ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

বর্ষায় কদর বেড়েছে ছাতা কারিগরদের

  সুলতান মাহমুদ, দিনাজপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০৬ জুলাই ২০২০, ১৬:৪০

বর্ষায় কদর বেড়েছে ছাতা কারিগরদের

এখন বর্ষাকাল। বছরের অন্য সময়ের তুলনায় বর্ষার সময় ছাতার ব্যবহার অনেকটাই বেড়ে যায়। তাই এ সময়ে ছাতার কারিগরদের কর্মব্যস্ততাও বাড়ে।

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীর ছাতার কারিগররাও এর ব্যতিক্রম নয়। বৃষ্টি হলেই বেড়ে যায় তাদের কদর, বেড়ে যায় ব্যস্ততা। তাই ক্রুটিযুক্ত ছাতা মেরামত করতে ভাসমান কারিগরদের কাছে ভিড় জমায় লোকজন।

বর্ষার কারণে ফুলবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বসেছে ভ্রাম্যমাণ ছাতা কারিগর। ত্রুটিযুক্ত ছাতা মেরামত করতে ওই কারিগরদের কাছে ভিড় করছে বিভিন্ন এলাকার মানুষ। তাই বর্তমানে মৌসুমি ছাতার কারিগরদের কদর বেড়েছে। বর্তমানে করোনার প্রাদুর্ভাবের সময় অন্য ব্যবসায়ীরা অলস সময় পার করলেও ব্যস্ত সময় পার করছে ছাতা কারিগররা।

বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, অন্য সময়ের তুলনায় ছাতা কারিগরদের ব্যস্ততা চোখে পড়ার মতো। তারা নাওয়া-খাওয়া ভুলে রাত দিন কাজ করে যাচ্ছেন। কারিগররা শহরের বিভিন্ন এলাকায় বাক্স নিয়ে রাস্তার পাশে, কেউ অন্যের বারান্দায় বসে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি নিয়ে দিনভর হরেকরকমের ভাঙা ছাতা মেরামত করছে। আর কাজ বুঝে প্রতিটি ছাতা মেরামতের টাকা নিচ্ছে তারা। বৃষ্টির প্রভাব বেড়ে যাওয়ার সাথে সাথে কাজের চাপও বেড়ে যায় তাদের। আর বৃষ্টির হাত থেকে স্বস্তি পেতে বর্ষার অকৃত্রিম বন্ধু ছাতাকে মেরামত করতে যেন ভুলছে না কেউ।

ছাতা কারিগর রাজারামপুর ঘাট পাড়া গ্রামের শহিদুল ইসলাম জানান, তার বাবা ছহির উদ্দিন আগে এ পেশায় ছিলেন। বাবার হাত ধরেই তিনি প্রায় ১৫ বছর ধরে এ পেশার সঙ্গে জড়িত। বছরের ছয় মাস তিনি এ পেশায় থাকেন আর বাকি মাসগুলো অন্য পেশায় জীবিকা নির্বাহ করেন। তিনি দৈনিক ১০ থেকে ১৫টি ছাতা মেরামত করে থাকেন। দৈনিক ৪শ' থেকে ৫শ' টাকা আয় করেন তিনি। এবার করোনার কারণে কাজ একটু কম বলে জানান শহিদুল।

আরেক ছাতা কারিগর ফারুক হোসেন বলেন, আমি এ পেশায় ২০-২৫ বছর ধরে আছি। বছরের এ সময়ে আয় বেশি হতো। কিন্তু এখন করোনার কারণে মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে না। তাই এবার রোজগার কিছুটা কম হচ্ছে। বছরে ছয় মাস আমি এ পেশায় থাকি, বাকি ছয় মাস ত্রুটিযুক্ত তালা মেরামত করে সংসার চালাই।

কথা হয় ছাতা মেরামত করতে আসা বকুলের সাথে। তিনি বলেন, তার একটি ছাতা বাড়িতে পড়ে ছিলো তাই মেরামত করতে এসেছেন। নতুন ছাতা কেনার চেয়ে অল্প টাকায় পুরোনোটাই মেরামত করা ভালো, এতে কিছুটা সাশ্রয় হবে।

ছাতা মেরামত করতে আসা কাঁটাবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা বুলবুল বলেন, একটি ভালো ছাতা ক্রয় করতে ২৫০-৫০০ টাকা প্রয়োজন। এর চেয়ে পুরোনো ছাতাটি মেরামত করে নিলেই চলে। এখনকার যে ছাতা, সবেমাত্র ১ মাস হল ছাতাটা কিনেছি, এখনই মেরামত করতে আসা লাগলো।

পৌর শহরের ননিগোপাল মোড়ের ছাতা কারিগর ইউসুফের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, বছরের অন্য মৌসুমে তেমন কোন কাজ থাকে না। শুধুমাত্র বর্ষার অপেক্ষায় থাকি। বর্ষা এলেই বাড়ি থেকে যন্ত্রপাতি নিয়ে বেড়িয়ে পড়ি ছাতা মেরামতের জন্য। বর্ষা এলেই আমাদের আয়ও বহুগুণে বেড়ে যায়।

ফুলবাড়ী পৌর মেয়র গোলাম মুর্তজা সরকার মানিক বলেন, এখন বর্ষা মৌসুম শুরু হয়েছে। কাজের প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হতেই হয়। তাই এখন একমাত্র সঙ্গী হিসাবে ছাতা নিয়ে বের হতে হচ্ছে। এলাকার মানুষ তুলনামূলকভাবে দরিদ্র, তাই গত বছরের ছাতা অনেকের ঘরেই রয়েছে। একটু মেরামত করেই এক বছর ব্যবহার করতে পারে। তাই ছাতা কারিগরের নিকট গিয়ে মেরামত করছে সবাই।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত