ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ মিনিট আগে
শিরোনাম

আমাদের সময় শেষ হয়ে আসছে: ফখরুল

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১০ মে ২০১৯, ১৩:৫১

আমাদের সময় শেষ হয়ে আসছে: ফখরুল

নিজের রাজনীতির জীবনের কথা উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমি সুস্থ নই। তারপর আমার মাঝে মাঝে মনে হয়, আমাদের সময় তো শেষ হয়ে আসছে।

শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ন্যাশনালিস্ট রিসার্চ সেন্টার আয়োজিত এক আলোকচিত্র প্রর্দশনী ও আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রাজনীতিতে আগমন, বিএনপি চেয়ারপারসন হিসেবে দায়িত্ব পালনের ৩ যুগ্ম পূর্তি’ উপলক্ষে এ আলোকচিত্র প্রর্দশনী অনুষ্ঠিত হয়।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমি সুস্থ নই। তারপর আমার মাঝে মাঝে মনে হয়, আমাদের সময় তো শেষ হয়ে আসছে। এখন যারা সামনে আসবেন। এই বাংলাদেশের শুধু রাজনীতি নয়, এই বাংলাদেশকে বাঁচাতে তাদেরকে কাজ করতে হবে। বাংলাদেশে অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব থাকবে কি থাকবে না, বাংলাদেশ নিজস্ব মর্যাদায় দাঁড়িয়ে থাকতে পারে কি পারবে না এবং বাংলাদেশ নিজের পায়ের ওপরে দাঁড়িয়ে থাকতে পারবে কি পারবে না- আজকে সেই প্রশ্ন এসে দাঁড়িয়েছে। কারণ অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশকে একটা অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করবার চেষ্টা করা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘তরুণ ও যুবকদের প্রতি আমার অনুরোধ, আপনারা বেগম জিয়া ও শহীদ জিয়ার যে আর্দশ, চিন্তা এবং রাজনীতির ধারা- তা ছড়িয়ে দেন। আমাদের তো বয়স হয়ে গেছে। এখানে যারা আছি, আমরা দীর্ঘকাল ধরে কাজ করছি। তাই আমাদের বয়স হয়েছে এবং আমরা বৃদ্ধ হয়েছি। আর এখন আপনাদের সময়। আপনারা এগুলো সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।’

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল আরো বলেন, ‘আমাদেরকে লড়তে এবং সংগ্রাম করতে হবে। হতাশ হলে চলবে না। আমাদেরকে প্রতিটি সুযোগ নিতে হবে। আমাদেরকে পথ বের করতে হবে। কিন্তু এটা সহজ কাজ নয়। কঠিন কাজ। কারণ বিভিন্নভাবে বিএনপি ও দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্ত সৃষ্টি করা হচ্ছে। তবে আপনারা বিভ্রান্ত হবেন না। কারণ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে দল পরিচালনায় করছেন। আর তার নির্দেশে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে সঠিক রাজনীতির দিকে নিয়ে যাবো।’

তিনি বলেন, ‘বেগম জিয়া যখন রাজনীতিতে আসেন তখন বাংলাদেশ একটা স্বৈরাচার শাসকের কবলে পড়েছিল। শুধু স্বৈরাচার শাসনই ছিল না, অত্যন্ত সুচারুভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব এবং দেশের গণতন্ত্র ধ্বংস করবার নতুন একটা প্রক্রিয়া ও প্রচেষ্টা ছিল। আমরা লক্ষ্য করেছি, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হত্যার পরে স্বৈরাচার এরশাদের রাজনীতিতে আগমন, এটা একই সূত্রে গাঁথা ছিল। সুতরাং এটাকে বিচ্ছিন্নভাবে দেখার উপায় নেই।’

বেগম খালেদা জিয়ার রাজনীতির প্রতি স্মৃতিচারণ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বিএনপিকে ধ্বংস করবার জন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্ত ছিল। সেই চক্রান্তকে ব্যর্থ করে দিয়ে সেই দলটিকে বেগম খালেদা জিয়া রাষ্ট্র পরিচালনায় দায়িত্ব নিয়ে এসেছিলেন। এটা তার জীবনে ও বাংলাদেশের ইতিহাসে একটা বড় অধ্যায়। আর আমার মনে হয়, এদেশে বেগম জিয়াকে বিভিন্নভাবে দেখানোর চেষ্টা করা হয়। তবে আমরা মতে, এশিয়ায় তার মতো গণতন্ত্রকামী ত্যাগী নেত্রী খুব কম খুঁজে পাওয়া যাবে।’

উদ্বোধনী বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. এমাজউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এই মুহূর্তে বাংলাদেশ থেকে গণতন্ত্র উঠে গেছে। গণতন্ত্র আর নেই। একদলীয় শাসন এখন একটা ব্যবস্থা হয়ে দাঁড়িয়েছে! এমনকি প্রধানমন্ত্রীর মুখে উচ্চারিত হয় বাকশালের কথা। উনি বলেন, বাকশাল হলে ক্ষতি কি!’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুর ইসলাম খান বলেন, ‘আজ বেগম জিয়া একটি মিথ্যা মামলায় ফরমায়েশী রায়ে কারাবন্দী রয়েছেন। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য- আমরা তাকে মুক্ত করতে কিছুই করতে পারেনি। তবে আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের সাহসী নেতারা মাঠে নামবেন এবং আমরা বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে পারবো।’

এরপর এমাজউদ্দিন আহমেদ সভায় উপস্থিত নেতাদের নিয়ে ‘ত্যাগ’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন।

প্রদর্শনীতে বেগম খালেদা জিয়ার রাজনীতি শুরু থেকে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে যাওয়া পর্যন্ত ৯০টি ছবি প্রদর্শন করা হয়।

এনআরসি’র পরিচালক বাবুল তালুকদারের সভাপতিত্বে ও ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক আবদুস সাত্তার পাটোয়ারীর সঞ্চালনায় সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স, সহসাংগঠনিক সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/কেএস/ওয়াইএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত