ঢাকা, রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২২ মিনিট আগে
শিরোনাম

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অবরোধ, শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ

  গাজীপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৪:০৩  
আপডেট :
 ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৪:১৩

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অবরোধ, শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ

গাজীপুরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূলফটকে অবস্থান নিয়ে ২০১৫-২০১৬ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) চতুর্থ বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষার ফেল করা শিক্ষার্থীরা ফলাফল পূন:র্মূল্যায়নের দাবিতে আন্দোলন করেছে শিক্ষার্থীরা।

রোববার সকাল ৯টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী-শিক্ষকসহ সকলকেই অবরুদ্ধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে তাদের মুক্ত করে।

রংপুর কারমাইকেল কলেজের শিক্ষার্থী আল আজাদ জানান, রোববার সকাল ৯টার দিকে স্নাতক চতুর্থ বর্ষের চূড়ান্ত ফল পূনর্মূল্যায়নের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে জড়ো হতে থাকেন অকৃতকার্য শিক্ষার্থীরা। ফটকের সামনে অবস্থান করে তাদের দাবি নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন বিক্ষুব্ধরা।

এর আগে গত ২০ জুলাই ২০১৫-২০১৬ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) চতুর্থ বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়। ওই ফলাফলে ২৮ শতাংশ শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হন।

অকৃতকার্য শিক্ষার্থীরা ফলাফল নিয়ে প্রথম থেকেই অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে আসছেন। ২৪ হাজারের বেশি শিক্ষার্থীকে ওই ফলাফলের এক বিষয়ে অকৃতকার্য দেখানো হয়েছে।

চট্টগ্রাম কলেজের শিক্ষার্থী মো. এমদাদুল হক ও ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী রেজাউল করিম দাবি করেন, সম্মান শ্রেণির অন্যান্য বর্ষের পরীক্ষায় ভালো ফল হলেও চতুর্থ বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষার ফলাফলে তাদের এক বিষয়ে অকৃতকার্য দেখানো হয়েছে। তাদের এমন ফল হতে পারে না।

এর আগেও গত ১১ ও ১৮ আগস্ট একই দাবিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করে। দাবি না মানলে আমরণ অনশন কর্মসূচি ঘোষণার কথাও জানান শিক্ষার্থীরা।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে দিনভর বিক্ষোভ ও এই অনশন কর্মসূচির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকসহ তিন শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী ক্যাম্পাসে আটকা পড়েন। আন্দোলনের খবরে সেখানে মোতায়েন করা হয় বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য। তারা নানাভাবে শিক্ষার্থীদের বোঝানোর চেষ্টা করেন। রাতেও শিক্ষার্থীরা তাদের অবস্থান থেকে সরে না আসায় চড়াও হয় পুলিশ।

এক শিক্ষার্থী জানান, রোববার রাত ৯টার কিছু পর তাদের ছত্রভঙ্গের চেষ্টা করে পুলিশ। এ সময় পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ধস্তাধস্তি হয়। এক পর্যায়ে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। শিক্ষার্থীরা সরে গেলে ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন আটকে পড়া শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

এ বিষয়ে গাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন জানান, রোববার দিনভর আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রধান ফটক আটকে রাখে। এসময় ভেতরে থাকা কর্মকর্তা-কর্মচারী-শিক্ষকসহ কাউকেই বের হতে দেয়নি। এভাবে রাত ৯টার সময় কিছু শিক্ষার্থী আন্দোলনের নামে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করছিল। পরে তাদের সেখান থেকে ধাওয়া দিয়ে সরিয়ে দেয়া হয়। তবে লাঠিচার্জের বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।

এ ব্যাপারে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বদরুজ্জামান জানান, শিক্ষার্থীরা দাবি আদায়ে রোববার সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভেতরে আটকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেইটে আন্দোলন করেছে। কাউকে বাইরে যেতে দেয়নি, কাউকে খাবারের জন্যও ঢুকতে দেয়নি। এমনকি ডাক গাড়িও ভেতরের ডাকঘরে ঢুকতে দেয়নি তারা। তারা তাদের দাবি দাওয়ার স্মারকলিপি দিয়েও আন্দোলন থামায়নি। পরে রাত ৯টার দিকে পুলিশ তাদের সরিয়ে দিলে অবরুদ্ধ থাকা সকলে বের হন।

তিনি আরো বলেন, শতকরা ২৮ ভাগ ফেল করার বিষয়টি সঠিক নয়। কারণ এখানে অন্তত ১০ ভাগ পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। ইতোমধ্যে ২২ হাজার শিক্ষার্থীর খাতা পুনর্মূল্যায়নের আবেদন করেছে। এসব খাতা পূনর্মূল্যায়নসহ সকল বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এমজে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত