ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

ভুয়া কাগজপত্রে সরকারি চাকরি, ব্যবস্থা নিচ্ছে না প্রশাসন

  ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০৩ জানুয়ারি ২০২১, ২০:০৫

ভুয়া কাগজপত্রে সরকারি চাকরি, ব্যবস্থা নিচ্ছে না প্রশাসন
ছবি: প্রতিনিধি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার বুধল ইউনিয়নের হেলেনা খাতুন ভুয়া সার্টিফিকেট ও নিয়মবর্হিভুতভাবে মহল্লাদারের সরকারি চাকরি করায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর একটি অভিযোগ জমা পড়েছে গত ৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে। আর আজ ৩ জানুয়ারি ২০২১। এর মধ্যে ৪ মাস পার। কিন্তু অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

এর মধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়, তদন্ত প্রতিবেদনে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পর সেই প্রতিবেদন ইউএনও বরাবর দাখিলও করা হয়। তারপরই রহস্যজনক কারণে লিখিত অভিযোগটি উঠিয়ে নিতে আবেদন জমা পড়েছে। অভিযোগকারী ব্যক্তি ও অভিযোগ প্রত্যাহারের আবেদন করা ব্যক্তি একই ব্যক্তি। তিনি হলেন বুধল ইউনিয়নের ছাতিয়ান গ্রামের ফরসু মিয়ার ছেলে মামুন মিয়া।

এদিকে গত ৬ সেপ্টেম্বর প্রথম যখন অভিযোগ জমা হয় তারপর ১৪ দিন পার হলেও ইউএনও সেটা জানতেন না বলে জানিয়েছেন সাংবাদিকদের। আবার তদন্ত করার পর তদন্ত কর্মকর্তা ইউএনও বরাবর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন গত ১৮ নভেম্বর ২০২০ তারিখ। তারপর পেড়িয়ে গেছে ৪৮ দিন, কিন্তু ইউএনও বলছেন এই বিষয়টিও তিনি জানেন না।

তবে ৩ জানুয়ারি ইউএনও পঙ্কজ বড়ুয়া বলেছেন তিনি তার ‘সিএ’র কাছে খোঁজ নিবেন, এবং অভিযোগের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।

তদন্ত প্রতিবেদনে হেলেনা বলেছেন, আমার বাড়ি বুধলের ৭ নং ওয়ার্ডে, কিন্তু চাকরির জন্য ৩ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা হয়েছি, তবে ৩ নং ওয়ার্ডে আমার কোনো থাকার জায়গা নেই। ভোটার আইডিতে আগে আমি তালশহর পূর্ব ইউনিয়নে ছিলাম। কিন্তু ট্রান্সফার করে বুধল ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা হয়েছি। আমার আইডি কার্ডে ৪র্থ শ্রেণি পাশ কিন্তু চাকরির জন্য আমি বুধল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে অষ্টম শ্রেণির পাশের সনদ সংগ্রহ করি।

এ বিষয়ে বুধল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ সাহেদ আলী বলেছেন, হেলেনা খাতুন আমার স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়াশোনা করেছে এমন কোনো প্রমাণ নেই। নথিপত্রে এর কোনো রেকর্ডও নেই। তার সার্টিফিকেটের প্যাড ও স্বাক্ষর কোনটাই আমার বা আমার স্কুলের নয়।

উপরের কথাগুলো স্বীকার করে এ বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক একটি প্রত্যয়নপত্রও দিয়েছেন।

এদিকে হেলেনা খাতুন বুধল ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা নন মর্মে প্রত্যয়ন দিয়েছেন ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ড মেম্বার সিরাজুল ইসলাম।

ভুয়া কাগজপত্র ও নিয়মবর্হিভুতভাবে সরকারি চাকরি করার বিষয়ে তদন্ত করতে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পায় তদন্ত কর্মকর্তা। সেই প্রতিবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা বলেছেন, বাদী, বিবাদী, স্থানীয় মেম্বার, প্রধান শিক্ষক, সাবেক ইউপি সচিব, চেয়ারম্যানের বক্তব্য পর্যালোচনা করে বুঝা যাচ্ছে যে, বিবাদী হেলেনা খাতুন চাকরির জন্য ভুয়া শিক্ষা সনদ ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে বুধল ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের জন্ম নিবন্ধন ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সংগ্রহ করেন।

তদন্ত প্রতিবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা এই বলে মতামত দিয়েছেন যে, হেলেনা খাতুন নিয়োগ পাওয়ার বিষয়ের অভিযোগটি প্রাথমিকভাবে সত্যতা পাওয়া যায়।

বাংলাদেশ জার্নাল/এনকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত