‘ঠকছে কৃষক-এতিম, জিতছে লুটেরা’
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৪ আগস্ট ২০১৯, ১৭:১৮
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ধান পুড়িয়ে অন্য দেশ থেকে আনা চাল খেতে হয়েছে, ঠিক তেমনি করেই চামড়াশিল্প ধ্বংস করে পানির দরে কেনা কাঁচা চামড়া প্রতিবেশী দেশে রপ্তানি করা হচ্ছে। আর এর মাধ্যমে ঠকছে কৃষক, ঠকছে এতিম-গরীব-মিসকিন। আর জিতছে লুটেরা, সিন্ডিকেট এবং তাদের সতির্থরা।
বুধবার ( ১৪ আগস্ট) রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘ঠকছে কৃষক, ঠকছে এতিম-গরীব-মিসকিন। জিতছে লুটেরা, জিতছে সিন্ডিকেট আর তাদের সতির্থরা। ক্ষতি হবে এই শিল্পের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত অনেক লোক। বেকার হয়ে পড়বে এর সঙ্গে জড়িত বিপুল সংখ্যক মানুষ। আমরা সরকারের এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের জোর দাবি জানাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘সাধারণ জনগণের কাছ থেকে কম টাকায় চামড়া কিনে এতিম মিসকিনদের পেটে ভয়াবহ নিষ্ঠুরতায় লাথি মারা হলো। অন্যদিকে এখন আবার কাঁচা চামড়া বিদেশে রপ্তানির সুযোগ দিয়ে বাংলাদেশের ট্যানারি শিল্পকেও ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়া হলো। সবই ছিলো পূর্ব পরিকল্পিত এবং সিন্ডিকেটের লুটপাটের জন্য মহাকারসাজি। এই চামড়াই আবার দেখা যাবে অন্য দেশ থেকে আমদানি করা হবে চড়ামূল্যে। কাঁচা চামড়া রপ্তানি হলে শতভাগ দেশীয় শিল্প অস্তিত্ব সংকটে পড়বে এবং এই শিল্পে হাজার হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ ঝুঁকির সম্মুখিন হবে।’
রিজভী আরও বলেন, ‘কোরবানির পশুর চামড়ার ন্যায্যমূল্য না পেয়ে যখন দেশের মানুষ ক্ষোভে দুঃখে চামড়া মাটিতে পুঁতে ফেললো ঠিক তখনি পানির দরে কেনা কাঁচা চামড়া রপ্তানির ঘোষণা দিলো অন্ধকারের সরকার। ঈদ উপলক্ষে সরকারি ছুটি চলছে। অফিস, আদালত সব বন্ধ। এই সময়ে হঠাৎ গতকাল রাতের অন্ধকারে কাঁচা চামড়া রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলো সরকার। গরীব, মিসকিন, এতিমদের হক মারার পর কার স্বার্থোদ্ধারে, কেন এই তড়িঘড়ি করে এই রপ্তানির ঘোষণা দেয়া হলো তা দেশের মানুষ জানতে চায়।’
তিনি বলেন, ‘দানের চামড়াগুলো দিয়েই মাদ্রাসা ও এতিমখানাগুলো চলে। তারা এবার বিপাকে পড়েছে। ধানের ন্যায্যমূল্য না পেয়ে কৃষকরা যখন ধানক্ষেতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিলো, ঠিক তখনই বিদেশ থেকে আমদানিকৃত ট্রাক বোঝাই চালের দৃশ্য দেখতে হয়েছিলো। কোরবানির পশুর চামড়ার ন্যায্যমূল্য না পেয়ে যখন দেশের মানুষ চামড়া মাটিতে পুঁতে দিলো ঠিক তখনই পানির দরে কেনা কাঁচা চামড়া রপ্তানির ঘোষণা দেয়া হলো। যেমন করে ধান পুড়িয়ে অন্য দেশ থেকে আনা চাল খেতে হয়েছে, ঠিক তেমনি করেই চামড়াশিল্প ধ্বংস করে পানির দরে কেনা কাঁচা চামড়া প্রতিবেশী দেশে রপ্তানি করতে হচ্ছে।’
বাংলাদেশ জার্নাল/কেএস/ওয়াইএ
