ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

পিনাক-৬ ট্র্যাজেডি: স্বজনহারাদের কান্না আজো থামেনি

  সুশান্ত সাহা

প্রকাশ : ০৪ আগস্ট ২০২০, ২২:১৬  
আপডেট :
 ০৪ আগস্ট ২০২০, ২২:১৮

পিনাক-৬ ট্র্যাজেডি:  স্বজনহারাদের কান্না আজো থামেনি

পদ্মায় পিনাক-৬ লঞ্চ ডুবিতে শতাধিক যাত্রীর প্রাণহানির ৬ বছর পূর্ণ হলেও স্বজনহারা পরিবারগুলোর এখনোও কান্না থামেনি। শিবচর উপজেলার বন্দরখোলা গ্রামের বৃদ্ধা রিজিয়া বেগমের এক ছেলে মিজানুর রহমান, পুত্রবধূ রোকসানা বেগম, আড়াই বছর বয়সের নাতি মাহিন এবং এগারো বছর বয়সের নাতনি মিলিসহ একই পরিবারের চারজনের কারোরই মরদেহ পাওয়া যায়নি। পরিবারটির কারো কোনো ছবিও নেই, যা স্মৃতি হিসেবে ধরে রাখবেন। ছেলে মিজানুর, পুত্রবধূসহ পরিবারের চারজনকে হারিয়ে রিজিয়া বেগম যেন বেঁচে থেকেও মৃত।

ওই ট্র্যাজেডির শিকার শিবচর পৌর এলাকার মো. নুরুল হক মিয়ার ঢাকার শিকদার মেডিকেলে ডাক্তারি পড়ুয়া মেয়ে নুসরাত জাহান হিরা ও রাজধানীর বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ কলেজের ছাত্রী ফাতেমাতুজ জোহরা স্বর্ণা এবং তার ভায়রার মেয়ে চীনের জইনুস মেডিকেল কলেজের ছাত্রী শরিয়তপুরে গঙ্গানগর এলাকার জান্নাতুল নাঈম লাকী। এই দুর্ঘটনায় ৩ জন মারা গেলেও উদ্ধার হয়েছে ২ জনের মৃতদেহ। একজন এখনো নিঁখোজ। লঞ্চটিতে ওঠার আগে ৩ বোনের সেলফিই এখন পরিবারের একমাত্র সম্বল।

হিরা-লাকির একজন স্বজন বলেন, হিরা ও লাকির বাবা শিবচরের নূরুল হক মিয়াও লঞ্চে ছিলেন। ওই দুর্ঘটনায় তিনি প্রাণে বাঁচলেও চোখের সামনে দুই মেয়ের হারিয়ে যাওয়া তিনি এখনও মেনে নিতে পারছেন না। পাগলপ্রায় এই বাবা এখনও দুই কন্যার খোঁজ করেন। মেয়েদের ছবি নিয়ে কান্নাকাটি করেন মা মাকসুদা বেগমও।

পদ্মায় স্মরণকালের ভয়াবহ দুর্ঘটনায় ২০১৪ সালের ৪ আগস্ট পিনাক-৬ লঞ্চ ডুবি, এক ভয়াবহ ট্রাজেডির নাম। ভয়াবহ লঞ্চডুবিতে সরকারি হিসেবে ৪৯ জন যাত্রীর লাশ উদ্ধার ও ৫৩ জন নিখোঁজ রয়েছে। এ দুর্ঘটনার পরপরই মুন্সিগঞ্জের লৌহজং থানা ও মেরিন কোর্টে ২টি মামলা হয়। আসামিরা গ্রেপ্তার হলেও বর্তমানে আদালত থেকে জামিনে রয়েছে। তবে ৬ বছর অতিবাহিত হলেও দোষীদের বিচার না হওয়ায় নিহত ও নিখোঁজদের স্বজনদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ রয়েছে।

তাছাড়া, এতো ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর এখনও এই রুটে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে বহু নৌযান। নিখোঁজ অর্ধ শতাধিক পরিবারের কাউকেই দেয়া হয়নি কোনো অনুদান। আর অজ্ঞাত হিসাবে ২১ জনের লাশ শিবচর পৌরকবর স্থানে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন হলেও ডিএনএ নমুনাই রয়ে গেছে সব, মেলেনি পরিচয়। তাছাড়া আজও সন্ধান মেলেনি লঞ্চটির।

বাংলাদেশ জার্নাল/আরকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত