ঢাকা, রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

পূর্বাচলে গরু লুটের হিড়িক

  রূপগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৩ জানুয়ারি ২০২০, ১২:৪০

পূর্বাচলে গরু লুটের হিড়িক
প্রতীকী ছবি

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার পূর্বাচল উপশহরসহ আশপাশের এলাকায় গরু চুরির হিড়িক পড়েছে। ধারালো অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মুখোশ পরে চোরের দল বসতবাড়িতে হানা দিয়ে লুট করে নিয়ে যাচ্ছে কৃষকের গরু। প্রায় প্রতিদিনই চোর-ডাকাতের দল হানা দিচ্ছে গ্রামগুলোতে। বর্তমানে গ্রামগুলোতে আতঙ্ক বিরাজ করছে। স্থানীয় কৃষকরা কাটাচ্ছেন নির্ঘুম রাত। গরুসহ যানমাল রক্ষায় তারা রাতভর পাহারা দিচ্ছেন তারা।

স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়, উপজেলার দাউদপুর ও রূপগঞ্জ ইউনিয়ন কৃষিনির্ভর ছিলো। এখানে পূর্বাচল উপশহর গড়ে ওঠার পর থেকে নিজের বা অন্যের প্লটে ঘর নির্মাণ করে স্থানীয় অনেকেই বসবাস করে আসছেন। আর বেশিরভাগ কৃষক গরু পালন করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন।

বিশেষ করে ২নং সেক্টরের সিটি মার্কেট, সুলফিনা, আলমপুর, হারারবাড়ি, পর্শি, পাঁচবাগ দড়িগুতিয়াবো বাজার, গোপিন্দপুর, কামতা, গোয়ালপাড়া, ধামছি, গুচ্ছগ্রাম, কালনি, ফেরচাইত, জিন্দাসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে এখন গরু লুট আতঙ্কে কৃষকরা নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন।

গত এক মাসে বাগবেড় সিটি মার্কেট এলাকার মোতালিব মিয়ার দুটি গরু, রহিম মিয়ার দুটি, আলমপুর এলাকার মোমেন দেওয়ানের ৩টি, ধামছি এলাকার গাফফার মিয়ার ৭টি, কুমারটেক এলাকার মোহাম্মদ আলীর বাড়ি থেকে ৬টি, গোয়ালপাড়া এলাকার ফাইজ উদ্দিনের দুটি, সেরাজ উদ্দিনের দুটি, ৯নং সেক্টরের ফেরচাইত এলাকার আওলাদ হোসেনের দুটি, সুলফিনা এলাকার জাইদুল মিয়ার ৩টি, আলম মিয়ার একটি গরু, রত্না আক্তারের ৩টি গরুসহ আরও কয়েক কৃষকের গরু লুট করে নিয়ে গেছে ডাকাত দল।

গরু লুট করে নিয়ে যাওয়ার কারণে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। তারা বিভিন্ন এনজিও ও সমিতি থেকে ঋণ নিয়ে গরু পালন করছিলেন।

কৃষকরা অভিযোগ করেন, পূর্বাচল উপশহরের ভেতরে থাকা এলাকাগুলোয় যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেকটা ভালো। সড়ক প্রশস্ত হওয়ায় ডাকাতদল সহজেই গাড়ি নিয়ে এসে ডাকাতি করে চলে যেতে পারে। থানা পুলিশের পক্ষ থেকে তেমন কোনো টহল ব্যবস্থা না থাকায় গরু লুটের ঘটনা ঘন ঘন ঘটছে।

ইতোপূর্বে গরু লুট চক্রের সক্রিয় সদস্য রানা ভূঁইয়ার বিচার করে এলাকাবাসী চুরির অভিযোগে তাকে জেলহাজতে পাঠায়। গোয়ালপাড়া এলাকার জাকির হোসেন ওরফে জামাই জাকিরসহ বেশ ক'জনকে গরু লুটের ঘটনায় আটক করে পুলিশে সোপর্দ করলেও গরু লুট বন্ধ করা যাচ্ছে না। এলাকায় চিহ্নিত জুয়াড়ি, মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক সেবনকারীদের সহযোগিতায় এসব কর্মকাণ্ড হচ্ছে বলে জানিয়েছে এলাকাবাসী।

ফেরচাইত এলাকার আওলাদ হোসেন বলেন, ট্রাক বা পিকআপে করে অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ডাকাতদল গ্রামগুলোয় ঢুকে হানা দিচ্ছে। পূর্বাচলে অল্পসংখ্যক বাড়িঘর হওয়ায় কৃষকরা ভয়ে বাধা দিতে সাহস পান না। অস্ত্রের ভয় দেখালে কৃষকরা নিজের পালিত গরু দিয়ে দিতে বাধ্য হন।

রূপগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জসিম উদ্দিন বলেন, গরু চুরি বা লুটের অভিযোগ কেউ করেনি। পূর্বাচল উপশহরের এলাকাগুলোতে ফাঁকা ফাঁকা ঘরবাড়ি রয়েছে। পুলিশি টহল ব্যবস্থা রয়েছে সেখানে। টহল ব্যবস্থা আরও বাড়ানো হবে। তবে চুরি, ডাকাতি ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড রোধে পুলিশকে এলাকাবাসীর সহযোগিতা করতে হবে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত