ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ মিনিট আগে
শিরোনাম

মুখেই সামাজিক দূরত্ব

  কিরণ শেখ

প্রকাশ : ০৩ জুলাই ২০২০, ২১:১৯  
আপডেট :
 ০৩ জুলাই ২০২০, ২১:২২

মুখেই সামাজিক দূরত্ব

বিশ্বজুড়ে মহামারীর রূপ নেওয়া করোনাভাইরাসে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ৩ হাজার ১১৪ জন। এ সময়ের মধ্যে মারা গেছে ৪২ জন। এরপরও রাজধানীর রাজপথে যত্রতত্র মানুষ ও বাস চলছে। এছাড়া শহরের অলিতে গলিতে তরুণদের আড্ডা তো আছেই। ফলশ্রুতিতে করোনার বিস্তাররোধে সামাজিক দূরত্ব আদতে ভেঙে পড়েছে। ‌‘সবাই সামাজিক দূরত্ব মেনে চলাচল করবো’- কথাটি এখন মুখেই সীমাবদ্ধ। বাস্তবে এর প্রতিফলন লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।

সরকার এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাফেরার করার নির্দেশনা দেয়া হলেও শুক্রবার ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় দেখে গেছে ভিন্ন চিত্র।সেখানে সামাজিক দূরত্ব বজায়ের কোনো নির্দেশনা মানা হচ্ছে না। একই চিত্র দেখা গেছে নগরীর বাজারগুলোতে। সেখানেও শত মানুষ জটলা বেঁধে মাছ-সবজি কিনছে। সামাজিক দূরত্ব তো দূরের কথা বরং বাজারগুলোতে ক্রেতা-বিক্রেতাদের উপস্থিতিতে জমজমাট চারপাশ।

সরেজমিনে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত দেখা গেছে, কারওয়ান বাজারে প্রতিটি দোকান ঘিরে মানুষের ভিড়। কোথাও কম, কোথাও বেশি ক্রেতা।

করোনা নিয়ে উদ্বেগের কারণে সরকারি সিদ্ধান্তে সবাইকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কথা। কিন্তু এই বাজারে তার কোনো বালাই নেই। একে অপরের সঙ্গে শরীর ঘেঁষে দাঁড়িয়ে কেনাকাটা করছিলেন ক্রেতারা। কোনো কোনো ক্রেতাকে অবশ্য নির্দিষ্ট দূরত্ব মেনে কেনাকাটা করতে দেখা যায়।

এদিকে করোনাভাইরাস সংক্রমণের সময় দেশে গত ৩১ মে থেকে সীমিত পরিসরে সবকিছু খুলে দেয়া হয়েছে। কিন্তু সীমিত পরিসরে সবকিছু খুলে দেয়া পর থেকেই রাস্তায় যানবাহনের ভিড়ে তীব্র যানজট হচ্ছে। ফুটপাতেও দূরত্ব বজায় রেখে চলাফেরার কোন সুযোগ নেই। তাই না চাইলেও মানুষের সঙ্গে মানুষের ধাক্কা খেতে হয়। ফলে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব হচ্ছে না।

বাজারে মাস্ক না পড়ে আসা হিমেল নামে এক ক্রেতার সঙ্গে কথা হয় বাংলাদেশ জার্নালের। তিনি বলেন, মাস্ক পড়লে নিশ্বাস নিতে সমস্যা হয়। তাই পরি না। আর কিছু সময়ের জন্য বাজারে এসেছি। কিছু তরকারি নিয়েই বাসায় চলে যাবো। এছাড়া বেশী দরকার ছাড়া বাসা থেকে বের হই না।

অন্যদিকে রাজধানীর মার্কেটগুলোর ভেতরে বা ট্রাফিক সিগন্যালের কিছু কিছু জায়গায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য রেকর্ড করা অডিও বাজানো হচ্ছে। কিন্তু কাঁচা বাজার বা মাছের বাজার এমন সব জায়গায় প্রচারণা চোখে পড়ছে না। আবার অনেক মার্কেটগুলোর ভেতরে বা ট্রাফিক সিগন্যালেও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য প্রচারণা করতে দেখা যায়নি।

এবিষয়ে জানতে চাইলে ফার্মগেটে বাসের অপেক্ষায় থাকা সোহেল রানা বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, মার্কেটগুলোতে কিংবা ট্রাফিক সিগন্যাল সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার প্রচারণা করলেও বেশী ফল পাওয়া যাবে না। কারণ এর জন্য আগে আমাকে সচেতন হতে হবে। আমি যদি সচেতন হই তাহলে অবশ্যই সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা সম্ভব হবে।

ফার্মগেটের ওভারব্রিজের নিচে এক পোশাক বিক্রেতা সুলতান বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, করোনাকে ভয় করে কি করবো ভাই? দোকান না খুললে তো না খেয়ে মারা যাবো। তাই আর বসে থাকা সম্ভব না। আর কেউ যদি এখন দোকান তুলে দেয় তাহলে ভিক্ষা করা ছাড়া কোনো পথ নেই।

প্রসঙ্গত, গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্তের ঘোষণা আসে। আর ১৮ মার্চ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এ পর্যন্ত দেশে ১ লাখ ৫৬ হাজার ৩৯১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে এবং মারা গেছেন ১ হাজার ৯৬৮ জন।

কেএস/এনএইচ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত