ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৪০ মিনিট আগে
শিরোনাম

মাদক উদ্ধারের ‘ক্রেডিট নিতে’ র‌্যাব-পুলিশের মারামারি

  নড়াইল প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০৫ এপ্রিল ২০২০, ১৯:৩৭

মাদক উদ্ধারের ‘ক্রেডিট নিতে’ র‌্যাব-পুলিশের মারামারি
প্রতীকী ছবি

নড়াইল মাদক উদ্ধার ও মাদক ব্যবসায়ী ধরতে গিয়ে গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশ সদস্যের সঙ্গে র‌্যাব সদস্যের মারামারির ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ সুপার জানান, ক্রেডিট নিতে গিয়ে মারামারির সূত্রপাত হয়। এ ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের তদন্তকমিটি গঠন করা হয়েছে।

শনিবার দুপুরের দিকে উপজেলার লক্ষীপুর গ্রামে ডিবি পুলিশ সদস্যের সঙ্গে র‌্যাব সদস্যের মারামারি হয়। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের দু'জন আহত হন। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কালিয়া উপজেলার পুরুলিয়া ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামের হারুন কাজির পুকুরপাড়ে ইয়াবা বেচাকেনা হচ্ছে- এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্রেতা সেজে গত শনিবার দুপুরের দিকে খুলনা র‌্যাব-৬ এর স্পেশাল কোম্পানির ওয়ারেন্ট অফিসার ডিএডি হাবিবুর রহমান ফোর্স নিয়ে ঘটনা স্থলে পৌঁছায়। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন নড়াইল জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশের উপ-পরিদর্শক সৈয়দ জমারত আলীর নেতৃত্বে ডিবি পুলিশের একটি দল।

এ সময় মাদক উদ্ধারকে কেন্দ্র করে উভয়পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে তারা মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন। একে অপরকে কিল-ঘুষি মারেন। রাস্তার মধ্যেই হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন র‌্যাব-ডিবি পুলিশ সদস্যরা। একে অপরকে হেলমেট দিয়ে মারতে থাকেন বলে প্রত্যক্ষদর্শিরা জানায়।

দুই পক্ষ যখন মারামারিতে লিপ্ত, তখন ঘটনাটি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখেছেন স্থানীয় লোকজন ও পথচারীরা। এতে দুজন সদস্য আহত হন। ঘটনা শুনে র‌্যাব ও ডিবি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে রাত আটটা পর্যন্ত দফায় দফায় বৈঠক করে উভয় পক্ষের দ্বন্দের অবসান ঘটান।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী লক্ষীপুর গ্রামের বাসিন্দা বিল্লাল কাজী বলেন, হঠাৎ চেচামেচির শব্দ শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি সাদা পোষাকধারি ডিবি ও র‌্যাবের সদস্যরা মারামারি করছে। ডিবির ৪ জনসহ মোট ৮/৯ জন সদস্য মারামারিতে অংশ নেয়। আমাদের কাউকে তাদের নিকট যেতে দেয়নি। তবে আমরা দূর হতে দেখি উভয়পক্ষ হেলমেট দিয়ে মারামারি করছে। এতে দুইজন সদস্য আহত হন।

সকাল ১১টা থেকে বিকাল পর্যন্ত তারা ঘটনাস্থলে অবস্থান করার পর এএসপি সার্কেল ও র‌্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসে তাদের নিয়ে যায়। এরপর রাত আনুমানিক ৮টার দিকে খুলনার ডিআইজি অফিসের এএসপি জালাল উদ্দিন ঘটনাস্থলে এসে আমিসহ লক্ষীপুর গ্রামের বাসিন্দা জিয়া কাজী, ইকবাল, তনু কাজীর স্ত্রী, রঘুনাথপুর গ্রামের আলমিরের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।

এ ঘটনায় নড়াইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলামকে (পুলিশ সুপারের পদন্নতিপ্রাপ্ত) প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- এএসপি সার্কেল রিপন চন্দ্র সরকার ও ডিআইও ওয়ান ইকবাল।

এএসপি সার্কেল রিপন চন্দ্র সরকার বলেন, মাদক উদ্ধারকে কেন্দ্র করে উভয়পক্ষের নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এ ঘটনায় রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে কালিয়া থানায় মাদক আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় লক্ষীপুর গ্রামের মৃত. জব্বার মোল্যার ছেলে কোবাদ মোল্যাসহ (৪২) অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে ১১০ পিস ইয়াবা ও দুই পিস বাঁশের লাঠি উদ্ধার করা হয়েছে।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, উভয় পক্ষ সিভিলে থেকে মাদক উদ্ধার করতে যায়। ক্রেডিট নিতে গিয়ে ভুল বোঝাবুঝির সূত্রপাত্র হয়। এ ধরনের ঘটনা অনাকাঙ্খিত।

তিনি বলেন, এ ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলামকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ডিআইজি অফিসের এএসপি জালাল উদ্দিন ও কালিয়া উপজেলার সার্কেল এএসপি রিপন চন্দ্র সরকার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। উভয় পক্ষের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা থেকে বিষয়টি সুরাহা করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত