ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

নানা ‘তালবাহানায়’ চলছে লকডাউন উপেক্ষা

  আহমেদ ইসমাম

প্রকাশ : ১০ এপ্রিল ২০২০, ১৮:৪৬

নানা ‘তালবাহানায়’ চলছে লকডাউন উপেক্ষা

সারা দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলছে। এই ভাইরাসের প্রভাব ঠেকাতে সরকার নিয়েছে নানামুখী উদ্যোগ। বিশেষ করে সামাজিক দূরত্ব ও এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় না যাওয়ার বিষয়টি বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। তবে সরকারের কঠোর নির্দেশ অমান্য করে লকডাউন উপেক্ষা করছে অনেকেই। যার ফলে ঠোকানো যাচ্ছে না এই রোগের বিস্তার।

রাজধানীর একাধিক এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, লকডাউনের বিষয়টি মানছে না সাধারণ মানুষ। এই নির্দেশ উপেক্ষা করে বাজার ও মুদির দোকানগুলোতে চলছে জনসমাগম। চকবাজার থানার পাশেই ফলের দোকান খুলে বসে আছে এক ফল বিক্রেতা। এই দোকার থেকেই ফল কিনতে এসেছেন এক ক্রেতা। তার কাছে জানতে চাওয়া হয় এই লকডাউন উপেক্ষা করে কেন ফল কিনতে এসেছেন?

ক্রেতা জানায়, প্রতি সপ্তাহে জুমার নামাজ পরে ফল কিনা তার পুরোনা অভ্যাস। আজ মসজিদ বন্ধ থাকায় বাসায় নামাজ পরে ফল কিনতে বের হয়েছেন। এখনি চলে যাব বলে জানান তিনি।

এর বাহিরেও পুরান ঢাকায় অলিতে গলিতে মুদির দোকান খোলা থাকতে দেখা গেছে। বেশ কয়েকটি গলি নিজ উদ্যোগে বন্ধ করে দেওয়া হলেও তা সঠিকভাবে কার্যকর করা যাচ্ছে না। নানা প্রয়োজনের কথা বলে বের হয়ে যাচ্ছে মানুষ।

হাতিরপুল বাজার এলাকায় দেখা যায়, লোকজন দেদারসে বাজার-ঘাট করায় ব্যস্ত আছে ক্রেতারা। কেউ শারীরিক বা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে পারছে না। সেদিকে কারো খেয়াল নেই, সবাই ব্যস্ত বাজারের দরদাম নিয়ে। কাওরান বাজারেও একই চিত্র দেখা গেছে। সেখানেও ট্রাক থেকে নামানো হচ্ছে সারা দেশ থেকে আনা বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী। পাইকারি দরে কেনার জন্য অপেক্ষা করছে পাইকাররাও। এ সকল পণ্য রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে ব্যাটারি চালিত রিকসা ও ভ্যান।

সড়কে ব্যক্তিগত গাড়ির পাশাপাশি সিএনজিও চলাচল করতে দেখা গেছে। বিশেষ করে, সড়কগুলো দখলে ছিল ব্যাটারি চালিত রিকসার। ফাঁকা রাস্তা পেয়ে শহরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে বেড়াচ্ছে রিকসাগুলো। যার ফলে ঘটছে দুর্ঘটনাও। যাত্রী নিয়ে মাঝ রাস্তায় উল্টে যাওয়ার মত ঘটনাও ঘটছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এই ফাঁকা রাস্তায় ঘুরে বেড়ানোর হাতিয়ার হিসেবে অনেকেই ত্রাণ নিয়ে বেড়িয়ে পরছেন। ত্রাণ দেওয়ার নাম করে অলিতে গলিতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন অনেকেই। পুলিশও তাদেরকে ধরে নিজ নিজ এলাকায় চলে যেতে বলছেন। কিছু রোমাঞ্চ প্রিয় যুবকরা ত্রাণ দেওয়ার নাম করে বের হয়ে যেতে চাইছেন রাজধানীর বাহিরে। পুলিশও তাদের এই নতুন নতুন ফন্দি উপেক্ষা করে ফেরত পাঠাচ্ছেন নিজ নিজ বাড়িতে।

এমনি একদল যুবক একটি লাল পাজারো গাড়িতে ত্রাণ দেওয়ার নাম করে সাভারে যেতে চায়। কিন্তু গাবতলিতে চেকপোস্টে দায়িত্বে থাকা ট্রাফিক সার্জেন্ট মাসুদ থামিয়ে রাজধানীর বাহিরে যাওয়ার কারণ জানতে চান। প্রথমে সঠিক কারণ জানাতে না পারলেও পরে বলেন আমরা ত্রাণ দিতে সাভারে যাচ্ছি। পরে এই সার্জেন্ট বলেন, সাভারে ত্রাণ দেওয়ার মত অনেক মানুষ আছে আপনারা দয়া করে বাসায় ফিরে যান না হলে আমি আইন প্রয়োগ করতে বাধ্য হব। পরে এই গাড়িতে থাকা যুবকরা সরকারী উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তার পরিচয় দিলেও তাদের ফেরত পাঠানো হয়।

ট্রাফিক সার্জেন্ট মাসুদ বলেন, আমার শুধুমাত্র জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কোনো গাড়ি বের হতে দিচ্ছি না। ব্যক্তিগত গাড়ি কোনোভাবেই বের হতে দিচ্ছি না।

বাংলাদেশ জার্নাল/এনএইচ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত