ঢাকা, রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৩ মিনিট আগে
শিরোনাম

টাকা ছিনিয়ে নিতেই অধ্যাপক সাঈদাকে হত্যা: পুলিশ

  গাজীপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৬ জানুয়ারি ২০২২, ১৯:৫৭

টাকা ছিনিয়ে নিতেই অধ্যাপক সাঈদাকে হত্যা: পুলিশ
ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুরের প্লটের গাছ বিক্রি করে ১০ হাজার টাকা পার্সে রাখেন নিহত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক সাঈদা গাফফার। ওই টাকা ছিনিয়ে নিতেই রাজমিস্ত্রী আনোয়ারুল ইসলাম তাকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করে বলে জানায় পুলিশ। পরে লাশ ঝোপে ফেলে ওই টাকা ও সঙ্গে থাকা দুইটি মোবাইল নিয়ে গাইবান্ধায় পালিয়ে যায় আনোয়ারুল।

প্রাথমিক জ্ঞিাসাবাদে পুলিশকে এসব তথ্য জানিয়েছে ঘাতক রাজমিস্ত্রী আনোয়ারুল ইসলাম (২৫)। এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে নিজ গ্রাম থেকে তাকে আটক করে গাজীপুর মহানগর ডিবি ও কাশিমপুর থানা পুলিশের একটি দল। শনিবার তাকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে জ্ঞিাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে গাজীপুর মহানগর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে পাঠায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই দীপংকর রায়।

এসআই জানান, গত মঙ্গলবার বিকেলে নির্মানাধীণ বাড়ির প্লট থেকে ১০ হাজার টাকায় ৫টি গাছ বিক্রি করেন অধ্যাপক সাঈদা গাফফার। গাছ কাটেন রাজমিস্ত্রী আনোয়ারুল। গাছকাটা শেষ হলে সন্ধ্যায় নির্মানাধীন বাড়ি থেকে পানিশাইলের ভাড়া বাসায় ফিরছিলেন প্রফেসর সাইদা। ওই সময় রাজমিস্ত্রী আনোয়ারুল তার পেছন পেছন যেতে থাকেন। পথে ১০ হাজার টাকা থেকে কিছু টাকা চান আনোয়ারুল। কিন্তু অধ্যাপক সাঈদা ওই টাকা দিতে অস্বীকার করলে পেছন থেকে সাঈদা গাফফারের মুখ চেপে ধরে সে। এরপর গলার ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে তাকে। পরে তার লাশ ঝোপের ভেতর ফেলে আনোয়ারুল প্রথমে সাঈদার ভাড়া বাসায় গিয়ে আলমারি খুলে টাকা-পয়সার খোঁজ করে। পরে পালিয়ে শ্বশুরবাড়ি গাইবান্ধার পলাশবাড়ি গিয়ে রাত্রিযাপন করে।

এরপর বুধবার সকালে আনোয়ারুল নিজবাড়িতে গিয়ে আত্মগোপন করে। বৃহস্পতিবার পুলিশ আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে তার খোঁজে ওই গ্রামে যায়। এসময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সে একটি মোটরসাইকেলে করে পালানোর সময় রাতে তাকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের সময় তার কাছ থেকে অধ্যাপক সাঈদার কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়া ১০ হাজার টাকার মধ্যে দুই হাজার ৬৫০ টাকা এবং মোবাইল ফোন দুইটি উদ্ধার করেছে।

এসপি আরও জানায়, আনোয়ারুল মাদকাসক্ত এবং বখাটে। নিয়মিত গাঁজা সেবন করে। হত্যার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কি না এবং আলমারি থেকে টাকা বা মূল্যবান কিছু নিয়েছে কিনা তা জানতে আনোয়ারুলকে শনিবার ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হয়। শুনানি শেষে বিচারক মেহেদী পাভেল সুইট তার ৩দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

অধ্যাপক সাঈদার ছেলে সাউদ বিন ইফতেখার জহির জানান, তাদের পৈতৃক বাড়ি পুরান ঢাকায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েল শিক্ষকদের গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কাশিমপুরের পানিশাইল এলাকায় ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক আবাসন’ প্রকল্পে তার বাবা-মার ৫ কাঠার একটি প্লট রয়েছে। এলাকাটি এখনো বসতি গড়ে উঠেনি। ঝোপ-জঙ্গলে পরিণত হয়ে আছে। সম্প্রতি তার মা সেখানে ভাড়া থেকে ওই প্লটে একটি বাগানবাড়ি নির্মাণ কাজ করাচ্ছিলেন। বাড়ির একতলার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে আছে। কাজ দেখাশুনার জন্য তার মা প্লটের অদূরে ভাড়া বাসায় থাকতেন। ১১ জানুয়ারি মঙ্গলবার তার মাকে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী বোন মোবাইল ফোনে ম্যাসেজ করেন। কিন্তু তার মা ম্যাসেজ না দেখায় পরদিন বুধবার ফোন করেন। ফোন বন্ধ থাকায় ঢাকার বড় বোন সাদিয়া আফরিন ও তার মামা শেখ শমসের গাফফার পানিশাইলের বাসায় গিয়ে ঘরের দরজা ও আলমারি খোলা দেখতে পান। তখন তার মাকে কোথাও খুঁজে না পেয়ে ওই রাতেই থানায় বোন সাদিয়া আফরিন কাশিমপুর থানায় জিডি করেন। পরে বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ আনারুলকে গ্রেপ্তার করে। তার দেয়া তথ্যে শুক্রবার দুপুরে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় হাউজিং এলাকা থেকে লাশ উদ্ধার হয়।

বাংলাদেশ জার্নাল/পিএল

  • সর্বশেষ
  • পঠিত