালেদা জিয়া এবং তারেক জিয়ার পদ ছাড়া সব পদ ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হোক সেটা চান বলেও মন্তব্য করেন তৈমুর আলম খন্দকার।

এদিকে বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বলেন, আমাদের দলে কাউন্সিল লাগে না, নেতা বা নিয়োগপ্রাপ্ত কাউকে নিয়োগ করা যায়।

এখনতো কাউন্সিল হলেও ভোটাভুটি হয়না উল্লেখ করে শাহজাহান ওমর বলেন, কাউন্সিলেও তো ভোট ছাড়াই পদ ঘোষণা করা হয় সেখানে কাউন্সিলের দরকার কি।

তবে, জাতীয় কাউন্সিল নিয়ে এখনো ভাবছেনা বিএনপি। আর কাউন্সিল না হলেও নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে দ্রুত পরিবর্তন দরকার বলে মনে করেন অনেকে।

এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বা এ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।

অন্যদিকে বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, অনেকেই শারীরিক কারণে ভূমিকা রাখতে পারছেন না, সেক্ষেত্রে আমি মনে করি স্থায়ী কমিটির উচিত অতি দ্রুত এটাকে পুনর্গঠন করা।

আর দলটির ভাইস-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বলেন, খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমান বর্তমানে সক্রিয় না। আর বাকী ১৭টি পদের মধ্যে আছেন ৯ জন। এক্ষেত্রে বাকী ৮টি পদ কেনো পূরণ করা হয়না আমি জানিনা। তবে, স্থায়ী কমিটিতে যারা আছে তাদের মধ্যে অনেকেই শারীরিকভাবে অসুস্থ্য আবার কেউ কেউ বৃদ্ধ হয়ে গেছেন। এদেরকে বাদ দিয়ে নতুনদের নেয়া উচিত বলেও করেন শাহজাহান ওমর।

১৯৭৮ সালের ১লা সেপ্টেম্বর বিএনপি প্রতিষ্ঠার পরই রাজধানীর রমনা বটমূলের খোলা চত্বরে অনুষ্ঠিত হয় দলটির প্রথম কাউন্সিল। দ্বিতীয় কাউন্সিল হয় ১৯৮২ সালের ফেব্রুয়ারিতে। ১৯৮৯ সালে তৃতীয় কাউন্সিলে খালেদো জিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে দলটির চেয়ারপার্সনের দায়িত্ব নেন।

আরএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত