ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১০ মিনিট আগে
শিরোনাম

রোজাদার খেলোয়াড়দের ‘বিশেষ নির্দেশনা’ ইংলিশ ফুটবলে

  ক্রীড়া ডেস্ক

প্রকাশ : ২২ মার্চ ২০২৩, ২১:১১

রোজাদার খেলোয়াড়দের ‘বিশেষ নির্দেশনা’ ইংলিশ ফুটবলে
সংগৃহীত ছবি

ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন-এফএ কর্তৃপক্ষ রমজান মাস উপলক্ষ্যে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ এবং ইংলিশ ফুটবল লিগে খেলা চলাকালে খেলোয়াড়দের বিরতি দেয়াসহ রেফারিদের বেশকিছু বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছে। এর অর্থ হচ্ছে, এখন থেকে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের প্রত্যেক ম্যাচের সময় রোজা রাখা মুসলিম ফুটবলার এবং ম্যাচ কর্মকর্তাদের জন্য বিশেষ বিরতি দেবেন রেফারিরা।

এর আগে ফুটবলাররা নিজে থেকে বিরতি বা ইফতারের সময় খুঁজে নিতেন।

কিন্তু এবার রমজান শুরুর আগেই এফএ'র বিশেষ চার্টারে সবগুলো ক্লাব সম্মত হয়েছে। এর ফলে রোজা রাখবেন যেসব মুসলিম ফুটবলার ইফতারের সময় তাদের আনুষ্ঠানিকভাবে বিরতি দেয়া হবে।

এর আগে ২০২১ সালে 'মুসলিম অ্যাথলিট চার্টার' নামে একটি সনদে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মতি জানিয়েছিল কয়েকটি ক্লাব।

ওই চার্টারটি সকল মুসলিম অ্যাথলিটদের জন্য তৈরি করা হয়েছিল।

কিন্তু এবার এফএ'র নতুন নির্দেশনায় বিষয়টি এখন থেকে সব ফুটবল ম্যাচের জন্য প্রযোজ্য হবে।

মুসলিম ফুটবলারদের জন্য 'বিশেষ চার্টার'

রেফারিদের দেয়া নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ম্যাচ শুরুর আগেই কোন কোন ফুটবলার রোজা রেখেছেন তাদের সাথে কথা বলে নিতে। এরপর ম্যাচ চলাকালে একটা আনুমানিক সময় বাছাই করতে, যখন একটি বিরতি দেয়া হবে এবং ওই সময়ে তারা রোজা শেষে ইফতার করতে পারবেন।

রেফারিদের বলা হয়েছে, বিরতিতে রোজাদার ফুটবলাররা তরল, এনার্জি জেল কিংবা সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করতে পারবেন, যাতে রোজা রাখার পরেও শরীরে যথেষ্ট শক্তি থাকে এবং ধর্মীয় রীতিও পালন করতে পারেন একজন ফুটবলার।

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ফুটবলার ইসলাম ধর্মের অনুসারী।

লিভারপুলের মোহামেদ সালাহ, চেলসির এনগোলো কান্দে, ম্যানচেস্টার সিটির রিয়াদ মাহারেজরা রোজা রাখেন বলে জানা গেছে।

মাঠে এই ফুটবলারদের নানা ধরণের ধর্মীয় আচার পালন করতে দেখা যায়। বিশেষত খেলা শুরুর আগে দোয়া করা কিংবা গোল দেয়ার পর তা নিয়ে আনন্দ প্রকাশের সময়।

দুই হাজার একুশ সালে করা মুসলিম চার্টারে সব মিলিয়ে ১০টি পয়েন্ট ছিল, যার মধ্যে অ্যালকোহল পরিহার এমনকি কোনো উদযাপনের সময়েও, প্রার্থনার জন্য উপযোগী স্থানের ব্যবস্থা করা, হালাল খাবার এবং রমজান মাসে রোজা রাখার অনুমতি দেয়া।

মুসলিম ফুটবলাররা কী বলছেন

ইংল্যান্ডের ক্লাব পর্যায়ের দলগুলো এবং একাডেমিতে মোট ২৫৩ জন মুসলমান ফুটবলার আছেন। নুজুম স্পোর্টস নামে একটি অলাভজনক সামাজিক সংগঠন এই ফুটবলারদের অধিকার নিয়ে কাজ করে।

ইসলামে রমজান মাস পবিত্র মাস হিসেবে বিবেচিত এবং এই মাসে যারা রোজা রাখেন তাদের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতাকে বিবেচনায় রাখার পরামর্শ দিচ্ছে নুজুম স্পোর্টস। ইংলিশ ক্লাব এভারটনের মিডফিল্ডার আবদুলায়ে ডুকোওরে বিবিসি স্পোর্টকে বলেন, "আমি রমজান ভালোবাসি। কখনো কখনো রমজানে ফুটবল খেলা কঠিন, বিশেষত গ্রীষ্মকালে যখন রমজান মাস আসে।

কিন্তু আমি সবসময় রোজা রাখি এবং এটা আমার খেলায় কোনো প্রভাব ফেলেনি। ডুকোওরের মতো অনেক মুসলিম ফুটবলারের জন্য ধর্মীয় রীতিনীতি বড় প্রভাব রাখে তাদের জীবনে।

ডুকোওরে বলেন, ধর্ম আমার জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার, আমি সবসময় ধর্ম আগে রাখি, এরপর আমার কাজ। দুটো একসাথে যদি চলে আমি কোনও সমস্যা দেখি না।

তিনি নিয়মিত মসজিদে যান, বৃহত্তর ম্যানচেস্টারে তার পরিবার নিয়ে থাকেন, যারা সবাই খুব ধার্মিক।

ডুকোওরে ইংল্যান্ডকে ইউরোপের সেরা দেশ মনে করেন, কারণ তিনি এখানে নিজের ইচ্ছামতো ধর্মীয় আচার পালন করতে পারেন।

এভারটনে তিনজন মিডফিল্ডার খেলেন তিনজনই মুসলিম। ডুকোওরে বলেন তাদের মধ্যে খুব ভালো সম্পর্ক, তারা ড্রেসিংরুমে একসাথে প্রার্থনা করেন বা নামাজ পড়েন।

এতে ইদ্রিসা গুয়ে ইমামের দায়িত্ব পালন করেন। তারা একসাথে জুম্মার নামাজ পড়তে মসজিদে যান। সূত্র: বিবিসি

বাংলাদেশ জার্নাল/আরকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত