ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১০ মিনিট আগে
শিরোনাম

আদালতে জবানবন্দি হেফাজত নেতা নোমান ফয়েজীর

  চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১২ মে ২০২১, ০১:২৮

আদালতে জবানবন্দি হেফাজত নেতা নোমান ফয়েজীর

চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে সহিংসতার ঘটনায় করা মামলায় আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির প্রচার সম্পাদক জাকারিয়া নোমান ফয়জী।

মঙ্গলবার (১১ মে) চট্টগ্রামের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট খন্দকার কৌশিক আহমেদের আদালতে জবানবন্দি দেন তিনি। এরপর আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ) আবদুল্লাহ আল মাসুম।

তিনি বলেন, গত ২৬ মার্চ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত হাটহাজারীসহ কয়েকটি স্থানে হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশে সহিংসতা চালানোর কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন জাকারিয়া নোমান। ভূমি অফিস, থানা ভবনে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় নিজের জড়িত থাকার কথাও স্বীকার করেছেন তিনি। বুধবার আরও একটি মামলায় তাকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হবে।

তিনি বলেন, হেফাজতের তাণ্ডবের ঘটনার নির্দেশদাতাদের বিষয়েও তথ্য দিয়েছেন জাকারিয়া। কারা নির্দেশদাতা এবং এ সংক্রান্ত আরও কিছু তথ্য দিয়েছে। তদন্তের স্বার্থে সব বলা সম্ভব নয়।

এর আগে গত ৫ মে কক্সবাজারের চকরিয়া থেকে জাকারিয়া নোমান ফয়জীকে গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। পরে তাকে হাটহাজারী থানার সহিংসতার মামলায় রিমান্ডে নেয় পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আজ তাকে আদালতে হাজির করা হলে তিনি জবানবন্দি দেন।

এদিকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্কের অভিযোগে জাকারিয়া নোমান ফয়জীর বিরুদ্ধে গত ৬ মে হাটহাজারী থানায় ধর্ষণের মামলা করেন এক নারী। ওই মামলায় জাকারিয়া নোমানকে গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য আজ আবেদন করেছে হাটহাজারী থানার পুলিশ। আদালত কাল বুধবার শুনানির জন্য দিন ধার্য করেছেন।

জাকারিয়া নোমান ফয়জীর বাড়ি চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার মেখল গ্রামে। তিনি হাটহাজারী উপজেলার আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া হামিয়ুচ্ছুন্নাহ মেখল মাদ্রাসার সিনিয়র শিক্ষক। তার বাবা নোমান ফয়জী হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা ছিলেন। গত ২২ মার্চ তিনি মারা যান।

প্রসঙ্গত, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর দিন গত ২৬ মার্চ দুপুরে চট্টগ্রামের হাটহাজারী থানায় ভাংচুর, স্থানীয় ভূমি অফিসে অগ্নিসংযোগসহ রক্তক্ষয়ী সংঘাতে লিপ্ত হয় হেফাজতের নেতাকর্মীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে পুলিশ গুলি ছুঁড়লে হেফাজতে ইসলামের চার কর্মী নিহত হন। এর জেরে তিনদিন ধরে হাটহাজারী থানার অদূরে হেফাজতের মূল ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মইনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদরাসার সামনে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়কে ইটের দেওয়াল তুলে অবরোধ তৈরি করে রাখে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। একই ঘটনার জেরে চট্টগ্রামের পটিয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ দেশের বিভিন্নস্থানে রক্তক্ষয়ী সংঘাতের ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় চট্টগ্রামের হাটহাজারী থানায় প্রথমে সাতটি মামলা দায়ের করা হয়। এসব মামলায় কারো নাম উল্লেখ না করে কয়েক হাজার অজ্ঞাত আসামি করা হয়। এরপর গত ২২ এপ্রিল আরও তিনটি মামলা দায়ের করা হয়, যার মধ্যে দু’টিতে প্রধান আসামি করা হয়েছে হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কেন্দ্রীয় কমিটির আমীর জুনায়েদ বাবুনগরীকে। অপর মামলায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মীর হেলালসহ বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়েছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/আর

  • সর্বশেষ
  • পঠিত