ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

পঙ্গুত্বই কেড়ে নিলো বাবলুর স্বপ্ন

  ধামরাই (ঢাকা) প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৪ ডিসেম্বর ২০২০, ১৬:৫১  
আপডেট :
 ১৪ ডিসেম্বর ২০২০, ১৭:৩১

পঙ্গুত্বই কেড়ে নিলো বাবলুর স্বপ্ন
ছবি: নিজস্ব

ঢাকার ধামরাইয়ে উচ্চ শিক্ষিত হয়েও পঙ্গুত্বের কারণে পাচ্ছে না কোনো চাকরি। শোচনীয়ভাবে কাটাচ্ছে জীবন। একটি চাকরির জন্য ধারে ধারে ঘুরেও কোনো কুল কিনারা না পেয়ে শেষে মুদি দোকানকেই জীবনের শেষ সম্বল হিসেবে বেছে নিয়েছেন। তাও আবার চলে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। কান্না বিজড়িত কষ্টে এমন কথাই বললেন উপজেলার সোমভাগ ইউনিয়নের দেপাশাই গ্রামের মৃত নাসিরুদ্দিনের ছেলে মো. আশরাফুল ইসলাম বাবলু নামে এক ব্যক্তি।

সরেজমিনে জানা যায়, ১৯৯৫ সালে গাছ থেকে পড়ে তার কোমর থেকে দেহের নিচের অংশ পঙ্গু হয়ে যায়। প্রথমে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য গেলে তাকে ফিরিয়ে দেন। পরে সাভারের সিআরপিতে (প্রক্ষাঘাত পুনর্বাসন কেন্দ্র) চিকিৎসা নিয়ে কোনো রকমে সুস্থ হয়। পরবর্তীতে যশোরের ‌‘আশার বাড়ি’ নামক খ্রিষ্টান মিশনারিদের একটি বেসরকারি সংস্থা থেকে চিকিৎসা নেন এবং সেখান থেকেই এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেন। এরপর মানিকগঞ্জ সরকারি দেবেন্দ্র কলেজ থেকে ব্যবস্থাপনা বিষয়ে বিবিএস (অনার্স) ও যশোর সরকারি কলেজ থেকে মাস্টার্স শেষ করেন। এরপর শুরু হয় জীবনের সংগ্রাম।

বাবলু বলেন, দুই ভাইয়ের মধ্যে আমি বড়। ছোট ভাই সরকারি চাকরি পেয়ে বিয়ে করে আলাদা সংসার পেতেছে। বাবা মারা গেছে অনেক আগে। মা আবার অন্যত্র সংসার গড়েছে। আমি উচ্চ শিক্ষিত হয়ে মানুষের ধারে ধারে একটি ছোট খাট চাকরির জন্য ঘুরেছি। পঙ্গুত্বের কারণে কেউ একটি চাকরির ব্যবস্থা করে দেয়নি। শুধু আশার বাণী শুনিয়েছে। সুযোগ এলে বলবো। আর সেই সুযোগ কোন দিন আসেনি।

তিনি আরো বলেন, আমি বিবাহিত। স্ত্রী একটি গার্মেন্টস কারখানায় চাকরি করে। আমি বেকার। কী করবো জানি না। হতাশায় দিন কাটতে লাগলো। স্ত্রীর বেতনে সংসার চালানো কষ্ট হয়ে যায়। অবশেষে মানুষের কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে রাস্তার পাশে একটি মুদি দোকান করি। এখন তাও বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম। জমির মালিক তার পুরো জমি ভরাট করে মার্কেট করবে। সেখানে দোকান নিতে অনেক টাকা সিকিউরিটি হিসেবে জমা দিতে হবে। তা আমার মতো ব্যক্তির পক্ষে সম্ভব নয়। তাই এক রকম হতাশায় দিন কাটছে। জানি না আল্লাহ ভাগ্যে কী রাখছে। পঙ্গুত্বের কারণে উচ্চশিক্ষিত হয়েও একটি পিয়নের চাকরিও পেলাম না। আর কেউ কোন দিন সাহায্যের হাত বাড়িয়েও দিলো না।

প্রতিবেশী তোফাজ্জল হোসেন বলেন, বাবলু একজন উচ্চ শিক্ষিত ব্যক্তি। কিন্তু পঙ্গুত্বের কারণে তার কোন চাকরি হয়নি। প্রতিবন্ধী কোঠা থাকার পরও কোন ব্যবস্থা হয়নি বাবলুর। এখন তার একটি মুদি দোকান আছে তাও আবার যাবার পথে। বাবলু জানান, সরকারের কাছে আমার দাবি আমাকে ছোট একটি চাকরি দিয়ে বেঁচে থাকার ব্যবস্থা করে দেয়া হয়।

বাংলাদেশ জার্নাল/এনএইচ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত