ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৫৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

মুক্তিযোদ্ধা ভাতা নিয়ে ভাই-বোনের দ্বন্দ্ব

  লালমনিরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১০ জুন ২০২১, ১১:৫৬

মুক্তিযোদ্ধা ভাতা নিয়ে ভাই-বোনের দ্বন্দ্ব
ফাইল ছবি

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় বীর মুক্তিযোদ্ধা বাবার সম্মানী ভাতা ও সম্পত্তির ভাগ বণ্টন নিয়ে ভাই-বোন ও সৎ মায়ের দ্বন্দ্বে এবার ভগ্নীপতির বিরুদ্ধে মিথ্যা ছিনতাইয়ের মামলা দায়েরের অভিযোগ উঠেছে শ্যালকের বিরুদ্ধে। ওই মামলায় যাদের সাক্ষী করা হয়েছে তারা ছিনতাইয়ের সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না বলে নিজেই দাবি করেছেন।

তবে মামলার বাদী দুলাল হোসেনের দাবি, তার মামলার প্রধান আসামি শহিদুল ইসলামের স্ত্রী রবিনা বেগম ও শাশুড়ি মনোয়ারা বেগম তার বাবার মৃত্যুর ২৫ বছর পর মেয়ে ও স্ত্রী বলে মিথ্যা দাবি করছেন।

জানা গেছে, ওই উপজেলার ভেলাগুড়ি ইউনিয়নের বনচৌকি এলাকার মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা আ. ছাত্তারের ২য় স্ত্রী দাবি করে মনোয়ারা বেগম ও মেয়ে দাবি করে রবিনা বেগম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অবেদন করে বাবার সম্মানী ভাতা দাবি করেন। কিন্তু বীর মুক্তিযোদ্ধা আ. ছাত্তারের পুত্র দুলাল হোসেন তার বাবার স্ত্রী ও মেয়ে দাবি করা ওই দুই নারীকে অস্বীকার করেন।

এ নিয়ে উপজেলা সমাজসেবা অফিসারের কার্যালায়ে গত ৪ মার্চ তদন্ত হয়। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে বাক বিতণ্ডার ঘটনাও ঘটে। তদন্ত শেষে মনোয়ারা বেগম ও রবিনা বেগম থানায় অভিযোগ করেন, দুলাল হোসেন তাদের হুমকি দিয়েছেন।

রাতে ওই বীর মুক্তিযোদ্ধার পুত্র দুলাল হোসেন থানায় পাল্টা অভিযোগ করেন, শহিদুল ইসলাম (রবিনা বেগমের স্বামী) নীলফামারী থেকে ফেরার পথে সানিয়াজান এলাকায় তার মোটরসাইকেল ছিনতাই করেন। ওই মামলায় ২নং সাক্ষী হিসেবে সুজন ও ৩ নং সাক্ষী হিসেবে ওবায়দুল রহমানের নাম উল্লেখ করা হয়। সাক্ষী সুজন ও ওবায়দুল রহমান জানান, তারা ছিনতাইয়ের সময় ঘটনাস্থলে ছিলেন না। মোটরসাইকেল ছিনতাই হয়েছে কি না তাও তারা জানেন না। পরে দুলাল হোসেনের মুখে ঘটনাটি শুনেছেন মাত্র।

রবিনা বেগম অভিযোগ করে বলেন, আমি আমার বাবার মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা দীর্ঘদিন ধরে না পেয়ে ভাতার জন্য আবেদন করি। এতে আমার সৎ ভাই দুলাল হোসেন আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়। গত ৪ মার্চ তদন্তের দিনে আমাকে ও আমার মাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেয় আমার সৎ ভাই দুলাল হোসেন। আমি বিচার চেয়ে সেই দিনে থানায় অভিযোগও করি। রাতে নাটক তৈরি করে আমার স্বামীর বিরুদ্ধে মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের মিথ্যা মামলা দায়ের করেন তিনি। আমার দায়ের করা অভিযোগ গ্রহণ না করে পুলিশ আমার স্বামীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা গ্রহণ করেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান দুলাল হোসেন বলেন, আমার বাবা আজ থেকে প্রায় ২৫ বছর আগে মারা গেছেন। দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে আমার মা বাবার সম্মানী ভাতা ভোগ করে আসছেন। এত দিন পর কেন তারা হঠাৎ করে আমার সৎ মা ও বোন দাবি করে সম্মানী ভাতা দাবি করলো? এত দিন কোথায় ছিলো? তারা যে কাবিন নামাটি আবেদনের সাথে দিয়েছেন তা ভুয়া। আমার পরিবারকে হয়রানি করতেই আমার পরিবারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, নীলফামারী থেকে ছোট ভাইয়ের সাথে দেখা করে ফেরার পথে আমার মোটরসাইকেলটিও ছিনতাই করেন রবিনা বেগমের স্বামী শহিদুল ইসলাম। আমি আইনের কাছে ন্যায় বিচার চাই।

হাতীবান্ধা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মাহাবুবুল আলম বলেন, উভয় পক্ষ তাদের প্রমাণাদি দেখিয়েছেন। বিষয়টি গোপনে ও প্রকাশ্য তদন্ত হয়েছে। বীর মুক্তিযোদ্ধা আ. ছাত্তার ও মনোয়ারা বেগমের বিয়ের কাবিননামা চেয়ে ওই বিয়ের নিকাহ রেজিস্ট্রারকে পত্র দেয়া হয়েছে। বিয়ের কাবিননামা আসলেই আমরা সিদ্ধান্ত নিবো।

হাতীবান্ধা থানার ওসি এরশাদুল আলম বলেন, দুলাল হোসেন তার মোটরসাইকেল ছিনতাই হয়েছে এমন দাবি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। আমরা মামলাটির তদন্ত করছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এনকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত