ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২৯ মিনিট আগে
শিরোনাম

বাংলাদেশ জার্নালে সংবাদ প্রকাশের পর আশ্রয়ন প্রকল্পে হরিলুটের তদন্ত

  পটুয়াখালী প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৯ এপ্রিল ২০২১, ১৬:৩২  
আপডেট :
 ১৯ এপ্রিল ২০২১, ১৬:৩৪

বাংলাদেশ জার্নালে সংবাদ প্রকাশের পর আশ্রয়ন প্রকল্পে হরিলুটের তদন্ত
ছবি- প্রতিনিধি

সংবাদমাধ্যম বাংলাদেশ জার্নাল-এ গত ১০ এপ্রিল ‘কলাপাড়ায় আশ্রয়ন প্রকল্পে হরিলুট’ শীর্ষক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের পর মাঠ পর্যায়ে তদন্তে নেমেছে প্রশাসন।

রোববার দুপুরে উপজেলার ধূলাসার ইউনিয়নের তারিকাটা গ্রামে গিয়ে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেন পটুয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক

(রাজস্ব) জিএম সরফরাজ।

তবে তদন্তের সময় উপকারভোগীদের তালিকা তৈরি ও ঘর বরাদ্দে অনিয়মের সঙ্গে জড়িতরা উপস্থিত ছিলেন। আর তদন্তকারী কর্মকর্তা বললেন, প্রকল্প পরিচালকের নির্দেশনায় তদন্ত কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।

সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লিখিত ভুক্তভোগীদের লিখিত বক্তব্য গ্রহণ করা হচ্ছে। এগুলো যাচাই বাছাই করে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকল্প পরিচালক বরাবর পাঠানো হবে।

আরও পড়ুন:​ কলাপাড়ায় আশ্রয়ণ প্রকল্পে হরিলুট

এদিকে আশ্রয়ন প্রকল্পের আড়াই কোটি টাকা লোপাটের তথ্য প্রকাশের পর ধূলাসার ইউনিয়নের তারিকাটা গ্রামের ভুক্তভোগী বাদলকে মুঠোফোনে কলাপাড়ার ইউএনও আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক তার সঙ্গে সন্ধ্যায় দেখা করতে বলেন। এছাড়া তদন্ত কর্মকর্তার কাছে সত্যতা প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ করেন তিনি।

ইউএনও আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক ভুক্তভোগী বাদলকে টিউবওয়েলসহ সকল সরকারি সেবা-সুবিধা দেয়ার বিষয়ে আশ্বস্ত করে ঘর পেতে টাকা পয়সা দেয়ার কথা না বলার জন্য অনুরোধ করেন। এর অডিও রেকর্ড সংরক্ষিত আছে।

এর আগে ধানখালী ইউপি চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিন তালুকদার, লালুয়া ইউপি চেয়ারম্যান তপন বিশ্বাস ও মিঠাগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান হেমায়েত উদ্দিন হিরন কাজী বাদলকে বালিয়াতলী ডেকে নিয়ে ঘর বরাদ্দে টাকা দেয়ার কথা তদন্ত কমিটিকে না বলতে অনুরোধ করেন। এছাড়া নানাভাবে আর্থিক প্রলোভন দেখান তারা।

ধূলাসার ইউপি চেয়ারম্যান আ. জলিল আকন মুঠোফোনে তদন্ত কর্মকর্তার সামনে কিছু না বলতে বলাসহ ঘর তৈরিতে ব্যবহৃত পচা ইট সরিয়ে রাখতে অনুরোধ করেন বলেও তথ্য আছে।

এরপর রোববার কলাপাড়ার ইউএনও আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক, পিআইও মো. হুমায়ুন কবির, সিপিপি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামানসহ উল্লিখিত চার চেয়ারম্যান তদন্ত কর্মকর্তার সাথে উপস্থিত থাকলেও ভুক্তভোগী বাদল তদন্ত কর্মকর্তার কাছে নির্ভয়ে ঘর বরাদ্দে টাকা পয়সা লেনদেনসহ নিম্নমানের উপকরণসামগ্রী ব্যবহারের সত্যতা তুলে ধরেন।

পটুয়াখালী অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জিএম সরফরাজ আলী বলেন, ‘প্রকল্প পরিচালক মহোদয়ের নির্দেশনায় তদন্ত কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লিখিত ভুক্তভোগীদের বক্তব্য গ্রহণ করা হচ্ছে। গতকাল কলাপাড়ার ধূলাসার ইউনিয়নের তারিকাটা গ্রামে গিয়ে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে, যা চলমান আছে। এগুলো যাচাই বাছাই করে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকল্প পরিচালকের বরাবর পাঠানো হবে।’

প্রসঙ্গত, কলাপাড়ায় ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য গৃহপ্রদান নীতিমালা ২০২০’র আলোকে আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের উপকারভোগীদের নামের তালিকা নির্ভুলভাবে সম্পন্ন করার বিধান থাকলেও তা মানা হয়নি। ঘরের নির্মাণসামগ্রী পরিবহনে প্রথম ধাপে ৪৫০টি ঘরের বিপরীতে পরিবহন ও জ্বালানি খরচের ১৮ লক্ষ ২৫ হাজার এবং দ্বিতীয় ধাপে ১১০টি ঘরের বিপরীতে পরিবহন ও জ্বালানি খরচের ৫ লক্ষ ৭০ হাজার টাকাসহ মোট ২৩ লক্ষ ৯৫ হাজার টাকা লোপাটের অভিযোগ উঠেছে।

এছাড়া ৫৬০টি বরাদ্দকৃত ঘরের জন্য উপকারভোগী প্রতি ৩০/৪০ হাজার টাকা হারে প্রায় ২ কোটি টাকা উত্তোলন করার অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। এ নিয়ে প্রতিকার চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে রেজিস্ট্রি ডাক যোগে আবেদন করেছেন ধূলাসার ইউনিয়নের তারিকাটা গ্রামের এক ভুক্তভোগী।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত