ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৭ মিনিট আগে
শিরোনাম

যশোরে মার্ডার

‘তামিল ছবি’ দেখা নিয়ে বিদাদ, স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা

  যশোর প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০৯ অক্টোবর ২০২০, ২০:৫২

‘তামিল ছবি’ দেখা নিয়ে বিদাদ, স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা
প্রতীকী ছবি

টেলিভিশনে তামিল ছবি দেখা নিয়ে বিরোধে ‘শুয়ারের বাচ্চা’ বলে স্বামীকে গালি দেয়ায় অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বৃষ্টি খাতুনকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। দায় স্বীকার করে যশোর জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে নিহতের স্বামী সাইফুল ইসলাম মনা সরদার।

বিচারক মামুনুর রহমান জবানবন্দি শেষে আসামিকে জেলহাজতে প্রেরণের আদেশ দিয়েছেন। সাইফুল ইসলাম কেশবপুর উপজেলার পাঁচ বাকাবর্শি গ্রামের মৃত আব্দুল খালেক সরদারের ছেলে।

সাইফুল ইসলাম বলেছেন, দুই বছর আগে একই উপজেলার চিংড়া বাজার এলাকার রফিকুল ইসলামের মেয়ে বৃষ্টি খাতুনকে বিয়ে করে। মেজো ভাই কাজের জন্য এলাকার বাইরে গেছেন। মেজো ভাইয়ের স্ত্রী সন্তানসম্ভবা হওয়ায় তার বাবার বাড়িতে থাকেন। বড় ভাইয়ের স্ত্রী সন্তান প্রসব করে যশোর হাসপাতালে। সাইফুলের মা বড় ভাবির কাছে হাসপাতালে ছিলেন। ফলে সাইফুল স্ত্রীকে নিয়ে মেজো ভাইয়ের ঘরে থাকেন।

গত ৭ অক্টোবর রাত ১১টার দিকে সাইফুল এবং তার স্ত্রী বৃষ্টি খাতুন টেলিভিশন দেখছিল। সাইফুল তামিল ছবি দেখবে আর তার স্ত্রী অন্য চ্যানেল দেখবে। এ নিয়ে দুইজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায় বৃষ্টি তার স্বামী সাইফুলকে শুয়ারের বাচ্চা বলে গালি দেয়। এ সময় সাইফুল বলেছেন ‘তুমি আমার মা-বাবা তুলে গালি দিলে কেন?’ বৃষ্টি বলছে, ‘এর চেয়ে ভালো কথা তোকে আর বলা যাবে না’।

এসময় টিভির রিমোট বৃষ্টির কাছে দিয়ে সাইফুল বলে 'আমি ঘরের বাইরে চলে গেলাম'। বারান্দায় এসে ঘণ্টা খানেক বসে থেকে শুধু গালি দেয়ার কথা মনে পড়লে রাগ বেড়ে যায় তার। এরপর বারান্দা থেকে দা নিয়ে ঘরে গিয়ে দেখেন বৃষ্টি টিভি চালিয়ে ঘুমাচ্ছে। এ সময় দা নিয়ে বৃষ্টি বুকের ওপর বসে বাম হাত দিয়ে মুখ চেপে ধরে ডান হাতে থাকা দা দিয়ে গলায় কোপ মেরে হত্যা করা হয়।

বাড়ির পাশে আজিজুর রহমানের পুকুরে দা ফেলে দিয়ে বাইরে এসে চিৎকার করে কান্নাকাটি করে সে। এ সময় আশপাশের লোকজন এলে সাইফুল বলে, 'বৃষ্টির সাথে অন্য পুরুষের সম্পর্ক ছিল। তারা ৬/৭ জন এসে তাকে গলা কেটে হত্যা করেছে।'

খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এই ঘটনায় বৃষ্টির বাবা বাদী হয়ে কেশবপুর থানায় হত্যা মামলা করেছেন।

পুলিশ বৃহস্পতিবার কেশবপুরের গড়ভাঙ্গা বাজার এলাকা থেকে সাইফুলকে আটকের পর যশোর জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করে। হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে সাইফুল আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।

বৃষ্টির বাবা মামলায় উল্লেখ করেছেন, দুই বছর আগে মেয়ে বৃষ্টিকে পারিবারিকভাবে সাইফুলের সাথে বিয়ে দেয়া হয়। বিয়ের পর থেকেই সাইফুল মেয়েটিকে মারপিটসহ বিভিন্ন ধরনের নির্যাতন করে আসছিল। কিন্তু মেয়েকে বুঝিয়ে সংসার করার জন্য চেষ্টা করা হয়। ঘটনার দিন বাড়িতে অন্য কেউ না থাকার সুযোগে টেলিভিশন দেখাকে কেন্দ্র করে গলাকেটে হত্যা করে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত