ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩৯ মিনিট আগে
শিরোনাম

ঘরে ঠাঁই নেই, বারান্দায় থাকেন শিক্ষক ছেলের মা

ঘরে ঠাঁই নেই, বারান্দায় থাকেন শিক্ষক ছেলের মা

ঘরে তালা ঝুলিয়ে বৃদ্ধা মা-কে বারান্দায় ফেলে বেড়াতে গেলেন ছেলে-বউ। চারদিন ধরে প্রায় অভুক্ত অবস্থায় দিন কাটছিল বৃদ্ধা রায়মণি ভট্টাচার্যের। ঘটনাটি জানাজানি হতেই চাঞ্চল্য ছড়ায় পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনার বারাকপুর এলাকায়।

টিটাগড় থানার অন্তর্গত বারাকপুর পুরসভার দু’নম্বর ওয়ার্ডের কালিয়ানিবাস খালপাড় এলাকায় ওই বৃদ্ধার বাড়ি। তার তিন ছেলে। ৬৮ বছর বয়সী রায়মণিদেবী থাকেন ছোটছেলের সঙ্গে। ছেলে রতন ভট্টাচার্য ও তার স্ত্রী স্বাতী ভট্টাচার্য স্থানীয় একটি বেসরকারি স্কুলে শিক্ষকতা করেন।

গত বৃহস্পতিবার (১৩ আগস্ট) ছেলে আর তার বউ ঘরে তালা মেরে মাকে খোলা বারান্দায় একা ফেলে আসামে বেড়াতে যান। চারদিন ধরে সেই বারান্দাতেই থাকছিলেন রায়মণিদেবী। সঙ্গে কিছু মুড়ি আর এক বোতল জল। এ দিয়েই কোনোরকমে গলা ভিজিয়ে তিনদিন কাটিয়ে দেন তিনি।

শনিবার প্রতিবেশী এক গৃহবধূর চোখে পড়েন ওই বৃদ্ধা। বৃদ্ধাকে দেখতে পেয়ে পাঁচিলের দরজা খুলে ভিতরে আসেন ওই গৃহবধূ। জানতে চান, তিনি বারান্দায় একা একা কী করছেন। দুঃখে অপমানে কেঁদে ফেলেন ওই বৃদ্ধা। তিনি তখন সব ঘটনা খুলে বলেন। ওই গৃহবধূ তখন অন্যান্য বাসিন্দাদের ডেকে আনেন। তারা দ্রুত ক্ষুধার্ত রায়মণিদেবীর জন্য খাবারের ব্যবস্থা করেন।

খবর পৌঁছে যায় ছেলের স্কুলেও। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন অন্যান্য শিক্ষকরা। তারাই রায়মণিদেবীকে স্থানীয় কাউন্সিলরের কাছে নিয়ে যান। সেখানে ছেলে-বউমার অত্যাচারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানান ওই বৃদ্ধা। এরপর অভিযোগ দায়ের হয় টিটাগড় থানাতেও।

এ ঘটনায় বৃদ্ধার ছেলে রতনবাবুকে ফোন করেন প্রধান শিক্ষক নিজে। ফোন পেয়ে খুব বিরক্ত ছেলে। বলেন, ‘তার তো আরও দুই ছেলে রয়েছে, তাদের কাছেও তো যেতে পারত।’

প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, বৃদ্ধার আরও দুই ছেলে রয়েছে। তারা ইছাপুরে থাকে।

বর্তমানে এক প্রতিবেশীর বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন নিরূপায় রায়মণিদেবী।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘ছেলে-বউমার সংসারে নানা অপমান আর অসম্মানে দিন কাটে তার। উঠতে বসতে কথা শোনায় বউ। পান থেকে চুন খসলেই অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেন বৃদ্ধা শাশুড়িকে। ছেলে কিছুই বলে না। আমি যে কীভাবে বেঁচে আছি তা শুধু ভগবানই জানেন!’

এখন এই ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর ছেলে রতন যে আর মাকে ঘরে তুলবে না তা একপ্রকার নিশ্চিত। এখন কোথায় যাবেন বৃদ্ধা রায়মণিদেবী? কে আশ্রয় দিবে এই অসহায় মাকে? এর উত্তর অবশ্য জানা যায়নি।

সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত