ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

সিলেটের জোড়া খুনের রহস্য উদঘাটন

  সিলেট প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৫ জানুয়ারি ২০২০, ২২:১৫

সিলেটের জোড়া খুনের রহস্য উদঘাটন

নিজের চাকরি হারানোয় ট্রাকের নতুন চালক জাহাঙ্গীর ও তার বন্ধু রাজুকে হত্যা করা করে চালক ইব্রাহিম (২৩) ও তার সহকারী ফজর মিয়া (২৪)। হত্যার পর পরিকল্পিতভাবে তাদের মরদেহ একটি ট্রাকে করে সিলেট সিটি করপোরেশনের ময়লার ভাগাড় সংলগ্ন সড়কের পাশে রেখে যাওয়া হয়।

ঘটনাটি যাতে দুর্ঘটনা মনে করা হয়, এজন্য ট্রাক রাস্তার পাশে রেখে খুলে নেয়া হয় ছয়টি চাকা। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাবাদে হত্যাকাণ্ডের এমন তথ্য দেন আটকরা।

শনিবার ভোরে সিলেট সদর উপজেলার ধোপাগুল থেকে ইব্রাহিমকে আটক করে মোগলাবাজার থানা পুলিশ। তার দেয়া তথ্যমতে আম্বরখানা থেকে আটক করা হয় তার সহযোগী ফজর আলীকে।

আটক মো. ইব্রাহিম তালুকদার সিলেট সদর উপজেলার ধোপাগুল এলাকার ফউজদার তালুকদারের ছেলে এবং ফজর মিয়া বিশ্বনাথের শ্বাসরাম এলাকার রুস্তুম আলীর ছেলে।

তাদের দেয়া বর্ণনা মতে, পুলিশ ফজরের শ্বশুরবাড়ি থেকে নিহতদের লুন্ঠিত মোবাইল সেট ও ট্রাকের টায়ার বিক্রির পাঁচ হাজার টাকা জব্দ করে এবং গাড়ির টায়ার হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার জগদীশ পুরের জয়নাল মিয়ার দোকান থেকে জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় টায়ার ক্রেতা ওই উপজেলার বেড়জুড়া গ্রামের আব্দুল কাদিরের ছেলে জয়নাল মিয়াকেও (২৩) আটক করা হয়।

পুলিশ জানায়, ট্রাকটির মালিক চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার আইলদীপুরের আতাউর রহমান। ইব্রাহিম ট্রাকচালক ও ফজর হেলপার ছিলেন। গত ২১ জানুয়ারি ট্রাকটি ঢাকায় নিয়ে গেলে ইব্রাহিমকে বাদ দিয়ে নতুন চালক হিসেবে জাহাঙ্গীরকে নিযুক্ত করেন গাড়ির মালিক। জাহাঙ্গীরের বন্ধু ছিলেন রাজু। তিনি পেশায় কম্পিউটার অপারেটর ছিলেন। পরদিন ২৩ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৭টায় গাজীপুর থেকে ট্রাকে রিকশার যন্ত্রাংশ নিয়ে সিলেটে আসার সময় সাবেক চালক ও রাজুও নতুন চালকের সঙ্গী হন। পথে হবিগঞ্জের মাধবপুর আসার পর জাহাঙ্গীর ও রাজুকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করা হয়।

আটকদের বরাত দিয়ে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার মো. জেদান আল মুসা বলেন, হত্যার আগে তারা চাকু দিয়ে ভয় দেখিয়ে নিহতদের কাবু করে ফেলে। আর নিহত চালক জাহাঙ্গীরের বন্ধু রাজুও কিছুটা প্রতিবন্ধী টাইপের ছিলো। জাহাঙ্গীর গাড়ি নিয়ে সিলেটের উদ্দেশ্যে আসায় বেড়ানোর জন্য বন্ধুর সঙ্গী হয়ে প্রাণ হারায় রাজুও। এরপর গাড়ি চালায় ইব্রাহিম। গাড়িটি মাধরপুরের জগদীশ পুর ও আউশকান্দি, সর্বশেষ সিলেটের দক্ষিণ সুরমার চণ্ডিপুলে এনে থামায় তারা। এরপর পরিকল্পনা করে মরদেহ দু’টি চালক ও হেলপারের সিটে বসিয়ে সিলেট-ফেঞ্চুগঞ্জ সড়কের পারাইরচকে রেখে যায়।

ঘটনাটি স্রেফ দুর্ঘটনা সাজাতে ট্রাকটি রাস্তার পাশে রেখে খুলে নেয়া হয় ছয়টি চাকা। এরপর জগদীশপুর জয়নালের দোকানে নিয়ে চাকাগুলো বিক্রি করা হয়।

এদিকে এ ঘটনায় নিহত রাজুর ভাই সুজন বাদী হয়ে আটক তিনজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলা দায়েরের বিষয়টিও নিশ্চিত করেছেন তিনি।

এর আগে শুক্রবার সিলেট-ফেঞ্চুগঞ্জে সড়কে সিটি কর্পোরেশনের ময়লার ভাগাড় লালমাটিয়া এলাকায় একটি ট্রাকের (ঢাকা মেট্রো-ট-১৮-৪০৩০) চালক ও হেলপারের আসনে রাখা অবস্থায় জাহাঙ্গীর ও রাজুর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতরা হলেন- চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা বাগদী গ্রামের মো. কাদেরের ছেলে জাহাঙ্গীর মিয়া (২৫) ও দীন মোহাম্মদের ছেলে রাজু আহমদ (২৫)।

বাংলাদেশ জার্নাল/আরকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত