ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

২০ হাজারে বিক্রি হতো লাখ টাকার জাল নোট

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১২ জুলাই ২০২১, ১৮:৫৮

২০ হাজারে বিক্রি হতো লাখ টাকার জাল নোট
পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার জাল নোট তৈরির চক্র।

আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে কয়েক কোটি টাকার জাল নোট বাজারে ছাড়ার প্রস্তুতি চলছিল ঢাকার ভাটারায় নুরের চালার একটি বাড়িতে। দীর্ঘ দশ বছর ধরে এমন জাল টাকা তৈরি করে সারাদেশে ছড়িয়ে দিত আব্দুর রহিম ও ফাতেমা দম্পতি। কয়েক হাত ঘুরে ভোক্তা পর্যায়ে এসব জাল নোট ছড়িয়ে দিতে দেশজুড়ে ছিল ডিলার।

সোমবার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) অভিযান চালিয়ে এই দম্পতিসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় ৪৩ লাখ টাকার জাল নোট ও নোট তৈরির সরঞ্জামও জব্দ করা হয়। গ্রেপ্তাররা হলেন- আব্দুর রহিম শেখ, ফাতেমা বেগম, হেলাল খান, আনোয়ার হোসেন ও ইসরাফিল আমিন।

পুলিশ বলেছে, একশ’টি কাগজের নোটের এক হাজার নোটের বান্ডেল জাল টাকা তৈরি করতে ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা খরচ হয়। জাল টাকা প্রস্তুতকারকরা প্রতি বান্ডেল পাইকারি ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে। পাইকাররা আবার এ গুলোকে প্রান্তিক পর্যায়ের বিভিন্ন খুচরা বিক্রেতাদের কাছে প্রতি বান্ডেল ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে।

অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া ডিবি গুলশান বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মশিউর রহমান বলেন, কারখানাটি থেকে এক হাজার টাকা ও ৫০০ টাকা মূল্যমানের প্রায় ৪৩ লাখ তৈরিকৃত জাল টাকা, একটি ল্যাপটপ, দুইটি কালার প্রিন্টার, বিপুল পরিমাণে আঠা ও আইকা, বিভিন্ন ধরনের রং, জাল টাকা তৈরির জন্য এ ফোর সাইজের অনেক কাগজ, নিরাপত্তা সুতার বান্ডেল, লেমিনেটিং মেশিন, কাটার, বঙ্গবন্ধু প্রতিকৃতি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের লোগো সম্পন্ন বিশেষ কাগজ জব্দ করেছি। যা দিয়ে কয়েক কোটি মূল্যের জাল টাকা তৈরি করা সম্ভব।

ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, জাল টাকার কারবারিরা রুট পর্যায়ে গহনা-গাটি, কাপড়-চোপড়, ভোজ্য-পণ্য এমনকি পশুর হাটে গিয়ে গরু কিনে জাল টাকা ছড়িয়ে দিতো। জাল-টাকা এবং মাদক কেনা-বেচার কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে এর আগেও চক্রটির কয়েকজন সদস্য গ্রেপ্তার হয়েছিল।

গ্রেপ্তার ফাতেমা বেগম ২০১৯ সালে হাতিরঝিল এলাকার একটি বাসায় জাল টাকা তৈরি করার সময় গ্রেপ্তার অন্য এক সহযোগীসহ হাতেনাতে ধরা পড়েছিল। কিন্তু তার স্বামী রহিম ওই সময় পালিয়ে যায়।

মশিউর রহমান আরো বলেন, গ্রেপ্তাররা দীর্ঘদিন ধরে জাল টাকা খুচরা এবং পাইকারি বিক্রি করতো। গত তিন বছর ধরে ঈদসহ অন্যান্য উৎসবের আগে জাল টাকা তৈরির কাজে নিয়োজিত থেকে বিপুল পরিমান বাংলাদেশি জাল টাকা বাজারে ছেড়েছে বলে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে।

ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, বিভিন্ন উৎসবে বিশেষ করে আসন্ন ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে জাল টাকা তৈরি চক্র, মলম পার্টি, অজ্ঞান পার্টি, ছিনতাইকারী এদের দৌরাত্ম বেড়ে যায়। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ এদের তৎপরতা রুখতে সার্বক্ষণিক কাজ করছে।

‘আসন্ন ঈদ উপলক্ষে মহানগরবাসী যারা অধিক টাকা বহন করবেন, তারা নগদ ক্যাশ সঙ্গে না রেখে ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন করার জন্য অনুরোধ করেন’ ডিবির এই কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ জার্নাল/এফজেড/ওয়াইএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত